USA Crime: ৫৬০টি মৃতদেহ কেটে বিক্রি করেছিল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, জঘন্য অবৈধ ব্যবসার জেরে কারাগারে মা-মেয়ে জুটি

Colorado funeral home owner sentenced to jail: অন্তত ৫৬০ জনের মৃতদেহ কেটে অঙ্গ বিক্রি করেছিল মা ও মেয়ে। খবর ফাঁস হওয়ার পর বিধ্বস্ত মৃতদের প্রিয়জনরা।

USA Crime: ৫৬০টি মৃতদেহ কেটে বিক্রি করেছিল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, জঘন্য অবৈধ ব্যবসার জেরে কারাগারে মা-মেয়ে জুটি
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 04, 2023 | 5:08 PM

ডেনভার: একই বাড়িতে চলছিল ‘ফিউনারেল হোম’, অর্থাৎ কবরের জন্য মৃতদেহ প্রস্তুত করার পরিষেবা এবং অঙ্গদানের একটি সংস্থা। আর এই সুযোগেই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বিনা অনুমতিতে একের পর এক দেহ ব্যবচ্ছেদ করে তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিক্রির চক্র চালাচ্ছিলেন মা ও মেয়ে জুটি। মঙ্গলবার তাদের দুজনকেই কারাদণ্ড দিয়েছে মার্কিন আদালত। ৪৬ বছরের মেগান হেস এবং তাঁর মা ৬৯ বছরের শার্লি কছ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো প্রদেশের মন্টরোস এলাকায় এই অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছিল। অন্তত ৫৬০ জনের মৃতদেহ কেটে, কাঁধ, হাঁটু, পায়ের মতো বিভিন্ন অঙ্গ বিক্রি করেছে তারা। মেগানকে এই অপরাধে মার্কিন আইনের সর্বোচ্চ সাজা ২০ বছরের কারাদণ্ড এবং তার মাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মন্টরোসে ‘সানসেট মেসা’ নামে একটি ফিউনারেল হোম চালাত তারা। ওই একই বাড়ি থেকে ‘ডোনার সার্ভিস’ নামে একটি অঙ্গদান কেন্দ্রও পরিচালিত হত। সেই অঙ্গদান কেন্দ্রই ছিল তাদের অবৈধ ব্যবসার মুখোশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিস্থাপনের জন্য হার্ট, কিডনি বা টেন্ডনের মতো অঙ্গ বিক্রি করা বেআইনি। এই অঙ্গগুলি একমাত্র দান করা যায়। কিন্তু মস্তক, হাত, পা, হাঁটু, মেরুদণ্ডের মতো শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করার বিষয়ে মার্কিন আইনে কোনও স্পষ্টতা নেই। এই সুযোগই নিয়েছিল হেস এবং কছ। গবেষণা বা শিক্ষার কাজে ব্যবহারের জন্য তারা তাদের ফিউনারেল হোমে আসা মৃতদেহগুলি থেকে এই অঙ্গগুলি, মৃতদের আত্মীয়দের অনুমতি ছাড়াই বিক্রি করত তারা। এই ভাবে অন্তত ৫৬০ জনের দেহ কেটে অঙ্গ বিক্রি করেছিল তারা।

মৃতদেহগুলি পোড়ানোর জন্য তারা ১০০০ মার্কিন ডলার করে নিত। যারা অঙ্গদানে রাজি হতেন, তাদের প্রিয়জনদের মৃতদেহ দাহ করা হল বিনামূল্যে। ২৬ জন ব্যক্তি আদালতে তাঁদের প্রিয়জনদের দেহাংশ খোয়ানোর ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন। ইরিন স্মিথ নামে এক মহিলা জানিয়ছেন, তাঁর মায়ের দেহ টুকরো টুকরো করেছিল মা-মেয়ে জুটি। তাঁর কাঁধ, হাঁটু, পা বিক্রি করা হয়েছিল। টিনা শ্যানন নামে আরেক মহিলাও প্রায় একইরকম বর্ণনা দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, এই অপরাধ এমন এক প্রকৃতির যে একে তাঁরা কী বলবেন, তাই বুঝে পাচ্ছেন না।

আদালতে শার্লি কছ তার অপরাধ স্বীকার করলেও, তার মেয়ে মেগান হেস চুপ করেই ছিলেন। মেগানের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছেন, মেগান মানসিকভাবে সুস্থ নয়। ১৮ বছর বয়সে সে মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত পেয়েছিল। তারপর থেকেই তার মধ্যে মানবিক গুণাবলীর অভাব দেখা গিয়েছিল। আদালত অবশ্য এই যুক্তি মানেনি।

মেগান হেস এবং শার্লি কছের কীর্তি ধরা পড়ে বেশ নাটকীয় ভাবে। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনি অঙ্গ বিক্রির চক্রের বিষয়ে একটি তদন্তমূলক ধারাবাহিক নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই সময়, সানসেট মেসার প্রাক্তন কর্মীরা মেগান ও শার্লির বেআইনি কার্যকলাপের বিষয়ে রয়টার্সের সাংবাদিকের কাছে মুখ খুলেছিলেন। ২০১৮ সালে সেই কাহিনি প্রকাশিত হয়েছিল। তারপরই মার্কিন ফেডেরাল তদন্তকারী সংস্থা এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছিল।