AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Electrocution: জমিতেই ছিল ১১ হাজার ভোল্টের ‘মৃত্যুফাঁদ’, অজান্তে পা দিতেই মৃত্যু চাষির!

Purba Bardhaman: শনিবার, এই ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যুত্‍ অফিসের গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। যদিও, বিদ্যুত্‍ দফতরের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Electrocution: জমিতেই ছিল ১১ হাজার ভোল্টের 'মৃত্যুফাঁদ', অজান্তে পা দিতেই মৃত্যু চাষির!
বিক্ষোভ এলাকাবাসীর, নিজস্ব চিত্র
| Edited By: | Updated on: Oct 09, 2021 | 7:45 PM
Share

পূর্ব বর্ধমান: ফের খোলা বিদ্যুতের তার। ফের মৃত্যু। চাষের জমিতে ১০ দিন ধরে ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারেই বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট ( Electrocution) হয়ে মৃত্যু হল বৃদ্ধ চাষির। প্রতিবাদে বিদ্যুত্‍ দফতরের অফিস ঘেরাও করলেন এলাকাবাসী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের নবস্থায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ১০ দিন ধরে চাষের জমিতে খোলা পড়েছিল বিদ্যুতের তার। বারবার বিদ্যুত্‍ দফতরকে বলেও লাভ হয়নি। মাঠে কাজেও যেতে পারছিলেন না চাষিরা। অবশেষে, বিদ্যুত্‍ দফতর থেকে জানানো হয় ছেড়া তারটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর শুক্রবার মাঠে কাজে যান সুকান্ত বাগ নামের এক বৃদ্ধ চাষি। কিন্তু, ওই তারটি সরানো হয়নি। মাঠেই পড়েছিল ওই খোলা তার। গত দুদিন বৃষ্টি হওয়ায় মাঠে বেশ জলও জমেছিল। অজান্তে সেই খোলা তারেই পা দিয়ে ফেলেন সুকান্ত। সঙ্গেই সঙ্গেই বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

এরপরেই এলাকার সকলে তাঁকে খুঁজতে গিয়ে মাঠের মধ্যে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় বিদ্যুত্‍ দফতর ও পুলিশে। অভিযোগ, খবর দিলেও বিদ্যুত্‍ দফতরের তরফে কোনও আধিকারিক আসেননি। যোগাযোগ করেননি।  অভিযোগ, সময়ে তাঁরা এলে হয়ত বা ওই চাষিকে বাঁচানো যেত। রাতের বেলা বিদ্যুত্‍ দফতরের আধিকারিকরা এসে পৌঁছন। গোটা এলাকার বিদ্যুত্‍ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে চাষের জমি থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।

শনিবার, এই ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যুত্‍ অফিসের গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। যদিও, বিদ্যুত্‍ দফতরের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বিক্ষোভকারীরা এদিন দাবি করেন ওই মৃত চাষি পরিবারকে যোগ্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, তবেই অবরোধ তোলা হবে। পরে ব্লক প্রশাসন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে আড়াই ঘণ্টা পর বিক্ষোভ উঠে যায়।

এলাকার বিধায়ক নিশীথ মালিক এদিন স্পষ্ট বলেন,“বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিতেই ওই চাষির মৃত্যু হয়েছে । বিদ্যুৎ দফতরের অফিসাররা আমার কাছে এই গাফিলতির কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন । একই সঙ্গে বিদ্যুৎ দফতর ওই চাষি পরিবারকে সহায়তা প্রদানের আশ্বাসও দিয়েছে। ক্ষতিপূরণ দেবে ব্লক প্রশাসনও। আশা করছি এই পরিস্থিতির বদল ঘটবে।”

কিছুদিন আগেই পশ্চিম মেদিনীপুরেও এভাবেই মৃত্যু হয়েছিল আরেক চাষির। সম্প্রতি, খড়দহতে বাড়ির মধ্যে  জমা জলে বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট (Electrocution) হয়ে মৃত্যু হয় এক পরিবারের তিন সদস্যের। পাতলিয়ায় সরকারি আবাসনে নিজের স্ত্রী ও দুই পুত্রকে নিয়ে থাকতেন বছর চল্লিশের রাজা দাস। টানা বৃষ্টির জেরে আবাসনের ভেতরেও জল জমে। জমা জলেই ঘরের মধ্য়েই বাড়ির কোনও কাজে বিদ্যুত্‍ সংযোগ করতে গিয়েছিলেন রাজা। সেইসময়ে তিনি বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট হন। স্বামীকে বাঁচাতে ছুটে আসেন স্ত্রী পৌলমী। তিনিও বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট ( Electrocution) হন। মা-বাবাকে বাঁচাতে আসেন বছর এগারোর শুভ দাস। সেসময় খাটের ওপর বসেছিল তার ছোট ভাই। কিন্তু, মা-বাবাকে বাঁচাকে গিয়ে বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট হয় শুভও। বেঁচে যায় চার বছরের নাবালক।

চার বছরের ছোট ছেলেটি কী করবে বুঝতে না পেরে প্রতিবেশীদের ডেকে আনে। রাজা, পৌলমী ও শুভ তিনজনকেই ব্যারাকপুর বিএন বোস মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানে চিকিৎসকেরা তিন জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর দেওয়া হয় খড়দহ থানায়। ছুটে আসে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে ওই তিনজনের। একই পরিবারের তিনজনের এভাবে মৃত্য়ুতে কার্যত চাঞ্চল্য ছড়ায়।

এক পরিবারের তিন সদস্যের বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। জমা জল নিষ্কাশনে সেচ দফতর (Irrigation Department) থেকে ৬টি পাম্প ও দমকল ২টি পাম্প আনা হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, খড়দহ পাতলিয়ার ওই বিস্তীর্ণ এলাকার নিকাশী ব্যবস্থা সুসংহত করতে ২ কোটি টাকার একটি পাম্পিং প্রোজেক্ট অনুমোদন করা হয়েছে। কিছু প্রশাসনিক কারণে তা আটকে রয়েছে। সেগুলি  ঠিক হলেই কাজ শুরু হবে বলে জানান এক সরকারি অধিকর্তা।

আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: ‘রবীন্দ্রনাথও আত্মহত্যা করতেন’, বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের ‘লাগামহীন নেশায়’ তোপ কেষ্টর!