Egypt: পচে নষ্ট গাজার জন্য আসা শয়ে শয়ে টন সাহায্য়, ইজরায়েলকেই দুষল মিশর
Israel Gaza attack: গাজায় সহায়তা বিতরণে এবং আটকে পড়া বিদেশীদের সেখান থেকে সরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে না ইজরায়েল। যার ফলে, কয়েকশো টনের সহায়তা আটকে রয়েছে মিশরে। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাফাহ ক্রসিং আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ রাখা হয়নি। কিন্তু, ইজরায়েলি বিমানবাহিনী লাগাতার বোমা বর্ষণ, সীমান্ত ক্রসিংটি কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে।
কায়রো: গাজা ভূখণ্ডে স্থলপথে হানা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইজরায়েল। তার আগেই অবশ্য ২০ লক্ষের বেশি প্যালেস্টিনীয় নাগরিকদের এই অঞ্চলটিতে সম্পূর্ণ অবরোধ জারি করেছিল তেল আবিব। জল, খাবার, জ্বালানি, বিদ্যুৎ সব বন্ধ করে দিয়েছে ইজরায়েল। গাজা ভূখণ্ড, ‘নরকে’ পরিণত হতে চলেছে বলে সতর্ক করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এই অবস্থায়, বিভিন্ন দেশ ও মানবিক সংগঠনগুলি দাঁড়িয়েছে গাজাবাসীর পাশে। গাজার জন্য সহায়তা পাঠিয়েছে। কিন্তু, সেই সহায়তাও গাজা ভুখণ্ডে পৌঁছে দিতে বাধা দিচ্ছে ইজরায়েল, এমনই গুরুতর অভিযোগ করল মিশর। গাজার উত্তর এবং পূর্ব দিকে রয়েছে ইজরায়েলি প্রাচীর, দক্ষিণে প্রাচীর দিয়েছে মিশর। পশ্চিমে রয়েছে ভূমধ্যসাগর। এই অবস্থায় গাজায় ঢোকা বা বের হওয়ার মাত্র তিনটি সীমান্ত ক্রসিং রয়েছে। এরমধ্যে দুটি রয়েছে সম্পূর্ণভাবে ইজরায়েলি দখলে। সেই দিক দিয়ে গাজায় সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার উপায় নেই। একমাত্র দক্ষিণে, মিশরের নিয়ন্ত্রণে থাকা রাফাহ সীমান্তই ভরসা। কিন্তু, মিশর সরকারের অভিযোগ, সেই দিক দিয়েও সহায়তা নিয়ে যেতে বাধা দিচ্ছে ইজরায়েলি বিমান বাহিনী।
সোমবার (১৬ অক্টোবর), মিশরের বিদেশমন্ত্রী সামেহ শউকরি জানিয়েছেন, গাজায় সহায়তা বিতরণে এবং আটকে পড়া বিদেশীদের সেখান থেকে সরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে না ইজরায়েল। যার ফলে, কয়েকশো টনের সহায়তা আটকে রয়েছে মিশরে। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাফাহ ক্রসিং আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ রাখা হয়নি। অবরুদ্ধ গাজায় সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই সীমান্ত ক্রসিংটি খোলা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আহত প্যালেস্টিনীয় নাগরিকদের চিকিৎসার জন্যও তাদের বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়াটা দরকারি। কিন্তু, রাফাহতেও ইজরায়েলি বিমানবাহিনী লাগাতার বোমা বর্ষণ করে, সীমান্ত ক্রসিংটি কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে। সামেহ শউকরি বলেন, “গাজায় প্যালেস্টিনীয় অসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ কমানো জরুরি প্রয়োজন। কিন্তু, ইজরায়েলের সঙ্গে আলোচনায় কোনও ফল পাওয়া যায়নি। এখনও পর্যন্ত গাজায় সহায়তা নিয়ে যাওয়া এবং তৃতীয় দেশের নাগরিকদের সেখান থেকে প্রস্থানের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে কোনও স্পষ্ট অবস্থান নেয়নি ইজরায়েলি সরকার।”
হামাস জঙ্গিদের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইজরায়েলে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তীব্র বোমাবর্ষণ ও অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল। এর ফলে ২০ লক্ষেরও বেশি গাজাবাসীর প্রাণ সংশয় তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে মিশরীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল, রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় সাহায্য পৌঁছে দিতে সোমবার সকালে দক্ষিণ গাজায় কয়েক ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইজরায়েল। কিন্তু, পরে ইজরায়েলের পক্ষ থেকে সরাসরি এই খবর অস্বীকার করা হয়েছে। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে, গাজা থেকে বিদেশিদের বের করে দেওয়ার বিনিময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা প্রদানের কোনও সম্ভাবনা নেই।” তবে, রাফাহ থেকে রয়টার্সের এক সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সকালে সেখানে কোনও বোমা হামলা হয়নি।
তারপরও, বিভিন্ন এনজিও এবং বিভিন্ন দেশের পাঠানো শয়ে শয়ে টন সাহায্য পড়ে রয়েছে নিকটবর্তী মিশরীয় শহর আল-আরিশে। গাজায় প্রবেশের অনুমতির অপেক্ষায় দীর্ঘ লাইন পড়ে গিয়েছে ট্রাকের। তার মধ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের পতাকা লাগানো জ্বালানি ট্রাকগুলিও রয়েছে।