Suvendu Adhikari: পঞ্চায়েতে বিজেপিকে জেতালেই আবাস যোজনা পাবেন বঞ্চিতরা, কাঁথিতে প্রতিশ্রুতি শুভেন্দুর

Suvendu Adhikari: ২০২৪-এ দু'লক্ষ ভোটে কাঁথিতে জেতার স্বপ্ন এখন থেকেই। কী ধামাকা ২১-এর এই কাঁথির সভায়? গতকাল রাত্রিবেলা শেষ হয়েছে মেগা-শো-এর প্রস্তুতি।

Suvendu Adhikari: পঞ্চায়েতে বিজেপিকে জেতালেই আবাস যোজনা পাবেন বঞ্চিতরা, কাঁথিতে প্রতিশ্রুতি শুভেন্দুর
শুভেন্দু অধিকারী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 21, 2022 | 5:09 PM

আজ বিজেপির হাই ভোল্টেজ জনসভা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথিতে। দিল্লির ভোকাল টনিকে চাঙ্গা বিরোধী দলনেতা। ২০২৪-এ দু’লক্ষ ভোটে কাঁথিতে জেতার স্বপ্ন এখন থেকেই। কী ধামাকা ২১-এর এই কাঁথির সভায়? গতকাল রাত্রিবেলা শেষ হয়েছে মেগা-শো-এর প্রস্তুতি। আজকে সেন্ট্রাল বাসস্ট্যাণ্ডে যুব তৃণমূল কংগ্রেস পক্ষ থেকেও জনসভার আয়োজন করা হয়। তবে একই দিনে দু’টি রাজনৈতিক দলের সভা হওয়ায় মানুষের অসুবিধার কথা বিচার করে সভা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তৃণমূলের তরফে।

