Mahishadal: বিয়ে কিংবা পরলৌকিক কাজ, দিতে হবে চাঁদা! গ্রাম কমিটির মাতব্বরিতে বিধ্বস্ত মহিষাদল
Purba Medinipur: রীতিমত লিফলেট ছাপিয়ে বাড়ি-বাড়ি বিলি করা হয়েছে। এমনকী গ্রামের বাড়ির দেওয়াল গুলিতেও এই লিফলেট বিলি করা হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর: স্বাধীন দেশ। গণতন্ত্রের শাসন রাজ্যে। আইন আছে। পুলিশ আছে। প্রশাসনও রয়েছে। আইন-আদালত, বিচার ব্যবস্থা সবই রয়েছে। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি গ্রামে পুরো উল্টো ঘটনা। সেখানে চলছে মাতব্বরি। পদে-পদে চলছে স্বেচ্ছাচারিতা। ঠিক যেন খাপ পঞ্চায়েতের শাসন।
কী হয়েছে?
গ্রামে কারোর কোনও সমস্যা হলে থানায় যাওয়া চলবে না। তাহলে কাকে জানাবেন গ্রামবাসী? জানাতে হতে গ্রাম কমিটিকে। এখানেই শেষ নয়, বাড়িতে কোনও মাঙ্গলিক বা পরলৌকিক কাজ করতে হলে বসতে হবে গ্রাম কমিটিকে নিয়ে। ধরুণ, কারোর বিয়ে হল! চাঁদা হিসেবে একটা ধার্য টাকা জরিমানা দিতে হবে। মহিষাদলের চকদ্বারিবেড়্যা গ্রামে এই গ্রাম কমিটির একগুচ্ছ এমন ফতোয়া ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
রীতিমত লিফলেট ছাপিয়ে বাড়ি-বাড়ি বিলি করা হয়েছে। এমনকী গ্রামের বাড়ির দেওয়াল গুলিতেও এই লিফলেট বিলি করা হয়েছে। নোটিশ আকারে সেগুলি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, গ্রাম কমিটির নামে দেওয়া এই ধরনের ফতোয়া আসলে তাঁদের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কিছুই নয়।
কতজন নিয়ে কমিটি গঠন হয়েছে?
চক দারিবেরিয়া গ্রাম কমিটি ১২ জনকে নিয়ে গঠিত হয়েছে। তার মধ্যে বাকি ৭ জনের নির্দেশ অমান্য করে এই ৫ জন সদস্য ১) শঙ্কর ঘোড়াই ২) সুভাষ ঘোড়াই ৩)তারক দাস ৪) বাপি সাউ ৫) প্রণব দাস এরাই এই নোটিশ বাড়ি-বাড়ি বিলি করেছে বলে অভিযোগ।
এক এলাকাবাসী বলেন, “গ্রাম কমিটি নির্দেশ দিয়েছে যে তাদের নির্দেশ মানতে হবে। কোনও থানা-পুলিশ করা চলবে না। তাদের শাসনে থাকতে হবে। আমরা ভারতে বাস করি। এই এলাকা দেশের থেকে তো আলাদা নয়, আমরা নিজেদের মৌলিক অধিকার নিয়ে বাঁচতে চাই।” আরও এক গ্রামবাসী বলেন, “আমরা পুলিশ স্টেশনে যাব। আইনের সাহায্য নেব। তারপর প্রশাসন যা সিদ্ধান্ত নেবে…”
মহিষাদলের বিধায়ক কী জানালেন?
তীলক চক্রবর্তী বলেন, “খবর শুনেছি। যেখানে আইনের শাসন রয়েছে। প্রশাসন রয়েছে সেখানে এই ধরনের ফতোয়া একদম অনুচিত। এখনকার দিনে এই জিনিস কখনোই চলতে পারে না। পাশাপাশি যে অভিযুক্ত তার সঙ্গে কথা বলেছি। জানিয়েছি যে পাল্টা হ্যান্ড বিল নিয়ে যেন প্রচার করা হয় গ্রামবাসীদের মধ্যে।”
বিজেপি শিবির কী জানিয়েছে?
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন দাস বলেন, “এটি রাজনৈতিক চক্রান্ত। আগামী ২৩ ভোট রয়েছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের এটা চাল। মানুষকে কীভাবে দমিয়ে রাখা যায়।”
তৃণমূল রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। ত্রিস্তর বিশিষ্ট এই পঞ্চায়েত। এতে গ্রাম কমিটি আছে বলে আমার জানা নেই। এখানে গ্রাম কমিটি কারা করেছে, কেন করেছে, কী অধিকারে করেছে তা আমার জানা নেই। কেউ যদি এই ধরনের কাজ যদি কেউ করে থাকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিত শূর বলেন, “ভারতে আইনের শাসন রয়েছে। কিন্তু তারপরও এই যে দাদাগিরি, দলতন্ত্র চালান সমস্ত বিষয়টি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। ”