ভোট মিটতেই সব শেষ! ভাঙড়ের তৃণমূল প্রার্থী চিরতরে হারালেন তাঁর বলিষ্ঠ সহযোগীকে
প্রয়াত ভাঙড়ের তৃণমূল প্রার্থী রেজাউল করিমের নির্বাচনী এজেন্ট তথা বর্যীয়ান তৃণমূল নেতা নান্নু হোসেন (Nannu Hossain)।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বলা যেতে পারে ভাঙড়ের (Bhangar) রাজনীতিতে তৃণমূলের নক্ষত্র পতন! প্রয়াত ভাঙড়ের তৃণমূল প্রার্থী রেজাউল করিমের নির্বাচনী এজেন্ট তথা বর্যীয়ান তৃণমূল নেতা নান্নু হোসেন (Nannu Hossain)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩।
শনিবার রাতে আচমকাই বুথে ব্যথা, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। রাতেই কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। রবিবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। এবারের বিধানসভা নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি।
ভাঙড়ের রাজনীতিতে নান্নু হোসেনের নাম জ্বলজ্বল করে। ১৯৮৮ সাল কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতিতে আসা তাঁর। যখন ভাঙড়ে একচেটিয়া সিপিএমের রাজত্ব, তখন ২০০৬ সালে ভাঙড়ের মাটিতে ঘাস ফুল ফোটায় আরাবুল ইসলাম-নান্নু হোসেন জুটি। আরাবুল ইসলাম বিধায়ক হন। তবে পরবর্তী ক্ষেত্রে আরাবুলের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে মনোমালিন্য তৈরি হয় নান্নুরের।
২০১১ সালের নির্বাচনে নান্নু নির্দল প্রার্থী হয়ে বিধানসভা নির্বাচনে লড়েন। তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়েছিলেন আরাবুল ইসলাম। ১০,৩৬৩টি ভোটে আরাবুলকে হারিয়ে দেন নান্নু। নির্দলের টিকিটে লড়েও দল ছাড়েননি নান্নু। পরবর্তীতে জেলা পরিষদের সদস্যও হন তিনি। ভাঙড়ের রাজনীতিতে বরাবর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন তিনি।
এবারের নির্বাচনেও টিকিটের দাবিদার ছিলেন তিনি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিকিট দিয়েছিলেন রেজাউলকে। ভাঙড়ের সভা থেকে সুপ্রিমো জানিয়েছিলেন, “এ বার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে জানিয়েছিলেন রেজ্জাক মোল্লা। আরাবুল ইসলাম, কাইজার আহমেদ, নান্নু হোসেন, ওহিদুল ইসলামের মতো অনেকেই টিকিটের দাবিদার ছিলেন। আমি ভাবলাম, কী করা যায়। রেজাউল অনেক সমাজ সেবামূলক কাজ করেন। তিনি মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছেন। যদিও রেজাউল আমার কাছে টিকিট চাননি। আমি তাঁকে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছি।” রেজাউলের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন নান্নু। ভোটে দিনরাত এক করে খেঁটেছেন। নিজের এলাকাটাকে যে হাতের তালুর মতন চেনেন। অনুগামীরা বলছেন, ‘দাদাকে সব সময় ফিটই দেখেছি। উঁচু লম্বা বলিষ্ঠ একজন মানুষ। আচমকাই বুকে ব্য়থা হল। ভোরে সব শেষ।’ শোকস্তব্ধ ভাঙড়ের তৃণমূল শিবির।