Kalbaisakhi Effect: খুঁটি উপড়ে মৃত্যু, ভেঙেছে দেড়শোরও বেশি বাড়ি! কালবৈশাখীতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত আবাসের বাড়ি প্রাপকরা

Kalbaisakhi Effect: সাত মিনিটের কালবৈশাখীতে তছনছ রামনগরের মৈতনা গ্রাম-পঞ্চায়েতের ১৫ মৌজা।

Kalbaisakhi Effect: খুঁটি উপড়ে মৃত্যু, ভেঙেছে দেড়শোরও বেশি বাড়ি! কালবৈশাখীতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত আবাসের বাড়ি প্রাপকরা
কালবৈশাখীতে বিপর্যন্ত গোটা গ্রাম
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 19, 2023 | 11:11 AM

রামনগর: ক্ষণিকের মধ্যেই কালো করাল মেঘ গ্রাস করেছিল। মাঠ থেকে তখনও বাড়ি ফেরেননি চাষিরা। জোর পায়ে হাঁটার আগে ধেয়ে এসেছিল ঝোড়ো হাওয়া। সাত মিনিটে বিপর্যয়। রীতিমতো তছনছ করে দিল গোটা গ্রাম। উড়ে গেল বাড়ির ছাউনি, মাঠেই শুয়ে পড়ল বিঘার পর বিঘা জমি, বাঁশের খুঁটি চাপা পড়েই মৃত্যু হয়েছে গবাদি পশুর। আবাস যোজনার টাকা পেয়ে যাঁরা কাচা বাড়ি ভেঙে পাকা বাড়ি তৈরিতে হাত লাগিয়েছিলেন, তাঁদের অবস্থা আরও ভয়ানক। যে ঝুপড়ি বানিয়ে থাকছিলেন তাঁরা, তা সবই ভেঙে গিয়েছে। আপাতত খোলা আকাশের নীচে তাঁরা। সাত মিনিটের কালবৈশাখীতে তছনছ রামনগরের মৈতনা গ্রাম-পঞ্চায়েতের ১৫ মৌজা।মরসুমের শুরুতেই কালবৈশাখীর ভয়াল রূপ দেখলেন রামনগর- ২ ব্লকের মৈতনা গ্রাম-পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা৷ মিনিট সাতেকের প্রবল ঘূর্ণি হাওয়ায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে এলাকার ১৫ টি মৌজা ৷ বিধ্বস্ত ভুঁইয়াজিবাড়, উত্তর মৈতনা, দক্ষিণ মৈতনা, শিখরপুর, হরিপুর, বক্সিসপুর, দক্ষিণ কল্যাণপুর, উত্তর কল্যাণপুর, কল্যাণপুর, খিদিরপুর, শাহাপুর, আহম্মদপুর, উত্তর তেঁতুলতলা, দক্ষিণ তেঁতুলতলা প্রভৃতি মৌজার বাসিন্দারা৷ কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহূর্তের এই ঝড়ে চারিদিকে তছনছ হয়ে যায়৷

জানা গিয়েছে, একাধিক বাড়ির ছাউনি উড়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে বিঘার পর বিঘা বোরো ধানের গাছ। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু পানের বোরোজ এবং কলাবাগান। গোয়ালঘরের খুঁটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে গবাদি পশুরও। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো এলাকা৷ যদিও এখনও পর্যন্ত প্রশাসন সূত্রে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি৷

শনিবার সকাল থেকেই রামনগর, কাঁথি এলাকা জুড়ে ছিল কালো মেঘের ঘনঘটা। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাসও ছিল। কিন্তু কাজ সেরে বাড়ি ফেরার আগেই সন্ধ্যার মুখে ধেয়ে আসে কালবৈশাখী। শুরু হয় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি। বেশ কয়েকটি এলাকায় শিলাবৃষ্টিও হয়। তার মধ্যে বিকাল সাড়ে ৩ টা নাগাদ মৈতনা গ্রাম-পঞ্চায়েত এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যায় তীব্র গতির ঝোড়ো হাওয়া।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য কালবৈশাখী ঝড় হয়৷ আপাতত খবর, কাচা ও পাকা বাড়ি মিলিয়ে মোট ১৫০টি বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। অনেক জায়গায় গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ে৷ বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার ওপর গাছ ভেঙে পড়ে যায়৷

শুধু তাই নয়, হাইটেনশনের তার ছিড়ে যাওয়ায় পুরো মৈতনা গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন সংলগ্ন এলাকা। বিকালের এই কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে সব চেয়ে বিপাকে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর তৈরির কাজে নামা ২৫৮ টি পরিবার। প্রশাসনের নির্দেশে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘর তৈরির নির্দেশ পেয়ে পুরোনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছিলেন তাঁরা। অস্থায়ী ঝুপড়ি বানিয়ে থাকছিলেন। কিন্তু এদিনের ঝড়ে সিংসভাগ ঝুপড়িই উড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন মৈতনা- গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তমালতরু দাসমহাপাত্র।

পঞ্চায়েত প্রশাসনের তরফে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন উপপ্রধান। তিনি আরও বলেন, “মুহূর্তের ঝড়ে ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়েছে৷ বহু ঘরবাড়ি মাথার ছাউনি উড়ে গিয়েছে ৷ মানুষ ভয় পেয়ে যান৷ চারদিকে গাছের ডালপালা ভেঙে পড়তে থাকে৷ বৃষ্টিও খুব বেশি হয়নি৷ তাতেই উথালপাতাল অবস্থা হয়েছে এলাকা।”