CPIM: ‘নীতি বড়, নেতা নয়’, রাম-বাম জোটে ইতি টানতে বহিষ্কারের পথে CPIM

CPIM: সিপিএম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি এই বিষয়ে বলছেন, দলীয় গঠনতন্ত্রের কথা। সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৯১৩ ধারা অনুযায়ী জোটে সামিল দলীয় সদস্যদের বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

CPIM: 'নীতি বড়, নেতা নয়', রাম-বাম জোটে ইতি টানতে বহিষ্কারের পথে CPIM
সিপিএম-এর পতাকা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 25, 2022 | 9:59 PM

তমলুক: সমবায় ভোটে রাম-বাম জোট নিয়ে জোর বিতর্ক রাজ্য রাজনীতিতে। আর এই বিষয়টিকে মোটেই ভাল চোখে দেখছে না সিপিএম নেতৃত্ব। পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) জেলা সিপিএম (CPIM) নেতৃত্ব এবার এই নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল। যাঁরা এমন জোটের সঙ্গে যুক্ত, এমন দলীয় সদস্যকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম। যাবতীয় সমালোচনার মুখ বন্ধ করার উদ্দেশেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা। যদিও সিপিএম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি এই বিষয়ে বলছেন, দলীয় গঠনতন্ত্রের কথা। সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৯১৩ ধারা অনুযায়ী জোটে সামিল দলীয় সদস্যদের বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি, দলের তরফে বহিষ্কৃতদের নামের তালিকা প্রকাশ করে লিফলেটও ছড়ানো হবে।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি এই বিষয়ে বলেন, “সর্বভারতীয় থেকে একেবারে জেলা শাখা পর্যন্ত দল বিজেপি এবং তৃণমূলকে একই বন্ধনীতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের একটাই লাইন তা হল, বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল ঐক্যকে প্রাধান্য দেওয়া। সেখানে বিজেপির হয়ে যাঁরা দাঁড়িয়েছেন, গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে আঁতাত করেছেন, তাঁদের দল সমর্থন করে না। দল এই জোটকে স্বীকৃতি দেয়নি। যাঁরা এতে শামিল রয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককে বহিস্কার করা হবে। নামের তালিকা প্রকাশ করে লিফলেট বিলি করা হবে।”

ভবিষ্যতেও যদি এমন কিছু ঘটে সে ক্ষেত্রেও বহিষ্কারের ধারা অব্যাহত থাকবে, সেই কথাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সিপিএম-এর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক। তাঁর বক্তব্য়, “পঞ্চায়েত নির্বাচনেও যদি কোনও দলীয় সদস্য নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়ান, সেক্ষেত্রেও বুঝে নিতে বিষয়টি গোলমেলের। তখনও বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, সমবায় নির্বাচনে কোনও দল সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামে না। তবে নন্দকুমারের সমবায় নির্বাচনে বাম-বিজেপির নীচু তলার কর্মীরা একটি যৌথ মঞ্চ তৈরি করে সমবায় ভোটে লড়েছিল। তৃণমূল সেখানে দাঁত ফোটানোর সুযোগ পায়নি। সেই থেকেই তৃণমূল শিবির রাম-বাম জোটের তত্ত্ব উস্কে দিতে শুরু করেছিল। পরবর্তী সময়ে মহিষাদল ব্লকের কেশবপুর জালপাই রাধাকৃষ্ণ সমবায় ভোটেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন বাম-বিজেপির নীচু তলার কর্মীরা। কিন্তু ভরাডুবি হয়েছিল সেই সময়। পরবর্তী সময়ে তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনেও ওই একই ‘মডেল’-এর পুনরাবৃত্তি দেখা যায়। আগামী ৪ ডিসেম্বর সেখানে ভোট রয়েছে। আর তার আগেই কড়া সিদ্ধান্তের পথে জেলা সিপিএম নেতৃত্ব।

যদিও বিজেপি নেতা তথা জোটের অন্যতম নেতৃত্ব বামদেব গুছাইত বলেন, “এই সমবায় নির্বাচনে রাজনৈতিক জোট হয়নি। সমবায় বাঁচাতে মানুষ জোট গড়ে মাঠে নেমেছে। কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দিতা হচ্ছে না। বাম বিজেপি জোট হয়েছে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ” তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র ফোনে জানান, “সিপিএম কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলতে পারব না। তবে আমরা প্রথম থেকে বাম বিজেপি অলিখিত জোটের কথা বলে আসছি। জেলার তিন সমবায় নির্বাচন তার প্রমাণ।”

সিপিএমের কাঁকটিয়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক ফরিদ আলি ফোনে বলেন, “খারুই- ১ নম্বর অঞ্চল এলাকায় আমাদের দলীয় সদস্যের সংখ্যা ২৭ জন। তাঁদের সিংহভাগই সমবায় নির্বাচনে জোটের প্রার্থী, সমর্থক, প্রচারক। এঁদের মধ্যে এরিয়া কমিটির সদস্য, প্রাক্তন প্রধান, অঞ্চল কনভেনারের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও রয়েছেন।”