Bangladesh: রাতের অন্ধকারে ৯ ঘণ্টা ধরে নদীতে সাঁতার, অলৌকিকভাবে প্রাণে বাঁচলেন গৃহবধূ

Bangladesh woman swims for 9 hours: রাতের অন্ধকারে চলন্ত লঞ্চ থেকে পড়ে গিয়েছিলেন নদীতে। ভেঙে গিয়েছিল পা। ওই অবস্থাতেই বাঁতার অদম্য শক্তিতে ৯ ঘণ্টা ধরে স্রোতের সঙ্গে লড়াই!

Bangladesh: রাতের অন্ধকারে ৯ ঘণ্টা ধরে নদীতে সাঁতার, অলৌকিকভাবে প্রাণে বাঁচলেন গৃহবধূ
একেক জায়গায় প্রায় ২০ কিমি চওড়া মেঘনা নদী (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 04, 2023 | 11:55 PM

ঢাকা: রাতের অন্ধকারে চলন্ত লঞ্চ থেকে পড়ে গিয়েছিলেন নদীতে। ভেঙে গিয়েছিল পা। ওই অবস্থাতেই ৯ ঘণ্টা ধরে স্রোতের সঙ্গে লড়াই! হ্যাঁ, প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ৯ ঘণ্টা ধরে নদীতে সাঁতার কেটে গিয়েছেন ৩৮ বছরের গৃহবধূ, জোহরা বেগম। সকালে, ওই গৃহবধূকে নদী থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলায়। বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ লঞ্চে করে ঢাকা যাওয়ার পথে মেঘনা নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন জোহরা। এদিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ তীরবর্তী এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন মৎস্যজীবীরা। পরে উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা পর ওই গৃহবধূকে তাঁর বাড়ির লোকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

জানা গিয়েছে, জোহরা বেগমের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। সেখানেই তাঁর স্বামী এবং সন্তানও থাকে। শরীয়তপুরের এক গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। সেখানে ইদ কাটিয়ে বুধবার রাতে লঞ্চে করে ঢাকায় ফিরছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তিনজনেই লঞ্চে উঠেছিলেন। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ লঞ্চটি ঠান্ডাবাজার এলাকায় পৌঁছেছিল। সেই সময় অসাবধানতাবশত জোহরা বেগম লঞ্চের দ্বিতীয় তলা থেকে নদীতে পড়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাঁর সন্ধান না পেয়ে, তাঁর স্বামী বাংলাদেশের জরুরি পরিষেবা নম্বরে ফোন করে দুর্ঘটনা কথা জানিয়েছিলেন। রাতেই পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা ওই গৃহবধূকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছিলেন। কিন্তু, জোহরাকে পাওয়া যায়নি।

আসলে, স্রোতের টানে তিনি ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে চলে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ একটি নৌকা থেকে মৎস্যজীবীরা জোহরা বেগমকে নদীর জলে ভাসতে দেখেন। তাঁরা তাঁকে তাঁদের নৌকায় তোলেন। খবর দেওয়া হয় কোস্টগার্ডকে। উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা এরপর তাঁকে নিয়ে যান গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জোহরা বেগম জানিয়েছেন, নদীতে পড়ে যাওয়ার পর প্রথমে তিনি তলিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁর মনে একটাই চিন্তা এসেছিল, তাঁকে যে করেই হোক বাঁচতে হবে। বাঁচার সেই প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে তিনি ভেসেছিলেন নদীতে। স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কেটে চেষ্টা করছিলেন তীরের দিকে যাওয়ার। কিন্তু রাতের অন্ধকারে, কোথায় ডাঙা সেটাই ঠাহর করতে পারছিলেন না। তাই শুধু জলে ভেসে ছিলেন। লঞ্চ থেকে পড়ে যাওয়ার সময়ই পায়ে আঘাত লেগেছিল। সেখানে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছিল। কিন্তু তা সহ্য করেই ৯ ঘণ্টা সাঁতার কেটে গিয়েছেন তিনি। তাঁর স্বামী জহিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, খোঁজাখুঁজি করে তাঁকে না পাওয়া যাওয়ায় তাঁরা ধরেই নিয়েছিলেন জোহরা আর জীবিত নেই। প্রাণে বাঁচলেও জোহরার বাঁ পায়ের হাঁটুর নীচে হাড় ভেঙে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।