আইনশৃঙ্খলায় ধনখড়ের ‘টেস্ট কেস’ হবে ডায়মন্ড হারবার

জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার পর তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন "কী দরকার ছিল অভিষেকের কেন্দ্রে এসে খোঁচানোর।" এদিন রাজ্যপালের বক্তব্যে তারই পাল্টা খোঁচা। ধনখড় বলেন, "তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় আমাকে রাস্তা দেখিয়েছেন।" তাই ডায়মন্ড হারবার তাঁর 'টেস্ট কেস' হতে চলেছে।

আইনশৃঙ্খলায় ধনখড়ের 'টেস্ট কেস' হবে ডায়মন্ড হারবার
সরিষায় রামকৃষ্ণ মিশনে সস্ত্রীক রাজ্যপাল। টুইটারে নিজেই শেয়ার করেছেন ছবিটি।
Follow Us:
| Updated on: Dec 16, 2020 | 6:54 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলাকেই ইস্যু করছে বিরোধীরা। সম্প্রতি ডায়মন্ড হারবারে (Diamond Harbour) বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কনভয়ে হামলার ঘটনা ঘিরে রাজ্য-কেন্দ্র তরজা দিল্লি অবধি গড়িয়ে গিয়েছে। বুধবার সেই ডায়মন্ড হারবারে বসেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) শুনিয়ে গেলেন, সবদিকে নজর রয়েছে তাঁর। প্রশাসন যদি এখনও ‘পক্ষপাত’ না ছাড়ে, যদি রাজনৈতিক কোনও দলের হয়ে কাজ করে তাহলে শিয়রে বিপদ। বাংলার পরিস্থিতি পাল্টাবেই। প্রশাসনিক বলয় আরও সুদৃঢ় হবে। আর এই ক্ষেত্রে ধনখড়ের ‘টেস্ট কেস’ হবে ডায়মন্ড হারবারই।

আরও পড়ুন: যোগদান নাকি জোট, বিনয়-অনিতদের ভাগ্য ঝুলে শাহ-সম্মতির অপেক্ষায়

এদিন সরিষায় রামকৃষ্ণ মিশনের এক অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক যোগ দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এরপর যান সরকারি গেস্ট হাউজ শুভান্নে। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ধনখড় বলেন, পুলিসের সবস্তরেই তাঁর নজর রয়েছে। কে কোথায় কোন অনুপ্রেরণায় কাজ করছেন সবটাই তিনি জানেন। ওসি থেকে আইপিএস সকলকেই ধনখড়ের বার্তা, “কাজের ধরন বদলান। পক্ষপাত চলবে না।”

বাংলায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সবসময়ই সরব রাজ্যপাল। বারবারই অভিযোগ করেন, বাংলায় পুলিস শাসকদলের হয়ে কাজ করে। এদিনও তাঁর কথায় সেই সুরই শোনা গেল। ধনখড়ের এদিনের বক্তব্য ছিল মূলত রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রিক। বিজেপি নেতা জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার পর তাঁর এদিনের বাক্যবাণের নিশানাই ছিল তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্র। স্পষ্ট বলেন, “গোটা রাজ্যে আমার নজর তো থাকবেই। কিন্তু এই জায়গাটাকে আমি টেস্ট কেস বানাব।”

অর্থাৎ ডায়মন্ড হারবারকে ঘিরেই তাঁর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাবতীয় পরীক্ষানিরীক্ষা চলবে বলে এদিন বার্তা দেন রাজ্যপাল। জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার পর তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন “কী দরকার ছিল অভিষেকের কেন্দ্রে এসে খোঁচানোর।” এদিন রাজ্যপালের বক্তব্যে তারই পাল্টা খোঁচা। ধনখড় বলেন, “তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় আমাকে রাস্তা দেখিয়েছেন।” তাই ডায়মন্ড হারবার তাঁর ‘টেস্ট কেস’ হতে চলেছে।

আরও পড়ুন: সভাপথে ভাঙচুর হতে পারে ‘দিলীপদা’র গাড়ি, থানায় ছুটল জেলা নেতৃত্ব

একইসঙ্গে এদিনও অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস সুরজিৎ পুরকায়স্থর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল। বলেন, “মানুষের টাকা নষ্ট করছেন। ওনার কি কাজ তা আমার জানার অধিকার নেই? রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা তিনি। আইপিএসরা ওনার অধীনে। ওনার কাজ কি ভোটের আগে কোন আইপিএসকে কোথায় পাঠানো যায় সেটা পরিকল্পনা করা। রাজ্যের শাসকদলের যাতে সুবিধা হয় সেটা দেখা।”

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ডায়মন্ড হারবারের কথা তুলে এদিন ধনখড়ের হুঁশিয়ারি, “আমি ভয়হীন, স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচনের জন্য সবরকম ব্যবস্থা করব। সবদিক নজরে রাখছি। আপনি ভাবছেন কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে কী করবে। মাথায় রাখতে হবে কোনওটাই কারও নির্দিষ্ট জায়গা নয়।” ধনখড়ের এদিনের ডায়মন্ড হারবার সফর ঘিরে চূড়ান্ত নিরাপত্তা নজরে আসে। রাস্তার প্রত্যেকটি মোড়ে প্রচুর সংখ্যক পুলিস মোতায়েন করা হয়।