  1. শুভেন্দু বলেন, “পঞ্চায়েত ভোট করাতে পারবেন তো? ছোট-ছোট চোর ধরাতে পারবেন তো? আর বড় চোরকে আমার উপর ছেড়ে দেন। সবে তো সূর্য ডুবেছে।”
  2. শুভেন্দু বলেন, “রাজ্য পুলিশ দিয়ে পৌরসভার মতো ভোট লুঠ হবে না। গতকাল কাঁথিতে শিক্ষকদের একটা ছোট্ট ভোট ছিল। রেজাল্ট দেখেছেন? জিতেছে বিজেপি, দ্বিতীয় সিপিএম, তৃতীয় তৃণমূল। ভোট দিতে দিলে তাই হবে। এখানে বিজেপি থাকবে, তৃণমূলের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না।”
  3. বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমি ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর যোগদান করি বিজেপি। পিসি প্রথমে বললেন আমি ৪ জানুয়ারি নন্দিগ্রাম যাব। ১৮ জানুয়ারি এলেন। বললেন নন্দীগ্রাম মেজবোন, ভবানীপুর বড় বোন। এবার নন্দীগ্রামে কী হয়েছে আপনারা জানেন। ১৯৫৬! ভোটের আগে ভাইপো সভা করতে এল। দুর্মুঠের কাছে। সেখানে এসে বলল আমায় তোর বাপকে ডাক। তারপর পিসি মিটিং করলেন। মাঠ ফাঁকা। কাঁথির লোক কী উত্তর দিল? দক্ষিণ কাঁথি বিজেপি, উত্তর কাঁথি বিজেপি, খেজুরি বিজেপি, ভগবানপুর বিজেপি নন্দীগ্রামে নিজে হারলেন। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন কাঁথি-তমলুক লোকসভা নরেন্দ্র মোদীকে দেওয়ার দায়িত্ব শুভেন্দু অধিকারীর।
  4. এ দিন ডেটলাইন নিয়ে শুভেন্দু বলেন, “আমি তিনটি উল্লেখযোগ্য দিনের কথা ডিসেম্বরে বলেছিলাম। তবে কখনোই বলিনি সরকার বদলে দেব। আপনারা কী চান? এমএলএ ভেঙে সরকার বদলে যাক? নাকি ভোটে জিতে বিজেপি আসুক। আমরা ভোটে জিতে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনব। ভোটে জিতে বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে। রাষ্ট্রবাদী সরকার হবে।ডাবল ইঞ্জিন সরকার হবে। উত্তর প্রদেশের মতো পশ্চিমবঙ্গেও বুলডোজার চলবে।”
  5. বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, “রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত পুলিশ করতে গেলে আমাদের গণ আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতে হবে। পুলিশ ছাড়া তোলামূলের আর কিছু নেই। পুলিশ ছাড়া ওরা অন্ধকার। তাই আপনারা জাগ্রত হন।”
  6. শুভেন্দু বলেন, “২০২৩ পঞ্চায়েতে বিজেপিকে জেতাতে হবে। বিজেপিকে জেতাতে পারলে ২০১৮ সালের তালিকায় তৃণমূল নাম তোলেনি অথচ পাওয়ার জন্য উপযুক্ত। তাঁদেরকে আমরা ২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আবাস যোজনা পাইয়ে দেব।”
  7. বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমরা চাই ঘুসমুক্ত কর্ম সংস্থান। রাজ্যে যেভাবে চাকরি বিক্রি হয়েছে। যেভাবে পার্থ-অপার বাড়িতে টাকার পাওয়া গেছে। এই সমস্থ কিছুর মুক্তি চাই।” আবাস দুর্নীতি নিয়ে বলেন, “আবাস যোজনা নিয়ে এতটুকু বিচলিত হবেন না। আবাস যোজনায় ১৭ দফা আছে। সেই দফা অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্পের টাকা দিতে হবে। যদি দেখেন এই ১৭ দফার মধ্যে আছে অথচ তাকে টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। তার নামের তালিকা আমাদের পাঠাবেন। প্রমাণসহ সেই টাকা ফেরত পাঠাব। একটাও তোলামুল পার্টির লোক, যিনি এই ১৭ দফার মধ্যে পড়েন, তাদের একজনকেও যদি বেআইনি ভাবে টাকা দেওয়া হয়, সেই টাকা ফেরতের দায়িত্ব গিরিরাজ সিং এর।” একই সঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “২০১৮ সালের তালিকার খসড়ায় যাঁর নাম নেই তাঁরা কীভাবে নাম অন্তর্ভুক্ত করবেন? নাম অন্তর্ভুক্ত হবে না।”
  8. শুভেন্দু বলেন, “আজকে কাঁথির বিজেপি লেজ দেখাল। মাথা দেখায়নি। দেখাব। ঠিক সময়ে দেখাব। সুধাম পণ্ডিত ও তপন পণ্ডিত লোকসভার দুটো সিট প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেবেন। তাদের ধন্যবাদ।
  9. এ দিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “৪২ এর আন্দোলনের মতো আপানেদের স্ফুলিঙ্গ জ্বলেছে।ভরসা রাখুন আমাদের উপর।” সভা করা নিয়ে তৃণমূলকে দুষে বলেন, “জেলা প্রেসিডেন্ট সুধাম পণ্ডিত অনুমতি চেয়েছিলেন, কিন্তু মেলেনি। কলেজের মাঠে নাকি ১৫ দিন ধরে ভাইপো কাপ হবে। কিছু নেই, গরু চড়ছে। এরপর হাইকোর্টে যাওয়া হল। তখন কোর্ট বলল সভা হবে। ওরা ভাবল এবার কী করে আটকাব। তারপর নিজেরা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে সভা করার কথা বলল। এরপর এসডিও বাবা পার করেগা। উনি বললেন, সকাল ৭টায় মাইক বাজবে তবে দুপুর ১টার পর বন্ধ হয়ে যাবে।সভার সময় ছিল ২টো। ১টায় মাইক বন্ধ। মানে বিনা মাইকে আমরা বক্তৃতা দেব ওরা চেয়েছিল। এরপর ফের হাইকোর্টে গেছিলাম। আমরা চাইলাম সকাল ৭টা থেকে মাইক চালু, কোর্ট বলল ভোর সাড়ে ৬টা থেকে বাজবে। আমরা বললাম ৮টায় মাইক বন্ধ হবে, কোর্ট বলল সাড়ে ৮টায় বন্ধ হবে। আবার থাপ্পাড়।”
  10. বুধবার দুপুর তিনটে নাগাদ সভাস্থলে আসেন শুভেন্দু অধিকারী। মঞ্চে তাঁকে বরণ করে নেওয়া হয়।
  11. ইতিমধ্যেই জেলা নেতৃত্বরা আসতে শুরু হয়েছে। নির্ধারিত সময় দুপুর ২টোর আগেই জমায়েত শুরু হয়েছে। মোট তিনটি মঞ্চ করা হয়েছে। উপস্থিত থাকবেন হিরণময় চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ, সজল ঘোষ, মাফুজা খাতুন সহ অন্যান্যরা। তবে দিলীপ ঘোষ উপস্থিত থাকবেন কি না জানা যায়নি।
  12. মঞ্চে বক্তব্য রাখেন রুদ্রনীল ঘোষ

