Rakhi 2022: রাখিতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির, মুসলিম মহিলাকে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচালেন হিন্দু শিক্ষক
Rakhi 2022: উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই তখন অত্মীয়-পরিজন-বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন লুৎফিনা বেগমের পরিবারের সদস্যরা। রক্তের সন্ধানে হোয়াটসঅ্যাপেও ফরওয়ার্ড হতে থাকে মেসেজ।
ঘাটাল: অখণ্ড বাংলার স্বপ্ন সত্যি করতে, বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে প্রচলন শুরু হয়েছিল রাখি বন্ধন (Rakhi Bandhan) উৎসবের। ব্রিটিশদের নির্মমতা, ভাগাভাগির রাজনীতির উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের মধ্যে সৌভ্রতৃত্ব, সম্প্রীতি, বন্ধুত্বের জাগরণ ঘটাতেই রাখি বন্ধন উৎসবের ডাক দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রঙিন সুতোর বাঁধন হয়ে উঠেছিল ঐক্যের প্রতীক। বিশ্বকবির ডাকেই ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের হাতে রাখি বাঁধে হিন্দু-মুসলিমরা (Hindu-Muslim)। এদিকে এবার এবারের রাখিতেও দেখা গেল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির।
সূত্রের খবর, O নেগেটিভ রক্ত না পাওয়ায় তীব্র সমস্যায় পড়েছিলেন ঘাটাল (Ghatal) মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লুৎফিনা বেগম। এদিকে ওদিক ছোটাছুটি করেও তাঁর জন্য নির্দিষ্ট গ্রুপের রক্ত মিলছিল না। এমনকী হাত তুলে নিয়েছিল ব্ল্যাড ব্যাঙ্কও। এদিকে রক্ত না পেলে তাঁর প্রাণ সংশয় পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। এদিকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই তখন অত্মীয়-পরিজন-বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন লুৎফিনা বেগমের পরিবারের সদস্যরা। রক্তের সন্ধানে হোয়াটসঅ্যাপেও ফরওয়ার্ড হতে থাকে মেসেজ। তাঁর তাতেই ঘটনার কথা জানতে পারেন দাসপুরের এক শিক্ষক অরুণ কুমার শাসমল।
মরনাপন্ন রোগীর কথা জানতে পেরে এক মুহূর্ত আর দেরি করেননি তিনি। সোজা চলে আসেন হাসপাতালে। এদিকে সৌভাগ্যক্রমে তাঁর ও লুৎফিনা বেগমের রক্তের গ্রুপ একই। তিনিই শেষ পর্যন্ত রক্ত দেন লুৎফিনা বেগমকে। বৃহস্পতিবার রাখির দিনে দুপুরে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কে এসে রক্ত দান করেন তিনি। রক্ত পেয়ে খুশি লুৎফিনা বেগমের পরিবারের সদস্যরাও। তাঁর হিন্দু ভাইয়ের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়াও করেন। এদিকে খুশির খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস। তিনি এদিন চিকিৎসাধীন রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিজের হাতে রাখি পরান। যা নিয়েও গোটা হাসাপাতালে উন্মাদনার অন্ত ছিল না।
এদিকে স্ত্রী রক্ত পাওয়ায় খুশি স্বামী শেখ কামরুদ্দিন। তিনিও অরুণবাবুর জন্য দোয়া করেন আল্লাহর কাছে। বলেন, “আমার স্ত্রীর রক্তের প্রয়োজন ছিল। এক ভদ্রলোক আজ এসে রক্তদান করেন। আমি খুশি। আজ রাখি বন্ধনের দিনে এই কাজের জন্য আমি খুব খুশি। খোদা যাতে ওনার ভাল করে তাঁর জন্য আমি দোয়া করব।” রক্তদাতা অরুণ কুমাপ শাসমল বলেন, “হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে আজকের দিনই রাখি বন্ধন উৎসবের সূচনা হয়েছিল। সেই সম্প্রীতি আজও আমরা বজায় রাখছি। এই রক্তদানের মধ্যদিয়ে সেই সম্প্রীতির বার্তাই আমি সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।”