WB Flood Situation: এক টানা বৃষ্টি! পুজোতে ভাসবে বাংলার এই জেলাগুলি

West Bengal Flood Situation: দূর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ১.৫ লক্ষেরও বেশি জল ছাড়া হয়েছে। এর ফলে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে আবারও নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

WB Flood Situation: এক টানা বৃষ্টি! পুজোতে ভাসবে বাংলার এই জেলাগুলি
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 01, 2021 | 7:09 AM

TV9 ব্যুরো: নিম্নচাপের এক টানা বৃষ্টি, দোসর ব্যারাজের জল ছাড়া। পুজোর মুখেই বন্যার আশঙ্কা হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায়। দূর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ১.৫ লক্ষেরও বেশি জল ছাড়া হয়েছে। এর ফলে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে আবারও নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার উদয়নারায়ণপুর বিডিও অফিসে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয়। এবং নদীবাঁধ পরিদর্শন করেন উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা । গত আগস্ট মাসে বন্যার ফলে নদীবাঁধ-সহ বেশিরভাগ জায়গা গুলি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পুনরায় বন্যার সম্মুখীন হলে, ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে উদয়নারায়ণপুরবাসী।

উদয়নারায়ণপুর, হাওড়া

এমনিতেই উদয়নারায়ণপুরের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত। নতুন করে দুর্যোগের কথা শুনেই মাথায় হাত চাষিদের। এদিন বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, “সদ্য বন্যা পরিস্থিতি থেকে উদয়নারায়ণপুরকে ঘুরে দাঁড় করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পুণরায় বিভিন্ন ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।” প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই মাইকিং শুরু হয়েছে।

আরামবাগ, হুগলি

গোঘাটের ভাদুরে দারকেশ্বর নদীর বাঁধ ভেঙেছে ইতিমধ্যেই। রাতে হু হু করে জল ঢোকে আরামবাগ শহরে। রাতে বিদ্যুত্হীন হয়ে পড়ে এলাকা। গোটা শহর অন্ধকার। দ্বারকেশ্বর নদীর জল গ্রামে হু হু করে ঢুকতে শুরু করে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। ত্রাণ শিবিরে যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। রাজ্য সড়কের ওপর দিয়েই বইতে থাকে ৬-৭ ফুট জলের স্রোত। রাতেই আরামবাগ শহরে ৩ কোম্পানি সেনা নামানো হয় উদ্ধার কার্যের জন্য।

বিপর্যয় বাড়ে আরও। খানাকুলের বন্দিপুরে দারকেশ্বরের নবনির্মিত বাঁধ ভেঙে এলাকায় হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। এরপর আরামবাগ পেরিয়ে তারকেশ্বরে রাজ্য সড়কের ওপর দিয়ে জল বইতে শুরু করে।

ঘাটাল, চন্দ্রকোণা

চন্দ্রকোনায় শিলাবতী নদীর জলে প্লাবিত ১ ও ২ নম্বর ব্লকের একাধিক গ্রাম। এমনকি শিলাবতী নদীর বাঁধ ভাঙ্গার আশঙ্খা একাধিক জাগায়- চন্দ্রকোনা থেকে আরামবাগ গামী রাজ্যসড়কের পলাশবাড়ি এলাকায় কোমরসমান জল। বন্ধ যান চলাচল।

চন্দ্রকোনার খামার বেড়া গ্রামে শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে নতুন করে প্লাবিত ১০ টি গ্রাম। কিছু দিন আগেই বন্যায় ওই এলাকায় শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছিল। দ্রুত সেই বাঁধ বাঁধার কাজ শুরু করেছিল সেচ দফতর। আবারও বাঁধ ভাঙ্গায় বিপাকে এলাকাবাসী।

ঘাটালের পরিস্থিতিও সঙ্কটজনক। ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও আবার জল বাড়তে শুরু করে। চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন ঘাটালের বানভাসি এলাকার মানুষ। গবাদি পশুদেরও খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। জলের মধ্যে তারাও সাঁতরে যাচ্ছে অন্যত্র খাবারের সন্ধানে। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে ডিঙি নৌকয় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের। পানীয় জলের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

বৃষ্টি কিছুটা ধরেছে তবে তবে চিন্তা বাড়াচ্ছে নদীর জলস্তর। আর ডিভিসি। সকালেই দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে ১,৮৬,১০০ কিউসেক জল। বেলায় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়ানো হয় । বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া হচ্ছে ২,৩১,২৪৮ কিউসেক জল। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর রাতে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়ানো হতে পারে।চলতি বছরের ১ অগস্ট দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া হয়েছিল ১,৫৫,৫৭৫ কিউসেক জল। এখনও পর্যন্ত এটাই সর্বাধিক ছিল। এরই মধ্যে ফের বৃষ্টি হলে দক্ষিণের একাধিক পুজোতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।

আরও পড়ুন: Asansol Flood: জলের তলায় জাতীয় সড়ক, বাড়ির মধ্যে ঢুকছে নর্দমার জল