Russia-Ukraine Conflict: গুঁড়িয়ে গিয়েছে রাস্তাঘাট, দখলে বিমানবন্দর! প্রথমদিনের আক্রমণে ‘সাফল্যে’র খতিয়ান দিল রাশিয়া
Russia-Ukraine Conflict: দিনের বেলায় রুশ হামলার চিত্র স্পষ্ট থাকলেও, রাত বাড়তেই উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ, লাগাতার সামরিক হামলার জেরে এমনিতেই ইউক্রেনের অধিকাংশ প্রদেশই অন্ধকারে ঢুবে গিয়েছে। এরমধ্যে রাতের অন্ধকারকে কাজে লাগিয়ে রাশিয়া আরও জোরাল আক্রমণ চালাচ্ছে বলে দাবি ইউক্রেনীয় সেনার।
মস্কো: তিন দিক থেকে ইউক্রেন(Ukraine)-র উপর হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া (Russia)। বৃহস্পতিবারই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) সামরিক অভিযান শুরু করার ঘোষণা করতেই ইউক্রেনের উপর মিসাইল বর্ষণ শুরু করে দেয় রুশ বাহিনী। অন্যদিকে, জলপথেও ইউক্রেনে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। ইতিমধ্যেই রুশ পদাতিক বাহিনী ইউক্রেনের ২৩টি প্রদেশে পৌছে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দিনের শেষে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হল, প্রথম দিনের অভিযান সফল হয়েছে। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম কোনও ইউরোপীয় দেশ এত বড় আক্রমণের মুখে পড়ল।
ইউক্রেনে প্রথম দিনের অভিযানকে সফল অ্যাখ্যা দিয়েই রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে প্রথম দিনের যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল, তা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। স্থলভাগে মোট যে ৮৩টি জায়গাকে নিশানা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, তা ধ্বংস করা গিয়েছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন পুলিশের তরফেও জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত অবধি রাশিয়া প্রায় ২০৩টি হামলা চালিয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
BREAKING: This is the current scene in Sumy, Ukraine
— Benny (@bennyjohnson) February 25, 2022
ইউক্রেনের উপরে হামলা সম্পর্কে রাশিয়া জানিয়েছে, ইউক্রেনের একাধিক নিশানাকে মিসাইল বর্ষণ করে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। কিয়েভেও একাধিক দিক থেকে রাশিয়ান সৈন্য ঢুকে পড়ছে বলে জানা গিয়েছে। উত্তর থেকে পূর্বে, রাশিয়া ও বেলারুসের সীমান্ত থেকে লাগাতার রুশ পদাতিক বাহিনী ঢুকছে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমে কৃষ্ণসাগর ও দক্ষিণ-পূর্বে আজ়ভ সাগরেও রাশিয়ান রণতরী থেকে লাগাতার মিসাইল ছোঁড়া হচ্ছে।
দিনের বেলায় রুশ হামলার চিত্র স্পষ্ট থাকলেও, রাত বাড়তেই উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ, লাগাতার সামরিক হামলার জেরে এমনিতেই ইউক্রেনের অধিকাংশ প্রদেশই অন্ধকারে ঢুবে গিয়েছে। এরমধ্যে রাতের অন্ধকারকে কাজে লাগিয়ে রাশিয়া আরও জোরাল আক্রমণ চালাচ্ছে বলে দাবি ইউক্রেনীয় সেনার। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সুমি ও খারকিভ অঞ্চলে। এছাড়াও দক্ষিণে খেরসন ও ওডেসাতেও লাগাতার গুলি ও মিসাইল বর্ষণের খবর মিলেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বম্ব শেল্টারে আশ্রয় নিয়ে কোনওমতে প্রাণে বেঁচেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অফিসে পরামর্শদাতা হিসাবে কর্মরত এক ব্যক্তির দাবি, রাশিয়ান বাহিনী চেরোনোবিল নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট দখল করে নিয়েছে। এছাড়াও কিয়েভের হোস্তোমেল বিমানবন্দরও রুশ সেনার হাতেই চলে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালেই ওখানে রুশ প্যারাট্রুপার বাহিনী নেমেছে বলে জানা গিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি ইউক্রেনের বাসিন্দাদের দেশের জন্য লড়াইয়ের অনুরোধ করেছেন। যারাই যুদ্ধ করতে চান, তাদের হাতেই অস্ত্র তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
সরকারের তরফে কোনও ঘোষণা না করেও, কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি। ওডেসায় মিসাইল হামলায় কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিয়েভের কাছেই অবস্থিত ব্রোভারি শহরেও কমপক্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেনে একটি সামরিক বিমান ভেঙে পড়েও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তবে হাত গুটিয়ে বসে নেই ইউক্রেন সেনাও। তাদের দাবি, প্রথম দিনেই খারকিভের কাছে চারটি রাশিয়ান ট্যাঙ্কার ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। লুহানস্ক প্রদেশের কাছে ইউক্রেন সেনার গুলিতে কমপক্ষে ৫০ জন রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে রাশিয়ার তরফে তাদের কোনও বিমান বা ট্যাঙ্কার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার দাবি অস্বীকার করা হয়েছে। রাশিয়ার সমর্থনপ্রাপ্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিদেরও দাবি, তারা গুলি চালিয়ে দুটি ইউক্রেনীয় বিমানকে অবতরণ করিয়েছে।
আরও পড়ুন: Russia Ukraine War : ইউক্রেনের পাশেই ব্রিটেন, অস্ত্র পাঠানোর আশ্বাস বরিসের