Bangladesh, Dhaka Stock Exchange: মৌলবাদ থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা, গত এক বছর ধরেই হুড়মুড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের বাজার
Bangladesh Stock Exchange: বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নেই। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য হাহাকার করছে তারা। এই পরিস্থিতিতে সেখানে ক্রমশ মাথা তুলছে মৌলবাদ। আক্রমণ ধেয়ে আসছে সংখ্যালঘুদের উপর। আর ক্রমশই নামছে সে দেশের বাজার।
বাংলাদেশে একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে সেই অগস্ট থেকে। ৫ অগস্ট দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। বলা হয়, তারপরই সে দেশের ক্ষমতা দখল করে দেশের ছাত্র-জনতা এবং তৈরি হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আর সেই সরকারের প্রধান হওয়ার জন্য বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল জয়ী মহম্মদ ইউনূসকে ফ্রান্স থেকে ডেকে নিয়ে আসা হয়। ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর জেল থেকে একে একে মুক্তি দেওয়া হয় বিভিন্ন অপরাধে শাস্তিপ্রাপ্ত অপরাধী ও বিচারাধীন বন্দিদের। শান্তিতে নোবেলজয়ীর জমানায় ধীরে ধীরে জঙ্গিদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ গোটা পৃথিবীর কাছে বস্ত্রবয়ন শিল্পের হাব হিসাবে পরিচিত। সেখানে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি তাদের উৎপাদন ফেসিলিটি বানিয়েছে বা অনেক কোম্পানি বাংলাদেশের কোনও স্থানীয় কোম্পানিকে দিয়ে নিজেদের পণ্য তৈরি করায়। গার্মানি, আমেরিকা, ইউনাইটেড কিংডম, স্পেন, পোল্যান্ড, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইটালির মতো দেশ বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদাবি করে। কিন্তু অগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকেই সে দেশ থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে ফেলেছে বেশ কিছু বয়ন সংস্থা। আর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই সংখ্যাটা ভবিষ্যতে আরও অনেক বাড়তে পারে।
বাংলাদেশের এই ‘অগস্ট বিপ্লবে’র প্রভাব শুধুমাত্র বয়নশিল্পেই আটকে নেই। অক্টোবর মাসেই সে দেশের মূল্যবৃদ্ধি পৌঁছে গিয়েছিল ১০.৮৭ শতাংশে। আর খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২.৬৬ শতাংশে। ফলে, হুহু করে বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিসের দাম। আর এই রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সাম্প্রদায়িকতা বৃদ্ধির সঙ্গে সেদেশে পাল্লা দিয়ে নেমেছে শেয়ার বাজারের ইনডেক্স। বাংলাদেশে সেভাবে কোনও মধ্যবিত্ত শ্রেণি নেই। ফলে ভারতের বাজারে মধ্যবিত্ত শ্রেণি যে চাহিদা তৈরি করে, সেই চাহিদা বাংলাদেশের বাজারে তৈরি হয় না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য বলছে ২০২৪-এর ১১ ফেব্রুয়ারি ডিএসই ইনডেক্স সবচেয়ে উপরে ছিল। তারপর ক্রমশ কমতেই থেকেছে সে দেশের মার্কেট। গত ২৮ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ৮৯৮ দশমিক ৫৩-এ নেমেছিল সূচক। যা সর্বোচ্চের তুলনায় প্রায় ৩১.৬১ শতাংশ পতন।
বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের এই পতন ঠিক কী ইঙ্গিত করছে? কী বলছেন অর্থনীতিবিদরা? অর্থনীতিবিদ অনির্বাণ দত্ত বলছেন, কোনও দেশের আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটলে ব্যবসার জন্য সেটা ভাল হয় না। আর তার প্রভাব পড়ে সেই দেশের স্টক এক্সচেঞ্জে। আর বাংলাদেশের যা অবস্থা তাতে সেখানে বাইরের লোক বিনিয়োগ করতে চাইবে না। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের অবস্থাও দিনেদিনে খারাপ হচ্ছে কারণ ওদেশের লোকদের ক্রয়ক্ষমতা কমছে।
বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নেই। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য হাহাকার করছে তারা। এই পরিস্থিতিতে সেখানে ক্রমশ মাথা তুলছে মৌলবাদ। আক্রমণ ধেয়ে আসছে সংখ্যালঘুদের উপর। সেখান থেকে কোন পথে চালিত হয় বাংলাদেশ সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে আমাদের দেশের মানুষ।