Child Harassment: নৃশংস! ঘুম পাড়ানোর নামে দুধের শিশুকে তুলে আছাড় পরিচারিকার

Panskura: কখনও শিশুটির পায়ে ধরে বিছানার ওপর আছাড় মারছে। কখনও আবার শিশুটির শরীরে সজোরে আঘাত করছে।

Child Harassment: নৃশংস! ঘুম পাড়ানোর নামে দুধের শিশুকে তুলে আছাড় পরিচারিকার
অভিযুক্ত কল্পনা সেন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 02, 2021 | 1:41 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: কাজের জন্য প্রায় সারাদিন বাড়ির বাইরে থাকেন বাবা-মা। সন্তানকে দেখার মতো বাড়িতে তেমন কেউ নেই। সেই কারণে পরিচারিকার হাতেই সন্তানের দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে বাইরের কাজ সামলান দু’জন। কিন্তু কে জানত পরিচারিকার হাতেই এমন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হবে তাঁদের দুধের সন্তান।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাবলিক হেলথের ডিসট্রিক্ট ম্যানেজার নবমিতা ভট্টাচার্য। তাঁর স্বামী দেবাশীস দাস পেশায় চিকিৎসক তিনি। তিনি বাঁকুড়ায় কর্মরত। ওই দম্পতি পাঁশকুড়ার মেচগ্রামে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। সেখানেই ২০১৮ থেকে পরিচারিকার কাজ করে কল্পনা সেন নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা।

গত বছরের নভেম্বরে একটি শিশু কন্যার জন্ম দেন নবমিতা। পশ্চিম মেদিনীপুরে বাবার বাড়িতে মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটানোর পর মে মাসে ফের ফ্ল্যাটে এসে ওঠেন তিনি। দেবাশিস প্রতি শনিবার ফ্ল্যাটে আসেন। কিন্তু কয়েক মাস আগে পরিচারিকা কল্পনার আচরণে কিছুটা সন্দেহ দেখা দাস দম্পতির। সন্দেহের বশেই পরিচারিকার অলক্ষে ফ্ল্যাটের মধ্যে সিসি ক্যামেরা লাগান তাঁরা। এরপর গতকাল দুপুর নাগাদ দেবাশিস মেয়েকে দেখার জন্য বাঁকুড়া থেকে নিজের মোবাইলে অনলাইনে সিসিটিভি ফুটেজ দেখেন। হতবাক হয়ে যান তিনি।

দেবাশিস দেখতে পান ওই পরিচারিকা তাঁর একরত্তি শিশুর ওপর শারীরিক অত্যাচার চালাচ্ছে। ভিডিয়োতে দেখা যায়, কল্পনা কখনও শিশুটির পায়ে ধরে বিছানার ওপর আছাড় মারছে। কখনও আবার শিশুটির শরীরে সজোরে আঘাত করছে। কখনও বা ঘুম পাড়ানোর জন্য জোরে জোরে চড় থাপ্পড় মারছে। এরপরই স্ত্রীকে পুরো বিষটি জানান দেবাশিসবাবু। কিন্তু কাজের জন্য নবমিতাদেবী তখন কাঁথিতে ছিলেন। পরে বাঁকুড়া থেকে দেবাশীস বাবুও ফিরে আসেন। এরপর গতকাল পাঁশকুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় পরিচারিকা কল্পনার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত পরিচারিকাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ তাকে তমলুক আদালতে তোলা হয়। তার বিরুদ্ধে আইপিসি ৩২৩,৫০৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা রজু হয়েছে।

তবে ঠিক কী কারণে এই কাজ করছিল কল্পনা সেই বিষয়ে তার কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে পুলিশি জেরায় সে স্বীকার করে নিয়েছে যে সে শিশুটির উপর শারীরিক নির্যাতন চালাত ।

অপরদিকে, শিশুটিকে তার বাবা-মা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ রয়েছে বলেই খবর।

এখন কর্মসূত্রে বেশির ভাগ বাবা-মা বাড়ির বাইরে থাকেন। সেক্ষেত্রে নিজের সন্তানকে পরিচারিকার তত্ত্বাবধানে রেখে যান তাঁরা। কিন্তু তাঁদের কাছে কতটা সুরক্ষিত সন্তানরা সেই বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ঘটনার বিষয়ে মনোবিদ ডঃ সুজিত সরখেল বলেন,” বাচ্চাকে একা ছাড়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হন। যদি পরিচারিকার আচার-আচরণের ক্ষেত্রে হঠাৎ পরিবর্তন লক্ষ করেন , বা পরিচারিকা ছোটোছোটো ব্যাপারে মাথা গরম করছেন এই ধরনের বিষয় লক্ষ করেন তাহলে সেই মানুষকে কাজে না রাখাই ভালো। এর থেকে আগে বেশি কিছু বলা মুশকিল। কারণ কোন মানুষ কেমন হবেন সেই বিষয়ে আগে থেকে বলা সম্ভব নয়। তবে যেখানেই একা সন্তানকে রেখে যাচ্ছেন সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্য নেওয়া ভালো। সেক্ষেত্রে নজরদারি করা সম্ভব হবে।”

আরও পড়ুন: PM Narendra Modi: ‘আমি সমালোচকদের সম্মান করি, কিন্তু…’, টিকাকরণ নিয়ে বিরোধীদের মোক্ষম ‘খোঁচা’ প্রধানমন্ত্রীর