Pakistan Economic Crisis: ৫০ বছরে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি পাকিস্তানে, ‘পেটে ভিজে গামছা’ দিয়েই রমজান মাস কাটছে নাগরিকদের

Pakistan Economic Crisis: ৫০ বছরে সর্বোচ্চ হয়েছে পাকিস্তানের মূল্যবৃদ্ধি। মার্চ মাসে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ৩৫.৩৭ শতাংশ।

Pakistan Economic Crisis: ৫০ বছরে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি পাকিস্তানে, ‘পেটে ভিজে গামছা’ দিয়েই রমজান মাস কাটছে নাগরিকদের
ছবি সৌজন্যে: AP
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 02, 2023 | 1:09 PM

ইসলামাবাদ: গলা ভর্তি ঋণে ডুবে পাকিস্তান (Pakistan)। বেনজির অর্থনৈতিক সঙ্কটে (Economic Crisis) টালমাটাল পরিস্থিতি সেদেশে। এক টুকরো রুটির জন্য সেখানে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় মানুষদের। একে পেটে ভিজে গামছা দিয়ে রাত ফুরোয় পাকিস্তানে। এর মধ্যেও পেটের জ্বালা মেটাতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে কিছু আধপেটা প্রাণ শেষ হয়ে যায়। এখন পাকিস্তানের বর্তমান ছবিটা এরকমই। এই প্রতিবেশী দেশে মার্চ মাসে পৌঁছেছে শিখরে মূল্যবৃদ্ধি। আর খাবারের খোঁজে গত দশদিনে সেখানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের।

শনিবার পাকিস্তানের পরিসংখ্যান ব্যুরোর তরফে মার্চ মাসের মূল্যবৃদ্ধির হিসেব প্রকাশ করা হয়েছে। সেই হিসেব অনুযায়ী, মার্চে মূল্যবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ৩৫.৩৭ শতাংশ। গত এক বছর ধরেই সেখানে ঊর্ধ্বমুখী মূল্যবৃদ্ধি। এবার ৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিল এই মার্চ মাসের মূল্যবৃদ্ধির হার। ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ৩১.৫ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছিল মূল্যবৃদ্ধি। তারপর মার্চর পরিসংখ্যান সেই পরিমাপকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তরফে জানানো হয়েছে, ১৯৭০ সাল থেকে পাকিস্তানের মূল্যবৃদ্ধি পরিসংখ্যান নথিবদ্ধ করা হচ্ছে। তখন থেকে এখনও পর্যন্ত এই মূল্যবৃদ্ধির পরিমাণই সর্বোচ্চ। ফেব্রুয়ারির হিসেব ধরে এগোলে মার্চে মাত্র এক মাসে ৩.৭২ শতাংশ বেড়েছে মূল্যবৃদ্ধির হার।

প্রসঙ্গত, গত এক বছর ধরেই আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ। এর উপর ভয়াবহ বন্যারও সম্মুখীন হয়েছে সেদেশ। তারপর দীর্ঘদিন ধরে চলা আর্থিক অব্যবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সেদেশের নাগরিকদের উপর। সেখানে সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে পেঁয়াজের দাম। গমের দাম বেড়েছে ১২০ শতাংশ। ময়দা কিনতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা সেখানকার নাগরিকদের। যেসব বাড়িতে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, সেখানে প্রবাদ আছে পেটে ভিজে গামছা দিয়েই রাত কেটে যায় তাঁদের। পাকিস্তানের নাগরিকদের অবস্থা অনেকটা সেরকমই।

ঋণের বোঝা কমাতে বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সাহায্য দরকার ইসলামাবাদের। বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার তলানিতে ঠেকেছে। এই আবহে শুরু হয়েছে মুসলিমদের পবিত্র মাস রমজান। আর এই পবিত্র মাস শুরু হওয়া থেকে এখনও পর্যন্ত খাবারের জন্য মোট ২০ জনের প্রাণ গিয়েছে। সম্প্রতি করাচির এক রেশন কেন্দ্রে খাবার নিতে গিয়ে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। পদপিষ্ট হয়ে মারা যান ১২ জন। এর মধ্যে ৩ জন শিশুও ছিলেন। এই আর্থিক দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের দিকে তাকিয়ে পাকিস্তান। তবে তাদের থেকে অর্থ সাহায্যের জন্য বেশ কিছু শর্ত পূরণও করতে হবে তাদের। তা নাহলে পাকিস্তানে খুব শিগগির দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।