Karnataka Election 2023: জয়ের আনন্দেও অস্বস্তি, সিদ্দারামাইয়া না শিবকুমার – কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী?
Karnataka Election 2023: কর্নাটকে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু, তারপরই উঠতে শুরু করেছে অস্বস্তিকর প্রশ্নটা, কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী?
বেঙ্গালুরু: প্রশ্নটা উঠে গিয়েছিল নির্বাচনের অনেক আগেই। শনিবার (১৩ মে), কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩-এর ফল পরিষ্কার হতেই ফের উঠতে শুরু করেছে সেই প্রশ্ন। কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী? প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া? নাকি, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার? নিঃসন্দেহে তাঁরাই প্রধান দাবিদার, তৃতীয় কোনও নাম আলোচনায় নেই। নির্বাচনের আগে সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমার – দুজনেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। এক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, সিদ্দারামাইয়া মন্তব্য করেছেন যে, শিবকুমার কোনওদিন মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না। পরে যদিও এই মন্তব্য করার কথা অস্বীকার করেন সিদ্দারামাইয়া। অন্যদিকে শিবকুমার বলেছিলেন, দলীয় হাইকমান্ড তাঁর পরিশ্রমের স্বীকৃতি দেবেন বলে আশা করেন তিনি। দেখে নেওয়া যাক, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে কে এগিয়ে? মুখ্যমন্ত্রী বাছাই নিয়ে কী কী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে?
কেন সিদ্দারামাইয়া?
কর্নাটকের রাজনীতিতে জননেতা ছিলেন দুজন – বিএস ইয়েদুরাপ্পা এবং সিদ্দারামাইয়া। যাঁদের এক ডাকে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত হয়। ইয়েদুরাপ্পা সংসদীয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। কাজেই বর্তমানে রাজ্যের সবথেকে জনপ্রিয় নেতা অবশ্যই সিদ্দারামাইয়া। প্রায় প্রতিটি জনমত সমীক্ষা এবং বুথ ফেরত সমীক্ষাগুলিতেও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানুষের প্রথম পছন্দ হিসেবে উঠে এসেছে এই প্রবীণ কংগ্রেস নেতার নামই। একই সঙ্গে সংখ্যালঘু, অনগ্রসর শ্রেণি, দলিত সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতাও তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ার অন্যতম কারণ হয়ে উঠথে পারে।
কেন শিবকুমার?
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে অসম্ভব পরিশ্রম করেছেন শিবকুমার, এমনটাই দাবি তাঁর অনুগামীদের। আর সেই পরিশ্রমের ফলে তাঁর সময়ে রাজ্যে দল আশাতীত সাফল্য পেল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ২৮টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছিল মাত্র ১টি আসন। এর কয়েক মাস পর, বিধানসভা উপনির্বাচনেও হারতে হয়েছিল কংগ্রেসকে। তারপরই, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন দীনেশ গুন্ডু রাও। ২০২০ সালে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন শিবকুমার। তারপর থেকে গোটা রাজ্যে চষে বেরিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সির তদন্তের মুখোমুখি হয়ে এবং গ্রেফতার হয়েও তিনি কংগ্রেস দলের প্রতি অনুগত থেকেছেন। এই কারণে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যেও তাঁর বিশেষ শ্রদ্ধা ও সম্মান রয়েছে।
পুরনোকে আঁকড়ে
সাম্প্রতিক অতীতে বারবারই দেখা গিয়েছে নবীনদের জায়গা দিতে সমস্যা রয়েছে কংগ্রেসের। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে নতুনদের এগিয়ে দিতে এক পা এগিয়েও, দশ পা পিছিয়ে এসেছে শতাব্দী প্রাচীন দল। রাজস্থানে বিদ্রোহের পরও, সচিন পাইলটের শিকে ছেঁড়েনি। ‘বুড়ো’ অশোক গেহলটই এখনও মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে রয়েছেন। সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও, নবীন শশী থারুরের উপর ভরসা রাখতে পারেননি কংগ্রেস নেতারা। মল্লিকার্জুন খাড়্গের মতো পুরনো নেতাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এমনকী, রাহুল গান্ধী নিজেও একসময় যুব সম্প্রদায়ের নেতাদের কংগ্রেসে তাজা রক্তের আমদানী করতে চেয়েছিলেন। তাঁর সেই যুব দলের নেতাদের অধিকাংশই এখন গুরুত্ব না পেয়ে হতাশায় দল ছেড়েছেন।
কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী?
জনপ্রিয়তায় এগিয়ে সিদ্দারামাইয়াই। সিনয়রিটির দিক থেকেও শিকুমারের থেকে এগিয়ে তিনি। তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিতে পারে কংগ্রেস হাইকমান্ড। শিবকুমারকে, উপমুখ্যমন্ত্রী বা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে, তাঁকে দলীয় পদ ছেড়ে দিতে হতে পারে। দলের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে প্রবীণ সিদ্দারামাইয়াকে। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে রাজস্থানের মতো পরিস্থিতি যাতে না হয়, তার জন্য তৃতীয় এক সম্ভাবনার কথাও ভাবতে পারে কংগ্রেস হাইকমান্ড। সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমার দুজনেই আড়াই বছর করে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।