‘মেয়েদের মানুষ বলেই গণ্য করে না ওরা’, তালিবরাজে নিত্যদিন ঠিকানা বদলই ভরসা মহিলা সমাজকর্মীদের!

Afghan Women on Taliban Rule: ফতিমা ফারামার্জ নামক এক মহিলা সাংবাদিক জানান, বর্তমানে মহিলাদের পশুর মতোই গণ্য করা হচ্ছে এবং তালিবানিরা নিজেদের ইচ্ছে মতো তাদের সঙ্গে ব্যবহার করছে।

'মেয়েদের মানুষ বলেই গণ্য করে না ওরা', তালিবরাজে নিত্যদিন ঠিকানা বদলই ভরসা মহিলা সমাজকর্মীদের!
চরম খাদ্যসঙ্কটের মুখে আফগানবাসীরা। ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 16, 2021 | 7:33 AM

কাবুল: স্বাধীনতা তো দূরের কথা, একের পর এক তালিবানি ফতেয়ায় কেড়ে নিচ্ছে আফগান মহিলা(Afghan Women)-দের নায্য অধিকারটুকুও। সরকার গঠনের পর আরও কী কী অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে, তা নিয়েই উদ্বেগে সমাজকর্মীরা। এমনই এক মহিলা গবেষক তথা সমাজকর্মী হুমেইরা রিজ়াই তালিবানি দখলের পরই প্রাণের ভয়ে আফগানিস্তান (Afghanistan) ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন। তবে দেশের বাকি মহিলাদের জন্য আফশোস করছেন তিনি, কারণ তালিবানি শাসনে (Taliban Rules) তাদের জোর করে ফের অন্ধকারেই ঠেলে দেওয়া হবে।

দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসার পরও স্বস্তি পাননি হুমেইরা। তালিবানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি বলেন, “ওরা (তালিবান) মেয়েদের মানুষ বলেই গণ্য করে না। আগের তালিবানি শাসনে মহিলাদের প্রকাশ্যে মারধর ও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হত। ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল সমস্ত অধিকার। ২০০০ সালের পর থেকে নিজেদের পায়ে উঠে দাঁড়াতে আফগান মহিলাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। কিন্তু ফের একবার তালিবানরা এসে সেই অন্ধকারেই ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মহিলাদের।”

অপর এক সমাজকর্মী কারোখইলও জানান, ভয়ঙ্কর অবস্থা আফগানিস্তানে। তিনি জানান, ২০ বছর পর তালিবানরা ক্ষমতা দখলের পরই মহিলা সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদদের বাড়িতে হানা দিয়েছে তালিবান, তাদের হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে “হয় দেশ ছেড়ে পালাও, নাহলে মুখ বন্ধ রাখ”।

তিনি বলেন, “এখনও বহু আফগান সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদরা আফগানিস্তানে আটকে রয়েছেন। প্রায় নিত্যদিনই তাদের ঠিকানা বদল করতে হচ্ছে তালিবানের ভয়ে। সুরক্ষার জন্য নিজেদের কাছে যে অস্ত্র ছিল, তাও কেড়ে নিয়েছে তালিবানরা। যাতে পালাতে না পারেন, তারজন্য গাড়িগুলিও দখল করে নিয়েছে তারা। এভাবেই তারা মহিলাদের ভয় দেখাতে চাইছে, যাতে তালিবানের বিরুদ্ধে কেউ কথা না বলে।”

ফতিমা ফারামার্জ নামক এক মহিলা সাংবাদিক জানান, বর্তমানে মহিলাদের পশুর মতোই গণ্য করা হচ্ছে এবং তালিবানিরা নিজেদের ইচ্ছে মতো তাদের সঙ্গে ব্যবহার করছে। সম্প্রতিই মহিলাদের একটি মিছিলে তালিবানের মারধরের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ফতিমা বলেন, “আমরা ওই মিছিল ঘিরে সংবাদ সংগ্রহ করছিলাম। আচমকাই তালিবানরৈ হাজির হয় ও আন্দোলনকারীদের একটি থানায় নিয়ে যায়। সেখানে লাঠি, বিদ্যুতের তারসহ হাতের সামনে যা কিছু পেয়েছে, তা দিয়েই মারধর করে তালিবানিরা। আগামিদিনে মহিলাদের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, তা একেবারেই স্পষ্ট নয়।”

এর আগে ১৯৯৬ সালেও আফগানিস্তান দখল করেছিল তালিবান, সেই সময়ও শরিয়া আইনের দোহাই দিয়ে মহিলাদের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছিল তালিবানরা। ২০ বছর বাদেও সেই একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলেই মনে করছেন আফগান মহিলারা। এই পরিস্থিতির জন্য তালিবানের পাশাপাশি তাদের সমর্থক দেশ, পাকিস্তান, চিন ও রাশিয়াও দায়ী থাকবে বলেই জানান আফগান সমাজকর্মী। আফগানিস্তানে সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে মার্কিন বাহিনীর ভুল স্বীকার করে নেওয়া উচিত বলেও জানান তিনি।