North Dinajpur : আঁধারে ঢেকেছে স্বপ্ন, জ্যোতি ফিরে পেতে চান রায়গঞ্জের জ্যোতি
North Dinajpur : ২০১৩ সালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে মাথা ঘুরে পড়ে যান জ্যোতি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জ্ঞান ফিরতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। দুই চোখে নেমে আসে কালো অন্ধকার।
রায়গঞ্জ : পড়াশোনা করে পুলিশের চাকরি করার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু বছর নয়েক আগে হঠাৎ বদলে যায় সবকিছু। স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে চোখের জ্যোতি হারান জ্যোতি বাল্মীকি। রায়গঞ্জ শহরের কসবা চতুর্থ ব্যাটেলিয়নের অধীনস্থ আবাসনে মা, বোন ও মামার সঙ্গে থাকেন। পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে চিকিৎসা হয়নি। অন্ধ মেয়েকে নিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরোনো সংসারের হাল টানতে বেসামাল অবস্থা অসহায় মায়ের। দৃষ্টিহীন জ্যোতির শরীরে বাসা বেঁধেছে আরও একাধিক অসুখ। এখন ওই পরিবারের আবেদন, সরকার কিংবা অন্য কেউ তাদের পাশে দাঁড়াক। দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়ে ফের নিজের স্বপ্নপূরণ করতে চান বছর পঁচিশের জ্যোতি।
কসবা এলাকায় চতুর্থ ব্যাটেলিয়নের অধীনস্থ ওই আবাসনে অনেক বছর থেকে বসবাস করছেন রেখা বাল্মীকি। তিনি এই ক্যাম্পাসের অস্থায়ী সাফাইকর্মী। স্বামী পরিবার ছেড়ে চলে গিয়েছেন অনেক বছর আগে। দুই মেয়ে ও ভাইকে নিয়ে তাঁর সংসার। রেখাদেবীর বড় মেয়ের নাম জ্যোতি। ছোট থেকে পুলিশে চাকরি করার প্রবল ইচ্ছে ছিল জ্যোতির। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে হাজারো কষ্টের মধ্যেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎই ঘটে যায় ছন্দপতন। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে মাথা ঘুরে পড়ে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জ্ঞান ফিরতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। দুই চোখে নেমে আসে কালো অন্ধকার। জ্যোতি বুঝতে পারেন তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। ভেঙে চুরমার হয়ে যায় সব স্বপ্ন। এদিকে পরিবারের চরম আর্থিক অনটনের কারণে সঠিক চিকিৎসা হয়নি।
৯ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু অন্ধকার দূর হয়নি জ্যোতির জীবন থেকে। উল্টে আরও একাধিক জটিল রোগ বাসা বেঁধেছে তাঁর শরীরে। তবে এখনও চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন জ্যোতি। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য সাহায্যের আবেদন জানালেন। বলেন, “স্কুলে পড়ার সময় থেকে পুলিশের চাকরির স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু, আচমকা দু’চোখে অন্ধকার নেমে আসে। আমি দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেতে চাই।” চিকিৎসার জন্য টাকা চাই। কিন্তু, আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় চিকিৎসাও করাতে পারছেন না। দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেয়ে ফের পুলিশের চাকরি করতে চান জ্যোতি।
জ্যোতির মা রেখা বলেন, “৯ বছর আগে চিকিৎসকরা বলেছিলেন, ভাল চিকিৎসা করাতে। আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় সেভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। এখন মেয়ের কিডনি, হার্টের সমস্যা শুরু হয়েছে।” অতীতের কথা ভেবে মেয়ে প্রায়ই চোখের জল ফেলে। মা হিসেবে তা দেখে কষ্ট হয় রেখার। তিনি চান, মেয়ের চিকিৎসায় সরকার সাহায্য করুক।
রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি মানষ ঘোষ বললেন, ওই পরিবারের কথা তিনি শুনেছেন। সবরকমভাবে ওই পরিবারের পাশে থাকা এবং সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি।