Barun Biswas: মন্ত্রীর গ্রেফতারিতে আবার ‘বেঁচে উঠছে’ বরুণ বিশ্বাস, কী হয়েছিল সে রাতে

Barun Biswas: ঘটনার সূত্রপাত ২০০০ সালে। গাইঘাটার সুটিয়ায় মহিলাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। তৈরি করা হয়েছিল 'প্রতিবাদী মঞ্চ'।

Barun Biswas: মন্ত্রীর গ্রেফতারিতে আবার 'বেঁচে উঠছে' বরুণ বিশ্বাস, কী হয়েছিল সে রাতে
বরুণ বিশ্বাসImage Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 27, 2023 | 6:03 PM

গোবরডাঙা: বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হতেই আবার উস্কে গিয়েছে বরুণ বিশ্বাস হত্যা মামলার প্রসঙ্গ। বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন বরুণ বিশ্বাসের বাবা। ছেলের মৃত্যুর জন্য জ্যোতিপ্রিয়কেই দায়ি করছেন তিনি। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ফাঁসির দাবি তুলেছেন বরুণ বিশ্বাসের বাবা জগদীশ বিশ্বাস। এক দশকেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। প্রতিবাদী মাস্টারমশাই বরুণ বিশ্বাসকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। ঠিক কী হয়েছিল? কেন সেদিন খুন হতে হয়েছিল বরুণ বিশ্বাসকে?

ঘটনার সূত্রপাত ২০০০ সালে। গাইঘাটার সুটিয়ায় মহিলাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। তৈরি করা হয়েছিল ‘প্রতিবাদী মঞ্চ’। সুটিয়ার সেই প্রতিবাদী মঞ্চের অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন মাস্টারমশাই বরুণ বিশ্বাস। কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনে শিক্ষকতা করতেন। প্রতিদিন গ্রাম থেকে কলকাতায় যেতেন। নিয়মিত ক্লাস করিয়ে আবার রাতে ফিরতেন গ্রামে। সুটিয়ার ধর্ষণের মামলায় অন্যতম অভিযোগকারী ও সাক্ষী ছিলেন প্রত্যন্ত গ্রামের এই মাস্টারমশাই।

শোনা যায়, পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল বরুণ বিশ্বাসকে। কিন্তু কোনওকিছুই টলাতে পারেনি তাঁকে। সময় যত এগিয়েছে, প্রতিবাদের সুর আরও চড়িয়েছেন। লাগাতার হুমকির মুখেই স্কুলে পড়াতে যাওয়া বন্ধ করেননি। নিয়মিত ক্লাস নিতে গিয়েছেন মিত্র ইনস্টিটিউশনে। গোবরডাঙা-শিয়ালদহ নিয়মিত ট্রেনে যাতায়াত করতেন।

এদিকে সুটিয়ার ধর্ষণ মামলা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল ততদিনে। অন্যতম অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরী-সহ আরও বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সুশান্তকে রাখা হয়েছিল দমদম সেন্ট্রাল জেলে।

এরপর ২০১২ সালের ৫ জুলাই। আর পাঁচটা দিনের মতো সেদিনও স্কুল থেকেই ফিরছিলেন বরুণ। রাত হয়ে এসেছিল। গোবরডাঙা স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই গোবরডাঙা স্টেশন চত্বরের বাইরে দুষ্কৃতীরা গুলি করে তাঁকে লক্ষ্য করে। সেখানেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। অভিযোগ, জেলে বসেই সুটিয়ার মাস্টারমশাই বরুণ বিশ্বাসকে খুনের ছক কষেছিল সুশান্ত।

বরুণ বিশ্বাসের উপর সেই হামলা তখন টলিয়ে দিয়েছিল গোটা বাংলাকে। কলকাতার রাজপথ উত্তাল হয়েছিল। পথে নেমেছিলেন বুদ্ধিজীবীরা। কিন্তু এতগুলি বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও চাপা ক্ষোভ সুটিয়ায়। বরুণকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগে এক নাবালকের সাজা হয়েছে বটে, কিন্তু কে বা কারা ওই নাবালককে গুলি চালাতে বলেছিল? বরুণের উপর হামলার নেপথ্যে কারা ছিল? সেসব ভাবতে গেলে সুটিয়ার প্রবীণ মুখগুলো কেমন বিবর্ণ হয়ে ওঠে। অনেকেই ভাবেন, আসল দোষীদের সাজা হলেও, জীবদ্দশায় হয়ত তাঁরা সেটা আর দেখে যেতে পারবেন না।