Germany: এ যেন দ্বিতীয় ‘মিসেস চ্যাটার্জী বনাম নরওয়ের লড়াই’, আড়াই বছরের আরিহার হেফাজত অভিভাবককে দিল না জার্মানি
Child Custody: আরিহার অভিভাবকরা প্রথমে সন্তানের হেফাজত চাইলেও, পরে তাঁরা ইন্ডিয়ান ওয়েলফেয়ার সার্ভিসের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তবে আদালতের তরফে শিশুটির অধিকার অভিভাবক বা ইন্ডিয়ান ওয়েলফেয়ার সার্ভিসের হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করা হয়।
বার্লিন: এ যেন ‘মিসেস চ্যাটার্জী ভার্সেস নরওয়ে’-র দ্বিতীয় পর্ব। বিদেশের মাটিতে সন্তানের উপরে অধিকার হারালেন আরও এক ভারতীয় দম্পতি। জার্মানির বার্লিনের পাঙ্কোর একটি আদালতের তরফে ২৭ মাস বয়সী ভারতীয় শিশু আরিহা শাহের হেফাজত তাঁর মা-বাবার কাছে দিতে অস্বীকার করা হল। জার্মানির আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, জার্মানির ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার অফিসের হাতেই শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতিই মুক্তি পাওয়া রানি মুখোপ্যাধ্য়াায় অভিনীত ‘মিসেস চ্যাটার্জী ভার্সেস নরওয়ে’-তে তুলে ধরা হয়েছিল, নরওয়েতে বসবাসকারী এক বাঙালি দম্পতির সন্তানের অধিকার নিয়ে লড়াই। বাস্তব ঘটনার উপরে ভিত্তি করেই সিনেমা তৈরি হয়েছিল। এবার প্রায় সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হল জার্মানিতে। আরিহা শাহ নামক দুই বছর তিন মাসের এক শিশুর হোফাজত নিয়েই অভিভাবক বনাম জার্মানি সরকারের লড়াই শুরু হয়। শিশুটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন মেলাতেই অভিভাবকের বিরুদ্ধে শিশুটির অযত্ন করার অভিযোগ তোলা হয়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার কমিটির হেফাজতে ছিল শিশুটি।
শুক্রবার জার্মানির আদালতের তরফে আরিহার হেফাজত জার্মান প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আরিহার অভিভাবকরা দাবি করেছিলেন যে স্নান করাতে গিয়ে দুর্ঘটনাবশত আঘাত লেগেছিল। আদালতের তরফে সেই দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়। আদালতের রায়ের পর আরিহার মা-বাবা জানিয়েছেন, ভারত সরকারের উপরে তাঁদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তাঁদের সন্তানকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করবেন, এই বিষয়ে তাঁরা আত্মবিশ্বাসী। তাঁরা বলেন, “আজ থেকে আমরা আরিহার দায়িত্ব ১৪০ কোটি ভারতীয়ের হাতে তুলে দিলাম।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আরিহার অভিভাবকরা প্রথমে সন্তানের হেফাজত চাইলেও, পরে তাঁরা ইন্ডিয়ান ওয়েলফেয়ার সার্ভিসের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তবে আদালতের তরফে শিশুটির অধিকার অভিভাবক বা ইন্ডিয়ান ওয়েলফেয়ার সার্ভিসের হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করা হয়।
আদালতের তরফে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্নান করানোর সময় আরিহার মাথায় ও পিঠে আঘাত লেগেছিল বলে দাবি করা হয়। এরপরে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। আদালতের রিপোর্টে জানানো হয়, শিশুটির যাতে ভবিষ্যতে আর কোনও ক্ষতি না হয়, তার জন্য শিশুটির অধিকার অভিভাবকের হাতে দেওয়া হচ্ছে না। কীভাবে শিশুটির গোপনাঙ্গে আঘাত লেগেছে, সে সম্পর্কেও সঠিক তথ্য জানাতে পারেননি অভিভাবকরা, সে কথাও উল্লেখ করা হয় আদালতে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২ জুন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছিলেন, “আরিহা শাহ ভারতীয় নাগরিক এবং তাঁর নাগরিকত্ব, সামাজিক-সাংস্কৃতিক পটভূমি ও ভাষার অধিকারের ভিত্তিতে তাঁর ফস্টার কেয়ার কোথায় হবে, তা নির্ধারণ করা উচিত”। ১৯টি রাজনৈতিক দলের ৫৯ জন সাংসদও ভারতে জার্মানির প্রতিনিধি ডঃ ফিলিপ অ্যাকেরম্য়ানের কাছে আবেদন জানান যে আরিহার হেফাজতের দায়িত্ব যেন ভারতকে দেওয়া হয়।