Bhagabanpur: চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণা, তৃণমূল নেতার পরিবারের সদস্যদের গাছে বেঁধে মার

Purba Medinipur: জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর বিধানসভার ১ নম্বর ব্লকের কোটবার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রাক্তন বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ শিবশঙ্কর নায়েক।

Bhagabanpur: চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণা, তৃণমূল নেতার পরিবারের সদস্যদের গাছে বেঁধে মার
ভগবানপুরে মারধরের ছবি (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 06, 2022 | 5:15 PM

ভগবানপুর: চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের ঘটনা। পার্থ ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার বাড়িতে চড়াও হলেন চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরির নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ।

সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর বিধানসভার ১ নম্বর ব্লকের কোটবার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রাক্তন বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ শিবশঙ্কর নায়েক। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষ-লক্ষ টাকা তুলেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ প্রয়াত তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধানের ঘনিষ্ঠ এই শিবশঙ্কর। তাঁর বাড়ি ভগবানপুর ১ নং কোর্টবারে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২০১৬ সালের আগে থেকেই তাঁরা চাকরি করার জন্য প্রাথমিকে এবং গ্রুপ ডি-র বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য টাকা দিয়েছিলেন। বিপুল পরিমাণ টাকার অঙ্ক ছিল। তবে ২০২২ সাল হয়ে গেলেও কোনও ভাবে খোলেনি ভাগ্য। বারংবার তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘুরেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু কোনওভাবেই চাকরি জোটেনি। এরপরই ধৈর্য চ্যুতি ঘটে চাকরিপ্রার্থীদের। ক্ষোভে তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর নায়েকের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকাবাসী।

শিবশঙ্কর বাবুর স্ত্রী মলিনা নায়র, তাঁর ছেলে ও মেয়েকে বাড়ির বাইরে টেনে এনে বেধড়ক মারধর করা হয়। শুধু তাই নয়, শিবশঙ্করের ছেলেকে গাছে বেঁধে রেখেও পেটানো হয় বলে জানা গিয়েছে। তবে ঘটনার সময় ওই ব্যক্তি বাড়িতে ছিলেন না। বর্তমানে এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি। ভগবানপুর থানার পুলিশ এলাকা ঘিরে রেখেছে। বিজেপি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘দেখুন মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেদিন পার্থবাবুর উদ্দেশে একজন জুতো ছুড়ে মেরেছিল। বাংলার সংস্কৃতিতে এগুলো নেই। বাংলা সংস্কৃতিকে যাঁরা কলুষিত করেছে তাঁদের সাজা পেতে হবে। ঘটি-বাটি বিক্রি করে প্রচুর মানুষ টাকা দিয়েছেন।’

অপরদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘তৃণমূলের লুঠেরা বাহিনী যেভাবে গ্রাম-পঞ্চায়েত লুঠ করেছে। টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে মানুষের সহ্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। এতদিন পর্যন্ত মানুষ বুঝতে পারছিল না। এখন বুঝতে পারছে গোটা তৃণমূল পচা।’ চাকরিপ্রার্থী এক যুবকের দাদা দীপক মাইতি বলেন, ‘আমার ছোট ভাই চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিল। ২০১৭ সালে বাবা অসুস্থ হলে এখানে এসে বললে আমাকে দু লক্ষ টাকা ফেরত দেয়। চাকুরি হয়ে গেলে দু লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে। ৬ লক্ষ টাকা জমা আছে। টাকা চাইতে এলে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি থেকে ফেরাচ্ছেন। ফোন করলেও হুমকি ও প্রাণে মেরে ফেলার ধমক দিত। গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিত। আমরা অবিলম্বে টাকা ফেরত চাই। তা না হলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন ও অনশনে নামব।’

তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির বাড়ি ঘেরাও ও হেনস্থার ঘটনায় তীব্র কটাক্ষ করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপিও। কাঁথি সংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতা অসীম মিশ্র বলেন, “তৃণমূলের সবাই চোর। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থেকে উপর তলার নেতা পর্যন্ত চোর। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সেখানেও কাটমানি নিচ্ছে৷ মানুষকে ঠকিয়ে টাকা রোজগার করা তৃণমূল নেতাদের একটাই উদ্দেশ্য। ভগবানপুরে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য টাকা তুলে পার্থবাবুর কাছে পাঠিয়েছেন মানুষ তার হিসেব বুঝে নেবে ৷ আপনাদের আগামী দিনে ঘরছাড়া করবে। ভারতীয় জনতা পার্টি বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী ও বঞ্চিত মেধাদের পাশে রয়েছে, আগামী দিনেও থাকবে।”

ভগবানপুর ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মলিনা নায়ক বলেন, “কেন মারধর করছে আমি জানি না। চাকরির নামে টাকা নিয়েছি? তার প্রমাণ দেখাতে হবে। কোনও প্রমাণ ছাড়াই এসে বাড়িতে মারধর করছে। আমাকে ও আমার ছেলে মেয়েকে বেধড়ক মারধর করেছে৷ যদি স্বামী টাকা নিয়ে থাকে তাহলে স্বামীর ব্যাপার৷ স্বামীকে যারা টাকা দিয়েছে তারা যেমন দোষী, যদি স্বামী টাকা নিয়ে থাকে তেমনই দোষী।”