গোটা দেশে যদি ছড়ায় প্রতিরোধের আঁচ! তড়িঘড়ি পঞ্জশীর দখলে শতাধিক সেনা পাঠাল তালিবান

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল অবধি আফগানিস্তান ছিল তালিবানের হাতে।সেই সময়ও এই নর্দার্ন অ্যালায়েন্স কখনই পঞ্জশীরে ঢুকতে দেয়নি তালিবানকে।

গোটা দেশে যদি ছড়ায় প্রতিরোধের আঁচ! তড়িঘড়ি পঞ্জশীর দখলে শতাধিক সেনা পাঠাল তালিবান
কাবুলের পথে তালিবানরা। ছবি : পিটিআই
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 23, 2021 | 8:30 AM

কাবুল: গোটা দেশ দখল করতে পারলেও পঞ্জশীরে (Panjshir) থাবা বসাতে পারেনি তালিবান (Taliban)। উল্টে আশেপাশের তিন এলাকার নিয়ন্ত্রণও হারাতে হয়েছে সম্প্রতি। সাধারণের মুখে মুখে পঞ্জশীরের সাহসিকতার প্রশংসা শুরু হতেই এই পার্বত্য উপত্যকা দখলে শতাধিক সৈন্য পাঠাল তালিবান।

রবিবারই তালিবানের তরফে টুইট করে বলা হয়, “ইসলামিক এমিরেটসয়ের শতাধিক মুজাহিদ্দিন পঞ্জশীরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে সেই জায়গা দখল করে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হলেও স্থানীয় আধিকারিকরা সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন। সেই কারণেই এই পদক্ষেপ।”

তালিবানের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানবাসীর জন্য নতুন সরকার গঠনের কাজ চলছে। তবে প্রয়োেজনে লড়াই করবে তালিবান। যদি পঞ্জশীরে তালিবান প্রতিরোধ বজায় থাকে, তবে শান্তির পথ আর অনুসরণ করা হবে না। আফগানিস্তানকে রক্ষা করতে তারা প্রস্তুত এবং এই সংঘর্ষে রক্তবন্যা বইতে পারে,সেই বিষয়েও সতর্ক করা হচ্ছে।

৯৬-র দশকের মতোই এ বারও কাবুলের উত্তরে পঞ্জশীর উপত্যকার দখল নিতে পারেনি তালিবান। সেখানে গড়ে উঠেছে তালিবান প্রতিরোধ শক্তি, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রয়াত আফগান রাজনীতিক আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ। তাঁর নেতৃত্বেই নর্দান অ্যালায়েন্সে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে আফগানদের। আফগান সেনার যে সকল সদস্যরা কোনওমতে তালিবানদের হাত থেকে পালিয়ে বেঁচেছেন, তাঁরা একে একে পৌঁছচ্ছে পঞ্জশীরে। আহমেদ মাসুদ সেখান থেকেই দেশ স্বাধীন করার ডাক দিয়েছেন। সেখানে ইতিমধ্যেই ৯ হাজার সেনা প্রস্তুত করা হয়েছে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য।

আফগানিস্তানের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহও আশ্রয় নিয়েছেন পঞ্জশীরে, এমনটাই সূত্রের দাবি। ইতিমধ্যেই  তিনি দেশবাসী ও তালিবানদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে বলেছেন তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। ঘানি সরকারের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদিও গতকাল জানিয়েছেন, পঞ্জশীর তালিবানদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল অবধি আফগানিস্তান ছিল তালিবানের হাতে।সেই সময়ও এই নর্দার্ন অ্যালায়েন্স কখনই পঞ্জশীরে ঢুকতে দেয়নি তালিবানকে। ১৯৯৬ সালেই আনুষ্ঠানিকভাবে তৈরি করা হয় এই বাহিনী। তালিবানকে রুখতে এই বাহিনী তৈরিতে সাহায্য করে ইরান, ভারত, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তানের মতো দেশও। কেবল এই বাহিনীর প্রতিরোধের জন্য গোটা দেশে রাজত্ব চালালেও পঞ্জশীর তালিবানদের হাতে আসেনি।
গত শুক্রবারই পঞ্জশীরের কাছেই অবস্থিত পোল-ই-হেসার জেলার দখল নেয় সাধারণ মানুষ। তালিবানদের পতাকা সরিয়ে আফগানিস্তানের পতাকা লাগানো হয় আবার। দেহ সালাহ ও বানু জেলাও তালিবানদের হাত থেকে পুনরুদ্ধার করে নেন বাসিন্দা। সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন তালিবানি আহত বা নিহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আরও পড়ুন: ‘খুব শিগগিরিই নতুন সরকারের ঘোষণা করব’, প্রস্তুতি পর্ব কেমন এগোচ্ছে জানাল তালিবান মুখপাত্র