Corona Vaccine: গ্রামে মাত্র ২জন পেয়েছেন টিকা! টিভি ৯ খবর সম্প্রচারের পরই টিকাকরণ শিবির গড়ে তুলল প্রশাসন
Paschim Medinipur: গ্রামের এক মহিলা জানালেন তিনি এখনও জানেন না করোনা মহামারি কী?!
পশ্চিম মেদিনীপুর: কয়েকদিন আগেই একশো কোটির ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ হওয়ার মাইল ফলক ছুঁয়েছিল ভারত। বিশ্ব ইতিহাসে এক নতুন রেকর্ড গড়েছিল দেশ। হেসেছিল চওড়া হাসি। কিন্তু পুরো ভিন্ন ছবি এই রাজ্যের একটি এলাকায়। আজও সেই গ্রামে মাত্র দু’জনের হয়েছে টিকাকরণ। আর এই খবর সর্বপ্রথম সম্প্রচার করেছিল টিভি নাইন বাংলা। তারপরই রীতিমত নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং ব্লকের বাগালপাড়া গ্রাম। একবিংশ শতকেও কুসংস্কার আর গোঁড়ামির অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। মদ, বাল্যবিবাহ বন্ধ করা যায়নি গ্রামে। কোথাও গিয়ে যেন বাগালপাড়ার সময়ের ঘড়িকাঁটা থমকে গিয়েছে। সূত্র বলছে, ওই গ্রামে মাত্র দু’জনের করোনা টিকা হয়েছে। আর বাকিজনের এখনও হয়নি।
তবে এই খবর সম্প্রচার হতেই রীতিমত নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। জানা গিয়েছে এখন দিনে দুবার ওই গ্রামের মানুষের খোঁজ নিচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসন থেকে শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্বরা। সূত্রের খবর, আজ গ্রামের মানুষদেরকে নিয়ে গিয়ে টিকা দেওয়ানো হবে। তারপরও যদি কেউ বাকি থেকে যায় তাহলে ওই গ্রামেই ক্যাম্প করে টিকাকরণের কাজ করবে প্রশাসন।
কিন্তু কেন এখনও হয়নি টিকা দেওয়ার কাজ? প্রশাসনের দাবি এই এলাকার মানুষদের আধার কার্ড নেই। নেই মোবাইল ফোন। প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে ওই গ্রামে টিকাকরণের কাজ হয়নি। তবে প্রশ্ন উঠছে ওই জায়গাতেই যদি ভোটের স্বার্থে এলাকার প্রতিটি মানুষকে ভোটার কার্ড করিয়ে দেওয়া যায় তাহলে প্রশাসন বা শাসক দলের নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানেই কেন হবেনা আধার কার্ড ?
স্থানীয় এক বাসিন্দাকে প্রশ্ন করেছিল আমাদের প্রতিনিধি যে কেন টিকাকরণ হয়নি? উত্তরে তিনি জানালেন যে করোনা মহামারি সম্বন্ধে এখনও তিনি অবগত নন। টিকাকরণ কী নিয়ে হচ্ছে তাও তিনি জানেন না। নেই কোনও আধার কার্ড।
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান কী বলেছেন? তিনি বলছেন, “এদের অবস্থার জন্য এখমাত্র দায়ি শিক্ষার অভাব। চেতনার অভাব। এইখানকার জনগণের সাধারণ ভাবে বাঁচার জ্ঞানটুকু নেই।এরা দূর-দূরান্ত থেকে আসে যাযাবরের মতো। কখনও থাকে কখনও চলে যায়। আমি অনেক চেষ্টা করেও পারিনি। সরকারও অনেক চেষ্টা করেছে তাও পারেনি। তাই আমার অনুরোধ যদি কোনও ভাবে এদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা যায়। আমার সরকারের কাছে একান্ত অনুরোধ যেন কোনও শিবির আয়োজন করে বা কোনও ভাবে এদের টিকাকরণের বন্দ্যোবস্ত করা যায়। ”
এলাকার বিডিও তুহিন শুভ্র মহান্তি আমাদের জানালেন যে ভ্যাকসিন হয়েছে অন্য সব জায়গায় কিন্তু এই এলাকায় হয়নি। এর কারণ একটাই যে এখানে এখনও মোবাইল পৌঁছায়নি। ইন্টারনেটের ব্য়বহার এরা জানে না। সেই কারণে এদের টিকাকরণ করা এখনও সম্ভব হয়নি। তবে খুব শীঘ্রই একটি ক্যাম্প তৈরি করা হবে। যাতে শীঘ্রই ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু করা যায়।