AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘ঘরে’ ফিরছে মেসোপটেমিয়া সভ্যতার নির্দশন, ১৮ বছর পর লুঠ হওয়া প্রত্ন সামগ্রী ফেরাচ্ছে আমেরিকা

ইরাকি আধিকারিকদের মতে, ২০০৩ সালে যুদ্ধের সময় দেশ থেকে প্রায় ১৭ হাজার প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী উধাও হয়ে যায়। লুঠ হয়ে যাওয়া এই প্রত্ন সামগ্রীর একটা বড় অংশই পাচার হয়ে যায় আমেরিকায়।

'ঘরে' ফিরছে মেসোপটেমিয়া সভ্যতার নির্দশন, ১৮ বছর পর লুঠ হওয়া প্রত্ন সামগ্রী ফেরাচ্ছে আমেরিকা
ফিরিয়ে দেওয়া হবে এই ট্যাবলেট ও মূর্তিও।
| Edited By: | Updated on: Aug 05, 2021 | 3:39 PM
Share

ইরাক: ১৮ বছর বাদে দেশে ফিরতে চলেছে লুঠ হয়ে যাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী। ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের সময় লুঠ হয়েছিল অসংখ্য প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী (Ancient Artifacts), অবশেষে তা ফেরত দিতে রাজি হয়েছে আমেরিকা। ফেরত দেওয়া এই তালিকায় সুমেরীয় মহাকাব্য গিলগামিশ(Gilgamesh)-র একটি সাড়ে তিন হাজার বছর পুরনো ট্যাবলেটও রয়েছে।

সময়টা ২০০৩ সাল। পশ্চিম এশিয়া জুড়ে যে আগুন জ্বলছিল, তার উত্তাপ বিশ্বজুড়েও পৌঁছেছিল। ইরাকে সাদ্দাম হুসেনের রাজত্বের অবসান ঘটাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে আমেরিকা। সাদ্দামকে ফাঁসি দিয়ে অবশেষে যুদ্ধ শেষ হল। শেষ হল ইরাকের এক অধ্যায়। কিন্তু সেই সঙ্গেই হারিয়ে গেল প্রাচীন আসিরিও, সুমেরীয় এবং ব্যাবিলনীয় সভ্যতার একাধিক নির্দশন।

১৯৯১ সালের গাল্ফ যুদ্ধের পর থেকেই দক্ষিণ ইরাকের নিয়ন্ত্রণ হারায় ইরাক সরকার। শুরু হয় সেই অংশে লুঠতরাজ। এরপর ২০০৩ সালে আমেরিকার সেনা অভ্যুত্থানে দেশের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে যায়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইরাকে তখন চলছিল চূড়ান্ত অরাজকতা। মিউজিয়াম, কিউরিওর দোকানের অবাধে লুটতরাজ চলছে। ইরাকি আধিকারিকদের মতে, ২০০৩ সালে যুদ্ধের সময় দেশ থেকে প্রায় ১৭ হাজার প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী উধাও হয়ে যায়। লুঠ হয়ে যাওয়া এই প্রত্ন সামগ্রীর একটা বড় অংশই পাচার হয়ে যায় আমেরিকায়। প্রায় ১২ হাজার প্রত্ন সামগ্রীই ওয়াশিংটনের বাইবেল মিউজিয়ামে রাখা ছিল, কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ছিল ৫ হাজার ৩৮১টি ঐতিহাসিক সামগ্রী। এছাড়াও ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে আইসিস জঙ্গিরাও বহু প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল যেমন দখল করে নেয়, তেমনই প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশনগুলি পাচার ও ধ্বংস করে দেয়।

অবশেষে সেই লুঠ হওয়া অমূল্য সামগ্রীগুলি ফিরিয়ে দিতে সম্মত হয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ওয়াশিংটন ও বাগদাদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গত সপ্তাহেই। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাদিমি বিমানে করে কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন ফিরিয়ে এনেছেন বলেও জানা গিয়েছে।

আমেরিকার তরফে যে সামগ্রীগুলি ফেরত দেওয়া হবে, সেই তালিকায় একাধিক প্রাচীন মেসোপটিমিয়ান সভ্যতার নিদর্শন রয়েছে । তার মধ্যে অন্যতম সাড়ে তিন হাজার বছর পুরনো গিলগামিশ মহাকাব্যের অংশ একটি পোড়ামাটির ট্যাবলেট। সুমেরীয় এই মহাকাব্যটিকে বিশ্ব সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন বলে মনে করা হয়। মেসোপটেমিয়া, যা বর্তমানে ইরাক নামে পরিচিত, তার স্থাপন থেকে জীবনযাত্রার নানা তথ্য় খোদাই করা রয়েছে এই ট্যাবলেটে। ২০১৯ সালে ওকলাহোমার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ওই ট্যাবলেটটি উদ্ধার করে মার্কিন প্রশাসন। ওয়াশিংটনের মিউজিয়ামে বেশ কিছুদিন গিলগামিশ ট্যাবলেট প্রদর্শনও করা হয়। এই  ট্যাবলেটটি ছাড়াও কিউনিফর্ম লিপিতে লেখা আরও বেশ কয়েকটি ট্যাবলেটও ফেরত দিচ্ছে আমেরিকা।

ইরাকের সংস্কৃতি মন্ত্রীর আশা, আগামী মাসের মধ্যেই গিলগামিশের ট্যাবলেটটি ফেরত পেতে চলেছে ইরাক। শুধু মার্কিন অভিযানের সময়ই নয়। পরে আইসিসের তাণ্ডবেও ইরাকের বহু প্রত্ন সামগ্রী লুট বা ধ্বংস হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, এখনও লুট হওয়া অসংখ্য প্রাচীন সামগ্রীর কোনও খোঁজ নেই। তবে ফেরত দেওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রীগুলি শুধু  বহুমূল্যই নয়, এরসঙ্গে ইরাকবাসীদের শিকড়, ঐতিহ্য জড়িয়ে রয়েছে। আরও পড়ুন: করোনার নয়া প্রজাতি রুখতে বুস্টার ভ্যাকসিনের পরিকল্পনা বিভিন্ন দেশের, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে…