পিছনে গুলির শব্দ, কোনওমতে প্রাণ বাঁচিয়ে ছুটছেন আফগান নাগরিকরা, ভয়াবহ পরিস্থিতি কাবুলে
অন্যান্য দেশের ভিসা নেওয়ার জন্য যেমন লম্বা লাইন পড়েছে, তেমনই ট্রেনের মতোই বিমানে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে।
কাবুল: যে যেদিকে পারছেন, উর্ধ্বশ্বাসে ছুটছেন। পিছন থেকে তখনও আসছে গুলির শব্দ। তালিবানদের দখলে চলে যাওয়ার পর এটাই বাস্তব চিত্র কাবুলের (Kabul)। রবিবার বিনা যুদ্ধেই আফগান সরকারের পতন হওয়ার পরই অন্ধকার তালিবান (Taliban) যুগ শুরুর আশঙ্কায় দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন বহু কাবুলবাসী। সোমবারও বিমাবন্দরে (Kabul Airport) দেখা যায় আফগান নাগরিকদের ঢল।
তালিবানের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ভয়ের কোনও কারণ নেই, কাবুলে রক্তপাত করবেন না তারা। শান্তিপূর্ণভাবেই সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কাউকে শহর ছেড়ে যেতে হবে না, সকলে বাড়িতেই থাকুন। যদিও রাত গড়াতেই বদলে যায় চিত্র। রাতের অন্ধকারে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে থেকে শহরের একাধিক প্রান্তে বোমাবাজির শব্দ শোনা যায়।
#Kabul: Another video emerges from this morning outside Kabul airport. Gunfire can be heard too. pic.twitter.com/elTB2mlpQ1
— Ahmer Khan (@ahmermkhan) August 16, 2021
তালিবানরা মুখে নারী শিক্ষা ও স্বাধীনতার কথা বললেও কান্দাহার, হেরাত শহর দখলের পরই বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাবালিকা মেয়েদের বিয়ের ও যৌনদাসী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। আঁটসাঁট পোশাক পরার অপরাধে প্রকাশ্যে এক মহিলাকে খুন করা হয়। অতীতের স্মৃতি মনে করেই তালিবানদের উপর ভরসা করতে পারছেন না আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষ। সোমবার সকাল হতেই পথে নামে সাধারণ মানুষ। সীমান্তগুলি তালিবানের দখলে থাকায় তাদের গন্তব্য কাবুল বিমানবন্দর। কিন্তু সেখানেও নিস্তার মেলেনি। তাদের পিছু নিয়েছে তালিবান মুজাহিদ্দিনও।
#Afghanistan: Total chaos and helplessness at Kabul airport this morning (August 16).pic.twitter.com/16nHRO0RCY
— Ahmer Khan (@ahmermkhan) August 16, 2021
বিভিন্ন দেশের তরফেই দূতাবাসের আধিকারিক ও কর্মীদের আফগানিস্তান থেকে ফিরিয়ে আনছে। সুরক্ষা দিতে বিমানবন্দর পাহারা দিচ্ছে মার্কিন সেনা। এ দিন সকালে কয়েক হাজার আফগান নাগরিক বিমানবন্দরে প্রবেশ করতেই তাদের পিছনে ঢুকে পড়ে মুজাহিদ্দিন জঙ্গীরাও। মার্কিন সেনারা তাদের আটকাতে শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায় বলে জানা গিয়েছে।
আপাতত কাবুল বিমানবন্দরের মাধ্যমেই বিশ্বের সঙ্গে এখনও সংযুক্ত আফগানিস্তান। একাধিক দেশের তরফে আফগান রিফিউজিদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়েছে। কানাডার তরফে জানানো হয়েছে, তারা ২০ হাজার আফগান নাগরিককে তাদের দেশে জায়গা দেবেন। শরনার্থীর ঢেউ ইরান, পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশের পাশাপাশি ইউরোপ-আমেরিকাতেও পৌঁছতে পারে। তবে একাধিক দেশের তরফে আপাতত কাবুলের সঙ্গে যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে, যার জেরে বিমান সঙ্কট দেখা গিয়েছে। অন্যান্য দেশের ভিসা নেওয়ার জন্য যেমন লম্বা লাইন পড়েছে, তেমনই ট্রেনের মতোই বিমানে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে। আরও পড়ুন: আফগান প্রশাসনের পতন হতেই টুইটে ঘানির সমালোচনা! ভারতকে কালিমালিপ্ত করতে নতুন ছক ‘শত্রু’র