Son abandoned Mother: অ্যাম্বুলেন্সে ফেলে রেখেই উধাও ছেলে, রাতভর অপেক্ষা বৃদ্ধা মায়ের
Burdwan: সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মাকে ছেড়ে পালিয়ে যায় 'কৃতী' সন্তান। ঘটনাটি লিখিত ভাবে গলসি থানায় জানিয়েছেন গ্রামবাসীরাই। অ্যাম্বুলেন্সেই রাতভর অপেক্ষা করেন মা। ছেলে না আসায় ভোরে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান অ্যাম্বুলেন্স চালক।
বর্ধমান: আকাশে বাতাসে পুজোর গন্ধ। মায়ের আবাহনের মেতেছে বাঙালি। এ দিকে, এক বৃদ্ধা মাকে (Mother) তাঁর সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে অসহায় অবস্থায় ফেলে রেখে পালাল ছেলে (Son)। বর্ধমানের (Burdwan) গলসির (Galsi) নবখন্ড গ্রামের ঘটনা। স্বচ্ছল হওয়া সত্ত্বেও মা কে অ্যাম্বুলেন্সে (Ambulance) ফেলে রেখে এল ছেলে। অসুস্থ বৃদ্ধা এখন বেঁচে আছেন গ্রামের মানুষের দয়া আর কৃপাপ্রার্থী হয়ে। মা কে কলকাতায় (Kolkata) ডাক্তার দেখানোর নাম করে নিয়ে গিয়ে ফেলে পালায় ছেলে।
গ্রামবাসীরা এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ। বৃদ্ধার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রামবাসীরার বিবরণ অনুসারে, ওই অসুস্থ মা কে হাওড়ায় চিকিৎসা করাতে নিয়ে যায় ছেলে। তারপর সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ছেড়ে পালিয়ে যায় ‘কৃতী’ সন্তান। ঘটনাটি লিখিত ভাবে গলসি থানায় জানিয়েছেন গ্রামবাসীরাই। অ্যাম্বুলেন্সেই রাতভর অপেক্ষা করেন মা। গুণধর ছেলে না আসায় ভোরে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান অ্যাম্বুলেন্স চালক। তারপর সকাল থেকে বৃদ্ধাকে বাড়ির বাইরে কাতরাতে দেখে প্রতিবেশীরা স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা করিয়ে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন তাঁরাই।
জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়িতে খাবার বলতে কিছুই নেই। তিনি নিজে রান্নাও করতে পারেন না। মমতা দেবী ও তাঁর প্রতিবেশীদের দাবি, হাওড়ায় চিকিৎসা করাতে যাওয়ার সময় গাড়িতে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ব্যাগে নতুন কয়েকটি কাপড়, নগদ ১৬ হাজার ৭০০ টাকা ও একটি সোনার বোতাম নিয়ে গিয়েছেন ছেলে সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ব্যাগ আর পাঠাননি মায়ের সঙ্গে। মা ফিরেছেন খালি হাতেই।
বৃদ্ধা ভাল করে কথা বলার অবস্থায় নেই। কী ভাবে তাঁর চিকিৎসা হবে সেটাই বড় প্রশ্ন। তাঁর কোনও সংস্থান নেই। পাশে কোনও স্বজন নেই। তিনি জানিয়েছেন, ছেলের কাছে গেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
জানা গিয়েছে, সুপ্রিয় একটি রঙের কোম্পানিতে চাকরি করেন। গ্রামবাসীদের দাবি, তাঁর মাস মাইনে ৭০ হাজার টাকার আশেপাশে। এমনকি হাওড়ার বকুলতলা থানার দক্ষিণ বাকসাড়ার কেঠোপুলের বসত বাড়িটির আসল মালিকও তাঁর মা মমতা দেবী। সুপ্রিয় তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর বাবার চাকরিতেই যোগ দেন। অভিযোগ, তারপরই নাকি দুর্ব্যবহার করে মমতা দেবীকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন সুপ্রিয়। ছেলের দুর্ব্যবহারের কারণেই মমতা দেবী আর হাওড়ার বাড়িতে যাননি। তবে বর্তমানে তিনি গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় প্রতিবেশীরা ছেলেকে ফোন করে চিকিৎসা করানোর জন্য ডাকেন। সেইমত গ্রামের মানুষ অ্যাম্বুলেন্স ডেকে মমতা দেবীকে ছেলের সঙ্গে গাড়িতে তুলে দেন। অভিযোগ, তারপরই সেই ছেলে তাঁকে চিকিৎসা তো দূর, হাওড়ায় নিয়ে গিয়ে সবকিছু নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে রেখেই পালিয়ে যায়। সুপ্রিয় বাবুকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এলাকার বাসিন্দা সবিতা চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এত বয়স হল। মাকে এ ভাবে ছেলে পরিত্যাগ করে তা আগে শুনিনি। গ্রামের অপর বাসিন্দা অম্বিকা ভট্টাচার্য বলছেন, কুলাঙ্গার কথাটা শুনেছি। এবারে নিজে দেখলাম। আপাতত গ্রামের লোকেরাই যে টুকু পারছেন ওনার খোঁজখবর নিচ্ছেন। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, মায়ের শেষ সম্বলটুকু, এমনকি একটি সোনার আংটিও নিয়ে গিয়েছেন ওই সন্তান।