সাধারণের ভিড়ে নিজের সিনেমা হয়ে ওঠার গল্প ‘লুডো’

এ ছবি দেখে একটা বড় অংশের দর্শকের ভাল লাগবে। একটা বড় অংশের মনে হবে মাঝারি মানের। কিন্তু আপনি যদি সিনেমা দেখতে-দেখতে সাধারণ মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যেতে ভালবাসেন অথবা সাধারণ মানুষের ভিড়ে ঘুরতে-ঘুরতে নিজে সিনেমা হয়ে উঠতে চান, তাহলে এ ছবি এড়িয়ে যেতে পারবেন না।

সাধারণের ভিড়ে নিজের সিনেমা হয়ে ওঠার গল্প ‘লুডো’
Follow Us:
| Updated on: Jan 18, 2021 | 8:14 PM

ও বেটাজি, ও বাবুজি…’। ঠিক ধরেছেন ‘লুডো’ এফেক্ট।

লুডো’ নাকি ২০২০র সেরা ছবি। না! এমন কোনও প্রতিযোগিতার মাপকাঠিতে একে ফেলতে চাইছি না। ‘লুডো’ নাকি অনুরাগ বসুর তৈরি সেরা ছবি। না! এই বিধানও একটা লেখায় দিয়ে দেওয়া যায় না। কারণ এই মতও তর্কসাপেক্ষ। কিন্তু নিঃসন্দেহে ‘লুডো’, এমনই এক ছবি, ভাল লাগুক বা খারাপ, আপনি এড়িয়ে যেতে পারবেন না।

অনুরাগ বসু বিরতি নিয়ে ছবি তৈরি করেন। শুধু তাইই নয়, ছবি বানানও সময় নিয়ে (‘জগ্গা জাসুস’ তৈরিতে তাঁর এতটাই বেশি সময় লেগেছিল যে, ছবি রিলিজের পর তা নিয়ে মন্তব্য়ও করেছিলেন নায়কপ্রয়োজক রণবীর কাপুর)। তাই তাঁর ছবি নিয়ে সেই অর্থে অপেক্ষা বা আগ্রহ থাকে দর্শকের। কিন্তু যেটা থাকে, সেটা হল ছবি দেখার সময় এবং ছবি দেখা শেষ করে একটা টান। না, এই টান তিনি বাঙালি পরিচালক বলে নয়। তিনি ভাল গল্পকার বলে। তিনি গল্প বলতে জানেন, তাইই।

লুডো’র চারটে গল্প চার রকম। কিন্তু নিপুণ হাতে মালা গাঁথার কাজটা করেছেন অনুরাগ। লাল, নীল, হলুদ, সবুজ গুটিকে জড়ো করেছেন এক জায়গায়। ছক্কা, পুটের খেলায় আসলে যে শেষ পর্যন্ত ভালবাসাই জিতে যায়, আরও একবার সেলুলয়েডে প্রমাণ করেছেন। আরও একবার দেখিয়েছেন, টুকরো গল্পগুলো আসলে আমার, আপনার জীবন থেকেই নেওয়া।

আরও পড়ুন, শুটিং না থাকলে আমি গদাধরের সঙ্গে ক্রিকেট খেলি: অয়ন্যা

বিট্টু তিওয়ারি (অভিষেক বচ্চন), লো, পিঙ্কি (রাজকুমার রাও, ফতিমা সানা শেখ), আকাশ (আদিত্য রয় কাপুর), অহনা (সান্যা মালহোত্রা)। কাকে ছেড়ে কার কথা বলবেন? না, শুধু পারফর্ম্য়ান্সের নিরিখে কথা বলছি না কাকে ছেড়ে কার কথা বলবেন। বলছি কারণ এরা চরিত্র হিসেবে ভীষণ জ্য়ান্ত, ভীষণই জীবন্ত। হয়তো আমাদের সারাদিনের ফেসবুকইনস্টাগ্রাম স্টেটাস, হোয়াটসঅ্য়াপ নোটিফিকেশনের ভিড় ঠেলে কাছে এসে উঠতে পারে না এইসব ‘ন্য়াচেরাল’ চরিত্ররা। যাকে খুঁজতে একটু কসরৎ করতে হতে পারে, তিনি সত্তু ত্রিপাঠি (পঙ্কজ ত্রিপাঠি)। অভিনয় হোক বা ক্যামেরা (অনুরাগ বসু, রাজেশ শুক্লা), সম্পাদনা (অজয় শর্মা) হোক বা কস্টিউম (আশিস দেওয়ার), প্রত্যেকেই নিজের সেরা পারফরম্যান্স দিয়েছেন। এ ছবি দেখে একটা বড় অংশের দর্শকের ভাল লাগবে। একটা বড় অংশের মনে হবে মাঝারি মানের। কিন্তু আপনি যদি সিনেমা দেখতেদেখতে সাধারণ মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যেতে ভালবাসেন অথবা সাধারণ মানুষের ভিড়ে ঘুরতেঘুরতে নিজে সিনেমা হয়ে উঠতে চান, তাহলে এ ছবি এড়িয়ে যেতে পারবেন না।

আরও পড়ুন, মিথিলা এবার ‘রাজনীতিবিদ’, কিন্তু কোথায়?

অভিনয়ে ছিলেন অনুরাগ নিজেও। আসলে তিনিই সূত্রধর। আসলে তাঁর, অর্থাৎ যমরাজ এবং চিত্রগুপ্তের জুটি এক কথায় হিট। এই জুটির চোখ দিয়েই গোটা গল্পটা বেঁধেছেন পরিচালক। কোন কোন চরিত্র, কখন কেমন আচরণ করবে, কোন ঘটনার পর কী ঘটতে পারে সবটাই যেন জলের মতো মুখস্থ যমরাজের। তিনি সেই গল্পটাই বলছেন চিত্রগুপ্তকে। এমন কনসেপ্টেই তৈরি এই ছবি। ভেবে দেখবেন, কয়েক দিনের অভিনয়ই তো করছি আমরা সকলে। লাল, নীল, হলুদ, সবুজের ঘরে গুটির ওঠানামায় কয়েকটা দিন কাটিয়ে দেওয়ার পর চিত্রগুপ্তের খাতায় রোল কল হবেই। হাজির হতেই হবে যমরাজের দরবারে। তখনও কিন্তু আপনার মূলধন ওই ভালবাসাই। আর রিংটোনে