Antibiotics: ২৫ বছরেই ৩০ লক্ষ মৃত্যু! স্বেচ্ছায় এই ওষুধ খেয়ে মরছে মানুষ, ছাপিয়ে যাচ্ছে পথ দুর্ঘটনা-ক্যানসারকেও

Antibiotics: সেপসিসের কারণে ভারতে প্রতি বছর মৃত্যু হয় ৫৬ হাজার সদ্যোজাতের। ল্যান্সেটে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দাবি, ২০১৯ সালে এ দেশে সেপসিসে মৃত্যুর ৬০ শতাংশই ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের কারণে।

Antibiotics: ২৫ বছরেই ৩০ লক্ষ মৃত্যু! স্বেচ্ছায় এই ওষুধ খেয়ে মরছে মানুষ, ছাপিয়ে যাচ্ছে পথ দুর্ঘটনা-ক্যানসারকেও
প্রতীকী ছবিImage Credit source: Getty Images
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 11, 2025 | 11:54 AM

পেটে সামান্য গন্ডগোল। কিংবা জ্বর, সর্দি-কাশি। মানে ব্যাকটেরিয়াঘটিত রোগ… কেউ কেউ নিজের মতো ডাক্তারি করেন, কেউ আবার ছোটেন পাড়ার ওষুধের দোকানে! এই  উদাহরণ আমার-আপনার আশেপাশে অসংখ্য। পছন্দের ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট নিরাপদ ভেবে মুড়ি-মুড়কির মতো খেয়ে ফেলার এমন অভ্যাসই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে! যে অ্যান্টিবায়োটিকের রোগ সারানোর কথা ছিল, এখন সেটাই অকেজো!  ব্যাকটেরিয়াকে জব্দ করতে অন্যতম ভরসা অ্যান্টিবায়োটিক ধার হারাচ্ছে। আর যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিকে দৌলতেই এক শ্রেণির জীবাণু ক্রমশ অপরাজেয় হয়ে উঠছে! ফলে দেখা দিচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণ, যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স। শরীরে বাসা বাঁধছে বিপজ্জনক ড্রাগ রেজিট্যান্স ব্যাকটেরিয়ার দল। যাদের বলা হয় সুপারবাগ।

ঘাতক সুপারবাগ কীভাবে ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে তা কয়েকটি পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। ২০১৯ সালে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের জেরে অন্তত ৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়।  চিকিৎসকদের আশঙ্কা, ২০৫০ সালে ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণের কারণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছবে ৩০ লক্ষে! ল্যানসেটের গবেষণা বলছে, ২০৫০ সালে বিশ্বে এএমআরে মৃত্যুর আশঙ্কা ৩৯ কোটি মানুষের! 

চিকিৎসকরা বলছেন এএমআর এখন কার্যত সাইলেন্ট এনডেমিকের আকার নিয়েছে। আগামী দিনে বিশ্বে নতুন মহামারির কারণ হতে পারে এই সুপারবাগ। এদের ঘায়েল করার কৌশল তেমন ভাবে জানা নেই। তবে গবেষণা চলছে। ২০০১ সালে আবিষ্কৃত অ্যান্টিবায়োটিকেও মারা পড়ছে না এ ধরনের সুপারবাগরা! আর এই ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমিতের কারণেই সেপসিসের বাড়বাড়ন্ত। 

সেপসিসের কারণে ভারতে প্রতি বছর মৃত্যু হয় ৫৬ হাজার সদ্যোজাতের। ল্যান্সেটে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দাবি, ২০১৯ সালে এ দেশে সেপসিসে মৃত্যুর ৬০ শতাংশই ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের কারণে। ২০১৯ এ শুধু ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের কারণে দেশে মৃত্যু হয় ৩ লক্ষ ২৫ হাজার শিশুর। এর মধ্যে ৫৮ হাজার ২১২ জন শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী সুপারবাগ!  

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে জীবাণুরা তাদের কোষের বাইরে লাইপোপলিস্যাকারাইড বা এলপিএস নামে এক ধরনের আবরণ তৈরি করে। পরবর্তীকালে ওষুধ আর সেই আবরণ ভেদ করে জীবাণুকে মারতে পারে না। আর অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণের কারণেই এত মৃত্যু। এক্ষেত্রে শিশু ও বয়স্কদের ঝুঁকি বেশি।

যখন-তখন গাদা গাদা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রবণতাকেই এর জন্য দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। খোলা বাজারে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি হয়। ওষুধ কেনার কোনও রকম বিধিনিষেধই নেই। আর সেটাই বিপদের কারণ হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাই এবার থেকে মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার আগে দুবার নয়, হাজারবার ভাবুন। ডাক্তারের কাছেও জানতে চান কেন তিনি অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করছেন। পরিসংখ্যান বলছে পথ দুর্ঘটনা ও ক্যান্সার মিলিয়ে দুনিয়ায় যতো মানুষের মৃত্যু হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি মৃত্যু হয় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিট্যান্স জীবাণুর কারণে। সাবধান হওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই!