এবার নদিয়াতেও অজানা জ্বরের প্রকোপ, শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৭০ শিশু
Unknown Fever: উত্তরের পর দক্ষিণেও এবার অজানা জ্বরের আতঙ্ক। করোনা আবহের মধ্যেই নদিয়ায় অজানা জ্বরে আক্রান্ত একাধিক শিশু।
নদিয়া: বসিরহাটের (Basirhat) পর এবার নদিয়া (Nadia)। আবার অজানা জ্বরে (Unknown Fever) আক্রান্ত শিশুরা। উত্তরের পর দক্ষিণেও এবার অজানা জ্বরের আতঙ্ক। করোনা আবহের মধ্যেই নদিয়ায় অজানা জ্বরে আক্রান্ত একাধিক শিশু। উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসক মহলে। আর তার জেরেই ক্রমশ আতঙ্ক বাড়ছে নদিয়ার রানাঘাটে।
গত কয়েকদিনে ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে প্রায় ৭০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে রানাঘাট হাসপাতালে। সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে রানাঘাট ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ব্যাপক হারে অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে বহু শিশু।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৫ দিন থেকে দেড় বছর বয়সের প্রায় ৭০ জন শিশুকে রানাঘাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ, এত শিশু এক সঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় কারণে স্বাভাবিক ভাবেই বেডের সমস্যা তৈরি হয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের অভিভাবকদের দাবি, এক একটি বেডে প্রায় ৪ জন শিশুকে রাখা হয়েছে।
তারপরও শয্যা না থাকায় মাটিতে কম্বল পেতে শিশুদের রাখতে হচ্ছে। ফলে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভবনা তৈরি হচ্ছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি যে, প্রত্যেক বছরই এই সময় জ্বরের প্রকোপ কিছুটা বাড়ে। আক্রান্তদের অভিভাবকদের আস্বস্ত করে হাসপাতাল সুপার জানিয়েছেন, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি থাকায় শিশুদের সব রকম পরীক্ষা করেই চিকিৎসা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলেই চিকিত্সকরা মনে করছেন।
এদিকে, জ্বর-সর্দি-কাশি, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গ একই। বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ২৫ জন শিশু চিকিত্সাধীন। প্রত্যেকেরই বয়স ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। শিশু বিভাগে সন্তানদের সঙ্গে রয়েছেন মায়েরা।
এই ব্যাপারে বসিরহাটের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা ক্যামেরার সামনে সরাসরি জ্বরের কথা স্বীকার না করলেও, তাঁরা বলছেন, “জ্বর নিয়ে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। এটা ঋতু পরিবর্তনের ভাইরাল ফিভার। সকলকে সঠিক চিকিৎসা করে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়াও সতর্ক রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।”
যদিও শিশুদের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, তাঁদের বাচ্চাদের জ্বর, সর্দি-কাশি হয়েছে। আর সেই উপসর্গ নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে তারা। জ্বর নিয়ে ভর্তি হলে দ্রুত তার রক্ত ও লালা রস পরীক্ষা করার জন্য কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে। এতো শিশু এক সঙ্গে আক্রান্ত হওয়ায় নতুন করে সন্দেহ দানা বাঁধছে। তাহলে কি অজানা জ্বরের থাবা এবার দক্ষিণেও পড়তে চলেছে? সেই প্রশ্নই উঠে আসছে।
প্রতিদিন শিশুদের নিয়ম করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ওষুধ দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অসুস্থ শিশুদের ওপর দিনরাত নজর রাখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, কোভিড আবহে রাজ্যের কোন হাসপাতালে কত শিশু শয্যা রয়েছে তা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর (Health Department)। কোথায় কত এসএনসইউ, পিকু, নিকু শয্যা কার্যকরী অবস্থায় রয়েছে তা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। সাধারণ মানুষকে শিশুরোগের শয্যা সম্পর্কে অবহিত করতেই এই পদক্ষেপ। সম্প্রতি শিশুদের মধ্যে অসুস্থতা বৃদ্ধি হওয়ায় শয্যা সংখ্যা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যাতে বিভ্রান্তি না হয় তাই জনস্বার্থে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: Child Care: শিশু চিকিৎসায় কোন হাসপাতালে কত বেড, তালিকা প্রকাশ করল স্বাস্থ্য দফতর