Flipkart: ফ্লিপকার্টের উপর চিনা আধিপত্য! ২০৬০ কোটি টাকার বিশাল চুক্তি, জানুন বিস্তারিত

Flipkart: ২৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২,০৬০ কোটি টাকার বিনিময়ে ফ্লিপকার্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিন্নি বনসলের কাছ থেকে সংস্থার ৭২ শতাংশ শেয়ার কিনে নিল চিনা প্রযুক্তি সংস্থা 'টেনসেন্ট'।

Flipkart: ফ্লিপকার্টের উপর চিনা আধিপত্য! ২০৬০ কোটি টাকার বিশাল চুক্তি, জানুন বিস্তারিত
প্রতীকী ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 13, 2022 | 4:18 PM

নয়া দিল্লি: এবার ভারতীয় ই-কমার্স সংস্থা ফ্লিপকার্টের উপর চিনা আধিপত্য! ফ্লিপকার্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিন্নি বনসল, সংস্থায় তাঁর শেয়ারের একটি অংশ বিক্রি করে দিলেন চিনা প্রযুক্তি সংস্থা ‘টেনসেন্ট’-কে। তবে সরাসরি নয়, সরকারি নথি অনুযায়ী ‘টেনসেন্ট’ সংস্থার ইউরোপীয় সহায়ক সংস্থা, ‘টেনসেন্ট ক্লাউড ইউরোপ বিভি’-র সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন বনসল। ২৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২,০৬০ কোটি টাকার চুক্তির হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে।

এই চুক্তির ফলে, ফ্লিপকার্টে টেনসেন্টের সহায়ক সংস্থাটির অংশীদারি হল ০.৭২ শতাংশ। অন্যদিকে সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বিন্নি বনসলের শেয়ার কমে দাঁড়ালো ১.৮৪ শতাংশ। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবরই এই চুক্তি পাকা হয়েছিল। চলতি আর্থিক বছরের শুরুতে ফ্লিপকার্টের পক্ষ থেকে চুক্তির কথা জানিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। এর আগে, ২০১৮ সালে ওয়ালমার্ট ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিংস ইনকর্পোরেটেডের সঙ্গে ১৬ বিলিয়ন বা ১৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি করেছিল ফ্লিপকার্ট প্রাইভেট লিমিটেড। সেই থেকে ফ্লিপকার্টের ৭৭ শতাংশ, অর্থাৎ নিয়ন্ত্রক শেয়ার রয়েছে ওয়ালমার্টের হাতে। ওই চুক্তিই এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সবথেকে বড় ই-কমার্স চুক্তি।

২০২১ সালের জুলাই মাসে শেষবার ফ্লিপকার্ট সংস্থা তাদের আর্থিক মূল্যায়ন করেছিল। ফান্ডিং রাউন্ডে ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৬,৮০৫.৬ কোটি টাকা তুলেছিল এই ই-কমার্স সংস্থাটি। সিঙ্গাপুরের সার্বভৌম সম্পদ তহবিল ‘জিআইসি’, ‘সিপিপি ইনভেস্টমেন্টস’, ‘সফ্টব্যাঙ্ক ভিশন ফান্ড ২’ এবং ‘ওয়ালমার্ট’ ছিল মূল লগ্নিকারী। এছাড়া, ডিসরাপ্টএডি, কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি, খাজানা ন্যাশনাল বেরহাদ, টেনসেন্ট, উইলবি ক্যাপিটাল, আন্তারা ক্যাপিটাল, ফ্র্যাঙ্কলিন টেম্পলটন এবং টাইগার গ্লোবালও ফান্ডিং রাউন্ডে অংশ নিয়েছিল। ফলে, ফ্লিপকার্ট সংস্থার আর্থিক মূল্যায়ন গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ৩৭.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় ২৯,৩৮,১৯.৫৬ কোটি টাকা!

জুলাই মাসে ওই ফান্ডিং রাউন্ডের পরেই বিন্নি বনসল এবং টেনসেন্ট সংস্থার মধ্যে লেনদেন হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ফ্লিপকার্টের কার্যক্রম শুধুমাত্র ভারতেই সীমাবদ্ধ। তবে, সংস্থার সদর দফতর হল সিঙ্গাপুরে। সূত্রের খবর, এই চুক্তির লেনদেনও সিঙ্গাপুরেই হয়েছিল। সেই সঙ্গে টেনসেন্ট-এর ইউরোপীয় সহায়ক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বলে সরকারকে এই চুক্তির বিষয়ে জানানোর কোনও দায় ছিল না ফ্লিপকার্টের। কারণ, এটি ‘প্রেস নোট ৩’-এর আওতায় পড়ে না। ‘প্রেস নোট ৩’ অনুযায়ী, ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত রয়েছে এমন দেশগুলি থেকে যদি কোনও ভারতীয় সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয়, তবে তা সরকারকে জানাতে হয়। সরকরের পক্ষ থেকে যাচাই করে অনুমোদন দেওয়া হয়। একটি দায়িত্বশীল সংস্থা হিসাবেই তারা ভারত সরকারকে এই চুক্তির সম্পর্কে জানিয়েছে, এমনটাই দাবি ফ্লিপকার্টের।

ফ্লিপকার্টই প্রথম ভারতীয় সংস্থা নয়, যেখানে লগ্নি করল টেনসেন্ট। এখনও পর্যন্ত ভারতের বেশ কয়েকটি সংস্থায় বিনিয়োগ করেছে এই চিনা প্রযুক্তি সংস্থার। তবে, পিইউবিজি-সহ বেশ কয়েকটি চিনা মোবাইল গেম ভারত সরকার নিষিদ্ধ করেছে। এই গেমগুলির অধিকাংশই কিন্তু এই টেনসেন্ট গোষ্ঠীরই তৈরি।