তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল বাড়িগুলো! সাতসকালেই ভূমিকম্পে মৃত কমপক্ষে ২, জারি সতর্কতা

China Earthquake: বৃহস্পতিবার ভোরেই এই ভূমিকম্পেপ জেরে কমপক্ষে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন।

তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল বাড়িগুলো! সাতসকালেই ভূমিকম্পে মৃত কমপক্ষে ২, জারি সতর্কতা
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পেরু (প্রতীকী চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 16, 2021 | 11:13 AM

বেজিং: সবে সূর্যের আলো ফুটতে শুরু করেছে, এমন সময়ই কেঁপে উঠল বাড়িঘর। একের পর এক বাড়ি ভেঙে পড়তে শুরু করল তাসের ঘরের মতো। দক্ষিণ পশ্চিম চিন(China)-র সিচুয়ান প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্প(Earthquake)র জেরে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ এই ভূমিকম্প হয়, বিপর্যয়ের জেরে কমপক্ষে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন।

মার্কিন ভূতত্ত্ব বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৫.৪। যদিও চিনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টারের দাবি, ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৬.০। মাটি থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার নীচেই ছিল ভূমিকম্পের উৎসস্থল, সেই কারণে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন কোটি বাসিন্দার বসবাসস্থল লাক্সিয়ান কাউন্টিতে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল। লাক্সিয়ান কাউন্টির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের জেরে এখনও অবধি দুইজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন। এদের মধ্যে ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেই জানা গিয়েছে। প্রায় ২২টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।

একাধিক বাড়িতেও ফাটল ধরেছে, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন লাইনগুলিও ছিঁড়ে যাওয়ায় প্রায় ১০ হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেউই স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উদ্ধারকার্য শুরু করেছে। তবে আফটার শকের আশঙ্কায় বাসিন্দাদের অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।

সিচুয়ান প্রদেশের ভূমিকম্প দফতরের ডেপুটি চিফ দু বিন বলেন, “এই অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে আফটার শকের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। মনে করা হচ্ছে, আগামী কিছু সময় ধরেই এই অঞ্চলে আফটার শক অনুভব হতে পারে। এরজন্য বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যেসমস্ত বাড়ি অনেক পুরনো ও কাঠামোও ওত শক্তিশালী নয়, সেই বাড়িগুলির বাসিন্দাদের আপাতত অনত্র থাকতেই বলা হয়েছে।”

ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ভূমিকম্পের একাধিক ভিডিয়ো, যেখানে দেখা যাচ্ছে ঘরের ভিতরে টিভি, ফ্রিজ কাঁপছে, ছাদে লাগানো নানা অন্দরসজ্জা মাটিতে ভেঙে পড়ছে। দেওয়ালে ফাটল ধরতেই বাসিন্দারা বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। বাইরেও বহুতল বাড়ি থেকে ইট, সিমেন্টের চাঙড় খসে পড়তে দেখা যায়। একাধিক জায়গায় গাছ উপড়ে পড়তেও দেখা যায়।

সিচুয়ান সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, একাধিক বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রায় ৬২ হাজার বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। আফটার শকের আশঙ্কা থাকায় কর্মীদের সুরক্ষার কথা ভেবে আপাতত লাইন সারাইয়ের কাজও শুরু করা যাবে না।

২০০৮ সালেও চিনের সিচুয়ান প্রদেশেই ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল। রিখটার স্কেলে সেই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৭.৯।  ওই বিপর্যয়ে প্রায় ৮৭ হাজার মানুষের নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ও মৃত্যুর খবর মেলে। সেই সময় প্রশাসনকেই দোষারোপ করা হয়েছিল বিনা পরিকল্পনাতেই, খারাপ মানের সামগ্রী দিয়ে বাড়ি বানানোর জন্য।

আরও পড়ুন: ‘শত্রুদের ষড়যন্ত্রের জবাব দেওয়া হবে’, মৃত্যুর জল্পনা উড়িয়ে অবশেষে প্রকাশ্যে এলেন মোল্লা বরাদর