    মঞ্চে বক্তব্য রাখেন হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়

  13. গেরুয়া শিবিরের তরফে মনে করা হচ্ছে এ দিন শুভেন্দু অধিকারী একাধিক বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরতে পারেন। তাঁর দেওয়া তিনটি ডেটলাইনের মধ্যে প্রথম দু’টি সেই ভাবে প্রভাব ফেলতে না পারলেও তৃতীয় ডেটলাইনে দিল্লি থেকে ফিরে যথেষ্ঠ আত্মবিশ্বাসী বিরোধী দলনেতা।
  14. এ দিন সকাল থেকেই প্রস্তুতি চরমে। গোটা কাঁথি মুড়ে ফেলা হয়েছে গেরুয়া পতাকা ও মাইকের মাধ্যমে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সকাল সাড়ে ছ’টা থেকে সন্ধে সাতটা পর্যন্ত মাইকের ব্যবহার করা যাবে।
  15. এ দিকে তৃণমূলের এই সভা বাতিলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। কাঁথি সংগঠনিক জেলায় বিজেপির সহ-সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, “গত কয়েকদিন আগে তৃণমূল কোম্পানির মালিক কাঁথিতে সভা করতে এসেছিলেন। কাঁথি কলেজ মাঠে এক ঝুড়ি লোক নিয়ে সভা করেছিলেন। সাড়ে তিন বছরের জেল খাটা আসামী বলছে বিজেপির সভায় লোক হবে না। কালকে দেখে দেবেন কাঁথিতে ঐতিহাসিক সভা। এই সভাটা মানুষের সভা ও প্রতিবাদের সভা। চোরেদের জেলে ভরার সভা।”
  16. শুভেন্দুর সভার প্রস্তুতির ছবি

    শুভেন্দুর সভার প্রস্তুতির ছবি

    শুভেন্দুর সভার প্রস্তুতির ছবি

    শুভেন্দুর সভার প্রস্তুতির ছবি

  17. মঙ্গলবার দুপুরেই কাঁথি রেল স্টেশনে বিজেপির সভা মঞ্চ হাজির হয় বিজেপি জেলা নেতৃত্বরা। সভায় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি সুদাম পণ্ডিত ও সহ সভাপতি অসীম মিশ্র সহ বিজেপি নেতৃত্বরা।
  18. কাঁথি শহরের রেলস্টেশন সংলগ্ন মাঠে জনসভা হবে। গতকাল রাত্রিবেলাই প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে। গেরুয়া শিবিরের এই সভাকে ঘিরে বিগত কয়েকদিন ধরে সকাল থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপি কর্মী সমর্থকরা প্রচার অভিযান চালিয়েছেন।বিস্তীর্ণ এলাকায় মাইকিং করে প্রচার চালানো হয়েছে।