Burdwan Police: বর্ধমানের প্রত্যন্ত গ্রামের গলিতে যেন হয়ে গেল ‘DHOOM’ পার্ট ফোরের শ্যুটিং!
Burdwan Police: সেসময় শিববাটির কাছে শাহাজাহানের চলন্ত বাইকে লাথি মারে দুষ্কৃতীরা। শাহাজাহান মাটিতে উল্টে পড়লে ওই দুই বাইক আরোহী দুষ্কৃতী হেলমেট দিয়ে শাহাজাহানের মাথায় আঘাত করে এবং তাকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
বর্ধমান: দুটি বাইক দুরন্ত গতিতে ছুটছে। পিছনের বাইকটিতে এক উর্দিভারী। আর সামনের বাইকে মাথায় হেলমেট পরিহিত দুই যুবক। ব্যস্ত রাস্তায় ওই দুই বাইকে গতি দেখে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে যেতে থাকেন অন্যান্য গাড়ি চালকরাও। দৃশ্যত ‘ধূম’এর সিক্যুয়েন্স! ছিনতাইবাজদের ধরতে বাইক নিয়েই ধাওয়া ভিলেজ পুলিশের! চোর তো পুলিশ পাকড়াও করবেই, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যে কায়দায় পাকড়াও করলেন, তাতে বর্ধমানের আউশগ্রামের বাসিন্দারা, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা যেন চোখের সামনে ফিরে পেলেন ধূম সিনেমার চিত্রপট! দু’জন ভিলেজ পুলিশের সাহস ও উপস্থিত বুদ্ধিতে বমাল সহ-দুই পাকড়াও ছিনতাইবাজ। পূর্ব বর্ধমানের ২ বি জাতীয় সড়কের আউশগ্রামের শিববাটি এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম ইব্রাহিম শেখ ও তুফান চৌধুরী। তাদের বাড়ি কাটোয়ার রাজোয়া এলাকায়।
মঙ্গলকোটের রঘুনাথপুরে সুরজ শেখ নামে এক যুবকের লটারির টিকিট বিক্রির দোকান আছে। সেখানে কাজ করেন শাহাজাহান শেখ ওরফে লাল্টু। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে লটারি ব্যবসার টাকা নিয়ে শাহাজাহান বাইকে একটি ব্যাগে করে নগদ ৫ লক্ষ ১০ হাজার ৪৪০ টাকা এবং ৭ লক্ষ ৮ হাজার ৮০৫ টাকার একটি চেক নিয়ে গুসকরার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে জমা করতে যাচ্ছিলেন।
সেসময় শিববাটির কাছে শাহাজাহানের চলন্ত বাইকে লাথি মারে দুষ্কৃতীরা। শাহাজাহান মাটিতে উল্টে পড়লে ওই দুই বাইক আরোহী দুষ্কৃতী হেলমেট দিয়ে শাহাজাহানের মাথায় আঘাত করে এবং তাকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। সেসময় ওই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরচ্ছিলেন আউশগ্রামের উক্তা অঞ্চলের ভিলেজ পুলিশ সুজন পাল। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরেই ছিনতাইকারীদের পিছনে বাইক নিয়ে ধাওয়া করেন। বাইকে যেতে যেতেই ফোনে ভেদিয়া অঞ্চলের ভিলেজ পুলিশ জাকির শেখ ও ভেদিয়া ক্যাম্পের পুলিশকে খবর দেয়।
দুষ্কৃতীরা জাতীয় সড়কের বাগবাটি মোড়ে পুলিশি বাধা পেয়ে অন্য রাস্তায় ঢুকতে পারেনি। নিজেদের বাঁচাতে তারা আউশগ্রামের বুধরো গ্রামে ঢুকে পড়ে। পুলিশ দ্রুত সেখানে গিয়ে ছিনতাইকারীদের ধরে ফেলে। উদ্ধার করা হয় খোয়া যাওয়া টাকা ও চেক। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের ব্যবহৃত বাইক, মোবাইল ফোন এবং হেলমেটটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভিলেজ পুলিশ সুজন পালের বাড়ি আউশগ্রামের গোবিন্দপুর গ্রামে আর জাকির সেখের বাড়ি ভেদিয়ায়।
ধৃত দু’জনকে বুধবার বর্ধমান আদালতে পাঠায় গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ। ধৃতদেরকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এই ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজে সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।