‘আমি থাকলে এই পরিস্থিতি তৈরিই হত না’, ‘ব্যর্থ’ সেনা প্রত্যাহারে বাইডেনের পদত্যাগের দাবি ট্রাম্পের
ট্রাম্পের দাবি, তিনি যদি ক্ষমতায় থাকতেন, তবে সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে হত, আফগানিস্তানের এই পরিস্থিতিও হত না এবং সফলভাবেই সেনা প্রত্যাহার হত।
ওয়াশিংটন: সেনা প্রত্য়াহারের ব্যর্থতা নিয়ে আগেই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) খোঁচা দিয়েছিলেন, এ বার বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন(Joe Biden)-র পদত্যাগও দাবি করলেন তিনি। আফগানিস্তান(Afghanistan)-র পরিস্থিতি নিয়ে আমেরিকাতেই যেন শুরু হয়েছে অন্তর্দ্বন্দ্ব।
৯/১১ হামলার পরই ন্যাটো বাহিনী কার্যত দখল নেয় আফগানিস্তানের। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় আফগান সেনাদের, জেলবন্দি করা হয় তালিবানদের। বিশ্বজুড়ে আল কায়েদার যে দাপট ছিল, তাও নিয়ন্ত্রণে আনে মার্কিন সেনা। প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার আগেই ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তালিবানদের সঙ্গে দোহায় চুক্তি করেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আফগানিস্তান থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে মার্কিন সেনা, তার বদলে আমেরিকায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বন্ধ রাখবে তারা।
এরই মাঝে নির্বাচনে হেরে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতায় বসেন জো বাইডেন। তবে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত না বদলে সেনা প্রত্যাহারের উপরই জোর দেন তিনি। জানান, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের আগেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সম্পূর্ণ রূপে প্রত্য়াহার করে নেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতি মতোই এপ্রিল মাস থেকে সেনা প্রত্য়াহার শুরু হয়।
কিন্তু ২০ বছর বাদে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হতেই ফের একবার আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে তালিবানরা। অনেকেই ভেবেছিলেন, পরিস্থিতি বিচার করে হয়তো সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখবেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। কিন্তু তিনি বলেন, “আফগান নেতাদের একজোট হতেই হবে। আফগান সেনার সংখ্যা তালিবানদের তুলনায় অনেক বেশি এবং তাদের নিজেদের ও দেশের জন্য লড়াই চালাতেই হবে।” সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তেও কোনও ভুল নেই বলেই জানান তিনি।
এরপরই সমালোচনায় সরব হন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবারই বাইডেনকে কটাক্ষ করে আমেরিকাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেছিলেন, “আমায় মিস করা শুরু করছেন কি?” এরপরই তিনি বলেন, “আফগানিস্তানে যে লজ্জাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য প্রেসি়ডেন্ট জো বাইডেনের উচিত পদত্যাগ করার।”
ট্রাম্পের দাবি, তিনি যদি ক্ষমতায় থাকতেন, তবে সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে হত, আফগানিস্তানের এই পরিস্থিতিও হত না এবং সফলভাবেই সেনা প্রত্যাহার হত। তিনি বলেন, “আফগানিস্তানে জো বাইডেন যা করল, তা অবিস্মরণীয়। আমেরিকার ইতিহাসে চরম ব্যর্থতা হিসাবে এই ঘটনাটি লেখা থাকবে।” এছাড়াও আমেরিকায় করোনা পরিস্থিতি, অর্থনীতি সহ নানা বিষয়েও বাইডেনের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি।
পাল্টা জবাবে বাইডেন প্রশাসনের তরফেও জানানো হয়েছে, দোহাতে সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি ট্রাম্প নিজেই করেছিলেন এবং অধিকাংশ আমেরিকাবাসীই চান আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক। আরও পড়ুন: দূতাবাস থেকে নামল মার্কিন পতাকা, আটকে পড়া বাসিন্দাদের ফেরাতে আরও সেনা পাঠাচ্ছে বাইডেন