Sri Lanka: নির্বাচন করার মতোও টাকা নেই, শ্রীলঙ্কা আছে সেই তিমিরেই
Sri Lanka Economy: অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে সরকার এখন ঋণ পুনর্গঠন করার দিকে মনোনিবেশ করতে চায়। তাই এই বছর নির্বাচন হবে না। জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কা মন্ত্রিসভার মুখপাত্র।
কলম্বো: গত বছরের জুলাইয়ে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছিল শ্রীলঙ্কার সাংসদরা। তারপর থেকে প্রায় ১ বছর কেটে গিয়েছে। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে। অবস্থা এমনই, যে নির্বাচন করার মতোও অবস্থায় নেই। আগেই স্থানীয় পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল। এখন, শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার মুখপাত্র বন্দুলা গুনাওয়ার্দেনা জানিয়ে দিলেন শ্রীলঙ্কায় এই বছর আগাম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। বুধবার (১৪ জুন) তিনি জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে সরকার এখন ঋণ পুনর্গঠন করার দিকে মনোনিবেশ করতে চায়। তাই এই বছর আগাম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে না। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে যাবতীয় জল্পনা অস্বীকার করে গুনওয়ার্দেনা বলেছেন, “রাজ্যের আর্থিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় এই বছর কোনও নির্বাচন করা সম্ভব নয়।”
২০২২-এর এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে শ্রীলঙ্কা সরকার নিজেদের দেউলিয়া বলে ঘোষণা করেছিল। ৫১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে ব্যর্থ হয়েছিল তারা। বৈদেশিক মুদ্রার ব্যাপক ঘাটতির কারণে, সেই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যাপক অভাব দেখা দেয়। যা থেকে সূত্রপাত হয়েছিল তীব্র গণবিক্ষোভের। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে কয়েক মাস ধরে সেই বিক্ষোভ চলে। যার ফলে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয় এবং তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। শেষ পর্যন্ত গত জুলাই মাসে, শ্রীলঙ্কার সংসদ রাজাপক্ষর মেয়াদের বাকি অংশের জন্য রনিল বিক্রমাসিংহেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছিল। রাজাপক্ষর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪-এর নভেম্বরে। তবে, বিক্রমাসিংহে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি নন বলে, শোনা যাচ্ছিল সরকার এই বছরই আগাম নির্বাচন করতে পারে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ (IMF) অবশ্য শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে। তবে, তার জন্য শ্রীলঙ্কাকে আগে তাদের ঋণ পুনর্গঠন করতে হবে বলে শর্ত দিয়েছে আইএমএফ। বকেয়া ঋণ পুনর্গঠনের জন্য শ্রীলঙ্কাকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে আইএমএফ। বন্দুলা গুনাওয়ার্দেনা বলেছেন, “বিদ্যমান ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত আমরা আর ঋণ নিতে পারব না। ”
এর আগে, নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য কোষাগারে যথেষ্ট অর্থ নেই বলে, স্থানীয় পরিষদ নির্বাচন স্থগিত রেখেছিল শ্রীলঙ্কা সরকার। যার জন্য বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন রাষ্ট্রপতি বিক্রমাসিংহে। ৯ মার্চ শ্রীলঙ্কার ৩৪০টি স্থানীয় পরিষদের নির্বাচন হওয়ার খতা ছিল। কিন্তু সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য তা স্থগিত রেখেছে। বিরোধীর দাবি, আসলে হেরে যাওয়ার ভয়েই নির্বাচন স্থগিত রেখেছেন বিক্রমাসিংহে। এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য তারা দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদনও করেছে।