‘ছেলেটাকে পুলিশ খেয়ে নিল’, ৫দিন খোঁজ ছিল না, দেহ মিলতেই বুকফাটা আর্তনাদ মায়ের!
Death: অভিযোগ, আধিকারিকরা মোটা টাকা চেয়ে বসেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় ওই তিন যুবকের উপর মারধর করা হয় বলে অভিযোগ
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রক্ষকই ভক্ষক! পুলিশের তোলাবাজির জেরে খালে পড়ে মৃত্য়ু হল এক যুবকের। রাতে সবজি কিনতে গিয়ে তিন বন্ধু পুলিশি জেরার মুখে পড়েন। সবজি কেনার আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তাঁরা। অভিযোগ, পুলিশ আধিকারিকদের হাত থেকে বাঁচতে ছুটে পালানোর চেষ্টা করেন ওই যুবক। তখনই খালে পড়ে মৃত্য়ু হয় তাঁর। জানা গিয়েছে মৃতের নাম মহম্মদ আলাউদ্দিন। বছর তেইশের ওই যুবক একাই তাঁর পরিবারের উপার্জনশীল ছিলেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ভাঙড়ের ট্যাংরায়।
মৃত মহম্মদ আলাউদ্দিনের পরিবারের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার রাতে পেটের দায়ে তিন বন্ধু মিলে নিজেদের ম্যাটাডোর নিয়ে সবজি কিনতে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু, সবজি কিনতে যাওয়ার আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তাঁরা। প্রশ্ন পর্ব মিটলেও ছাড় পাননি ওই যুবকেরা। অভিযোগ, আধিকারিকরা মোটা টাকা চেয়ে বসেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় ওই তিন যুবকের উপর মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে মহম্মদ ছুট দেন। কিন্তু পুলিশ আধিকারিকরা তাঁকে ধাওয়া করতে শুরু করেন। অন্ধকারে বুঝতে না পেরে পচা খালের জলেই ঝাঁপ দেন মহম্মদ। তারপর আর ওঠেননি! অভিযোগ, পুলিশকর্তারা এসে জানান, ওই যুবককে পাওয়া যায়নি। তিনি পলাতক। এরপর যুবকের ওই দুই বন্ধুকেও আটক করা হয় এবং তাঁদের থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
মৃত যুবকের বন্ধু তথা ঘটনার সাক্ষী মহম্মদ ফারুকের কথায়, “আমরা রাত দুটো নাগাদ সবজি কিনতে ভাঙড়ে আসছিলাম। সেইসময়ে বাসন্তী রাজ্য সড়কের বড়ালি ঘাটে ভাঙড় থানার পুলিশ আমাদের গাড়ি আটকায়। আমাদের থেকে ১৪ হাজার টাকা চায়। আমরা টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমাদের মারধর করা হয় এমনকী গ্রেফতার করার হুমকি দেওয়া হয়। আমরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। মহম্মদ পালাতে গিয়ে পচা খালে ঝাঁপ দেয়। তারপর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।” এরপর থানায় গিয়ে আলাউদ্দিনের কথা জিজ্ঞেস করায় পুলিশ গোটা ঘটনা অস্বীকার করে। জানিয়ে দেওয়া হয় মহম্মদ নিখোঁজ। এরপর, মঙ্গলবার সকালে খাল থেকে উদ্ধার হয় মহম্মদের দেহ। জলে ফুলে ওঠা সেই দেহ মিলতেই বুকফাটা আর্তনাদ ডোলা বিবির।
চোখের জলে ভাসতে ভাসতে বলেন, “ওই ছেলেটাই আমার রোজগেরে ছিল। ওর উপর কেন যে পুলিশের নজর পড়েছিল! পুলিশের তোলাবাজির জন্য় ওর প্রাণ টা গেল! ছেলেটাকে পুলিশ খেয়ে নিল। আমার ছেলেটা কি আর ফিরে আসব! কতই বা বয়স আর ওর! আমার কোল খালি হয়ে গেল।”
মৃতের মাসি আসমা বিবির কথায়, “পাঁচ দিন ধরে ছেলেটার কোনও খোঁজ নেই। পাগলের মতো সর্বত্র ঘুরে বেরিয়েছি। থানায় থানায় গিয়েছি। কোনও লাভ হয়নি। পুলিশ কোনও সহযোগিতা করেনি। পুলিশের তোলাবাজির জন্য ছেলেটা মরল। আমরা এর বিচার চাই। ” যদিও এ ব্যপারে কোন প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি ভাঙড় থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক রেজাউল কবীর। আরও পড়ুন: Video: হাসপাতালের সিঁড়িতে চাদর মুড়ি দিয়ে উদ্দাম যৌনতায় যুগল? ভাইরাল দু’মিনিটের ভিডিয়ো