Pandora Papers Leak: কর ফাঁকি দিয়েছেন সচিন, অনিলরা? তদন্তের নির্দেশ কেন্দ্রের
Sachin Tendulkar: কেন্দ্রীয় সরকার আজ নির্দেশ দিয়েছে যে, প্যান্ডোরা পেপার্স ফাঁস হওয়ার পর যে নামগুলি উঠে এসেছে সেগুলির তদন্ত করবে সিবিডিটি। সিবিডিটির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হবে গোটা তদন্ত।
নয়া দিল্লি : চারিদিকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে কর ফাঁকি নিয়ে। প্যান্ডোরার বাক্স থুড়ি, প্যান্ডোরা পেপার্স ফাঁস হয়ে যে সব ভারতীয়র নাম উঠে এসেছে, তা কল্পনার অতীত। আর তাই প্যান্ডোরা পেপার্সে উঠে আসা নামগুলি নিয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সেস (CBDT)।
সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সেসের মুখপাত্র আজ জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার আজ নির্দেশ দিয়েছে যে, প্যান্ডোরা পেপার্স ফাঁস হওয়ার পর যে নামগুলি উঠে এসেছে সেগুলির তদন্ত করবে সিবিডিটি। সিবিডিটির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হবে গোটা তদন্ত। তিনিই পুরো বিষয়টির পর্যবেক্ষণ করবেন। তদন্তকারী প্রতিনিধি দলে থাকবেন সিবিডিটি, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিনিধিরা।
সচিন তেন্ডুলকর। ক্রিকেট যদি কোনও ধর্ম হয়, তবে সেই ধর্মের ঈশ্বর তিনি। আর সেই ক্রিকেট ঈশ্বরেরই নাম জড়িয়েছে প্যান্ডোরা পেপার্সে। শুধু সচিন একাই নন, তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি তেন্ডুলকর এবং শ্বশুর আনন্দ মেহতার নামও উঠে এসেছে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে।
ভারতের মোট ৩০০ জনের নাম উঠে এসেছে প্যান্ডোরা পেপার্স ফাঁসে। যে অনিল আম্বানি কয়েক বছর আগেই লন্ডনের আদালতে নিজেকে দেউলিয়া বলে ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর নামও রয়েছে তালিকায়। এছাড়া বিনোদ আদানি, জ্যাকি শ্রফ, কিরণ মজুমদার-শ, নীরা রাদিয়া, সতীশ শর্মার নামও উঠে এসেছে প্যান্ডোরা পেপার্সে।
মানবাধিকার সংগঠন অক্সফাম ইন্ডিয়া ‘প্যান্ডোরা পেপার্স’ ফাঁস হওয়ার পর পরই কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানাচ্ছিল। অক্সফাম ইন্ডিয়ার সিইও অমিতাফ বিহার জানিয়েছেন, “কর ফাঁকি দেওয়ার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী সরকারগুলিকে প্রতি বছর ৪২৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়। তুলনামূলকভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় এতে। কর ফাঁকি দেওয়ার ঘটনা অপরাধ ও দুর্নীতিতেও প্রশ্রয় দেয়।”
এখনও পর্যন্ত ওই রিপোর্টে যা উল্লেখ রয়েছে, তা অনুযায়ী ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে সাস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামে একটি সংস্থায় ডিরেক্টর পদে রয়েছেন সচিন ও অঞ্জলি। এই সংস্থার সঙ্গে নাকি ২০১৬ সাল থেকেই যুক্ত ভারতের এই তারকা দম্পতি। সাস ইন্টারন্যাশনালে ৯ টি শেয়ার রয়েছে সচিনের নামে। স্ত্রী অঞ্জলির নামে রয়েছে ১৪ টি শেয়ার। দু’জনের মিলিত শেয়ারের ভারতীয় বাজারে মূল্য ১৮ কোটি টাকা। এর পাশাপাশি সচিনের শ্বশুর আনন্দ মেহতার নামে ৫ টি শেয়ার রয়েছে, তারও ভারতীয় বাজারে মূল্য আনুমানিক ৪ কোটি টাকা।
যদিও সচিনের আইনজীবী জানিয়েছেন, ‘ক্রিকেট ঈশ্বরের’ বিদেশে এখনও পর্যন্ত যা কিছু বিনিয়োগ করেছেন তা সম্পূর্ণ বৈধ। এমনকী সচিন বিদেশে যাবতীয় বিনিয়োগের হিসেব এবং তার থেকে দেওয়া করের হিসেব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জমাও দেওয়া হয়েছে।
প্যান্ডোরা পেপার্সের তালিকায় নাম উঠে এসেছে রিলায়েন্স এডিএ গ্রুপের চেয়ারপার্সন অনিল অম্বানিরও। অনিল অম্বানি এবং তাঁর সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজনের নামে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের জার্সিতে এবং সাইপ্রাসে কমপক্ষে ১৮ টি ভুয়ো কোম্পানির মালিকানার রয়েছে বলে খবর। এর মধ্যে সাতটি কোম্পানি ভারতীয় মুদ্রায় কমপক্ষে প্রায় ৯ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে এবং বিনিয়োগ করেছে বলে রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, অনিল অম্বানি লন্ডনের একটি আদালতে বলেছিলেন যে তিনি দেউলিয়া এবং তার মোট সম্পত্তির অঙ্ক শূন্য। সেই সময়েই আদালত অনিল অম্বানিরC কোনও বেনামি সংস্থা রয়েছে কি না, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। আদালত পরে তিনটি চিনা ব্যাঙ্ককে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা ফেরত দেননি অনিল অম্বানি।
আরও পড়ুন : Pandora Papers Leak: খুলেছে ‘প্যান্ডোরার বাক্স’, কর ফাঁকি দিয়েছেন সচিন? তালিকায় অনিল আম্বানিও