মাদ্রাসায় উড়ছে তালিবানি পতাকা, শিশুরা গাইছে ‘সালাম তালিবান’! মুখে কুলুপ প্রধানমন্ত্রীর
ইসলামাবাদের ডেপুটি কমিশনার হামজ়া শাফাকত বলেন, "এই ধরনের পতাকা উত্তোলনের কোনও অনুমতি নেই। বিষয়টি জানতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে পতাকা নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।"
ইসলামাবাদ: তালিবানরা আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পরই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছিলেন, “দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেল আফগানিস্তান”। এ বার তার দেশেই উড়ল তালিবানের পতাকা। শুক্রবার পাকিস্তানের ইসলামাবাদেই একটি মাদ্রাসায় উড়তে দেখা গেল তালিবানের পতাকা। মাদ্রাসার পড়ুয়া গাইল “সালাম তালিবান”।
পাকিস্তান ডেইলি নামক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ইসলামাবাদের কেন্দ্রস্থলেই অবস্থিত মেয়েদের মাদ্রাসা, জামিয়া হাফসার ছাদে শুক্রবার তালিবানি পতাকা উত্তোলন করা হয়। শিশুদেরও তালিবানের পতাকা হাতে নিয়ে “সালাম তালিবান” বলতে শোনা যায়। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই ছবি।
Lal Masjid-linked Jaamia Hafsa in Islamabad organized an event to celebrate Taliban takeover of Afghanistan. pic.twitter.com/jJzligM8jF
— Roohan Ahmed (@Roohan_Ahmed) August 21, 2021
লাল মসজিদের সঙ্গে সংযুক্ত ওই মাদ্রাসায় তালিবানদের পতাকা ওড়া প্রসঙ্গে মসজিদের মুখপাত্র হাফিজ এহেতেশাম জানান, জামিয়া হাফসায় ইসলামিক এমিরেটস অব আফগানিস্তান (তালিবানদের স্থির করা আফগানিস্তানের নতুন নাম) উড়তে দেখা গিয়েছে। মৌলানা আব্দুল আজিজ লাল মসজিদে শরিয়া জারি এবং ফতেহ মুবারক অনুষ্ঠানের আয়োজন করার কথাও ঘোষণা করেছেন।
The students of Jaamia Hafsa, a seminary linked with Islamabad's Lal Masjid, are singing a song "Salam Taliban" in an event celebrating the Taliban takeover of Afghanistan. pic.twitter.com/EeOtStWl0w
— Roohan Ahmed (@Roohan_Ahmed) August 21, 2021
যদিও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে খবর যেতেই ইসলামাবাদের ডেপুটি কমিশনার হামজ়া শাফাকত বলেন, “এই ধরনের পতাকা উত্তোলনের কোনও অনুমতি নেই। বিষয়টি জানতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে পতাকা নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
২০০৭ সালে পাকিস্তান সরকারেরস সঙ্গে ইসলামিক ধর্মাবলম্বীদের যে বিরোধ বাধে, তার কেন্দ্র বিন্দু ছিল এই লাল মসজিদ। এরপর থেকেই পুলিশের কড়া নজরদারি চলে এই মসজিদের উপর। সেই সময় সরকারের তরফে লাল মসজিদ দখল নিয়ে মৌলানা আব্দুল আজিজকে গ্রেফতার করা হলেও ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। শুক্রবার তিনিই ওই মাদ্রাসায় শরিয়া আইন জারি করার কথা ঘোষণা করেন।
আফগানিস্তান দখলে তালিবানদের মদত দিয়েছে পাকিস্তান, এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসা হলেও তালিবানের দখলে কাবুল চলে যাওয়ার পরই সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছিলেন, “এতদিন ধরে দাসত্বের শিকল পরে ছিল আফগানিস্তান। তালিবানি শাসনে সেই শিকলই ভেঙেছে আফগানিস্তানে।”
তালিবান যখন একের পর এক শহর দখল করছিল, সেই সময়ই আফগান প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানির পদত্যাগ দাবি করেছিলেন ইমরান। তিনি বলেছিলেন, “আমি তালিবানদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওরা জানিয়েছে, যতদিন আসরাফ ঘানি আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট থাকবেন, ততদিন সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনায় বসবে না তালিবান।”
তালিবানকে পূর্ণ সমর্থন জানালেও নিজের দেশেই তালিবানি পতাকা ওড়া প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি পাক প্রধানমন্ত্রী। আরও পড়ুন: তালিবানের রক্তচক্ষু থেকে মুক্তি, কাবুল থেকে দেশে ফিরল ১৬৮ জন, ঠাঁই পেল ২৪ আফগানও