Suvendu Adhikari: ‘তৃণমূল তো ওদের পড়াশোনা করিয়েছে…এসপির নেতৃত্বে ময়নায় গুন্ডারাজ চলছে’
Clash in Moyna: ধারাল অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম এলাকারই দুই সক্রিয় বিজেপি কর্মী। আহত মধুসূদন রানা ও জয়দেব রানাকে ময়না ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্ত মধুসূদন রানার অভিযোগ, রাতের বেলা তিনি ঘরে বসে ভাত খাচ্ছিলেন।
পূর্ব মেদিনীপুর: সোমবার রাতেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ময়না। পুলিশের পোশাক পরে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। গুরুতর আক্রান্ত ওই মধুসূদন রানা ও জয়দেব রানা নাম্নী ওই দুই বিজেপি কর্মীকে তমলুক জেলা হাসপাতালে মঙ্গলবার সন্ধেবেলায় দেখতে আসেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এরপরেই পুলিশ প্রশাসনকে সরাসরি নিশানা করেন অধিকারী পুত্র। পাশাপাশি, সরকারি হাসপাতালের পরিবেশ পরিস্থিতি ও পরিষেবার বিরুদ্ধেও মুখ খোলেন তিনি।
শুভেন্দু এদিন বলেন, “ময়নার বাকচা গ্রামে বিজেপি ভীষণ শক্তিশালী। তৃণমূল নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। তাই পুলিশকে দিয়ে এসব করাচ্ছে। তৃণমূল ওদের বেতন দিয়েছে, পড়াশোনা শিখিয়েছে…তাহলে কেন করবে না। ময়নার এসপির নেতৃত্বে এসডিপিও, এসআই-রা এখানে গুন্ডারাজ চালাচ্ছে। আমাদের কাছে সমস্ত তথ্য প্রমাণ রয়েছে। এই ঘটনায় যা যা পদক্ষেপ করা যায় আমরা সবটাই করব। আগামীদিনে আমাদের বেশ কিছু কর্মসূচিও রয়েছে। ”
সোমবার রাতে খিদিরপুর গ্রামের গোলপাতায় পুলিশের পোশাক পরে বাড়িতে এসে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে বিজেপি কর্মীদের (BJP Worker) উপর হামলা করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।
ধারাল অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম এলাকারই দুই সক্রিয় বিজেপি কর্মী। আহত মধুসূদন রানা ও জয়দেব রানাকে ময়না ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্ত মধুসূদন রানার অভিযোগ, রাতের বেলা তিনি ঘরে বসে ভাত খাচ্ছিলেন। সেইসময়ে তাঁর বাড়ি এসে হামলা চালায় পুলিশ। তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ। মধুসূদন ছাড়াও জয়দেব রানা নামে আরও এক কর্মীর বাড়িতে একইভাবে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
চোখের জলে ভাসতে ভাসতে আক্রান্ত মধুসূদন বলেন, “রাতের বেলা ঘরে বসে ভাত খাচ্ছিলাম। আচমকা বাড়ির সামনে পুলিশের গাড়ি এল। হাতে এত অস্ত্র। কেন এল কীভাবে এল, কিছুই জানি না। তারপরেই সব ওলটপালট হয়ে গেল। আমাদের ভীষণ মারধর করেছে। কোনও ঝুটঝামেলায় আমরা থাকি না। বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। তাইজন্যই কি হামলা করা হল? জানা নেই!”
গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই পুলিশের পোশাক পরে এসে হামলা চালিয়েছে। নয়ত, বেছে বেছে কেন কেবল বিজেপি কর্মীদেরই মারধর করা হবে বলে অনুযোগ পদ্মের।
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের মন্তব্য, “মধুসূদন এবং জয়দেব দলের সাধারণ কর্মী। তাদের বাড়িতে ঢুকে পুলিশের পোশাক পরা কিছু লোক বেধড়ক মারধর করেছে এবং কুপিয়েছে। পুলিশকে বারবার বলা হয়েছে, যে ময়নায় বিশেষ করে এই বাচ্চা অঞ্চলে যেভাবে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব বাড়ছে তা কহতব্য় নয়। এভাবে বারবার বলার পরেও যদি পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করে তাহলে কিছু বলার নেই।”
যদিও বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় এখনও তৃণমূলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ময়না থানার পুলিশ জানিয়েছে, গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, রবিবার রাত থেকেই অশান্তির আগুন ছড়িয়েছিল ময়নায়। ওইদিন রাতেই টোটো ভাঙাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, টোটো ভাঙা নিয়ে শাসক ও বিরোধী শিবির (TMC BJP Clash) সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পৌঁছতেই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধ বাধে বলে অভিযোগ। সংঘর্ষের ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রবিবার রাতে একটি টোটো ভাঙাকে কেন্দ্র করে ময়নার আড়ং কিয়ারানা গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। সেই সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে আসে। কিন্তু, গ্রামের মধ্যে ঢুকে পুলিশকর্মীরা ধরপাকড় চালায় ও লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। এমনকী, গ্রামের মহিলা ও শিশুদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও পুলিশের তরফে বলা হয় কোনও লাঠিচার্জ করা হয়নি।