Protein Myths: প্রোটিন সম্বন্ধে এই ভুল ধারণাগুলি কাটিয়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
একটি একক প্রোটিনে ২০ টি ভিন্ন অ্যামিনো অ্যাসিডের ৩০০ বা তার বেশি সংখ্যক ভ্যারিয়েশন থাকতে পারে হতে যা অপরিহার্য হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
যদি আমাদের জীবনে সুষম পুষ্টির খুব বেশি দরকার কখনও থেকে থাকে, তাহলে সেটা অবশ্যই আজ। জীবন এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর প্যান্ডেমিকের সাম্প্রতিক বিধ্বংসী প্রভাব কেবল আমরা সাধারণ বিষয়বস্তুর ওপরই প্রভাব ফেলেনি, বরং আমাদের প্রাত্যহিক চাহিদাতেও আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে।
বার্গার্স টু বিস্টস এর প্রতিষ্ঠাতা পুষ্টিবিদ কৃপা জালান প্রোটিনের প্রসঙ্গ এলে বেশ কিছু যুক্তি দিয়ে থাকেন। সেই যুক্তিগুলি প্রোটিন সম্পর্কিত আমাদের সম্যক ধারণা বদলে দেয়।
নিরামিষ মানেই সীমিত প্রোটিন:
ভারতের মতো দেশে, যেখানে জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অনুপাত হয় নিরামিষভোজী বা নমনীয় খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করে, সেখানে এই দুইয়ের বাইরে কোনও খাদ্যাভ্যাসের ঘটনা বিরল। ভুল ধারণা কী? তা হল আমারা মনে করি, নিরামিষাশীদের উচ্চ মানের প্রোটিনের পর্যাপ্ত বিকল্প নেই।
সঠিক তথ্য: ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টের ক্ষেত্রে নিরামিষাশীদেরই যে প্রচুর বিকল্প আছে শুধু তাই নয়, সয়াবিনের মতো কিছু উদ্ভিদ প্রোটিনও আছে যা প্রাণী-ভিত্তিক উৎসের মতো উচ্চ প্রোটিন বহন করে। ডাল থেকে বাদাম এবং বীজ যেমন আখরোট, বাদাম, চিয়া বীজ, কুইনো এবং শণ বীজ ছাড়াও সয়া-ভিত্তিক প্রচুর খাবার আছে যাদের মধ্যে উচ্চমানের উদ্ভিজ্জ প্রোটিন পাওয়া যায়।
সমস্ত প্রোটিনএকই ধরণের আচরণ করে:
সাধারণভাবে বিশ্বাস করা হয় যে সমস্ত প্রোটিন সমানভাবে তৈরি হয় এবং প্রতিটি উৎস একই পরিমাণে পুষ্টি প্রদান করে।
সঠিক তথ্য: একটি একক প্রোটিনে ২০ টি ভিন্ন অ্যামিনো অ্যাসিডের ৩০০ বা তার বেশি সংখ্যক ভ্যারিয়েশন থাকতে পারে হতে যা অপরিহার্য হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। প্রতিটি প্রোটিনের একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা এবং অ্যামিনো অ্যাসিডের ক্রম রয়েছে যা তাদের নিজেদের থেকে আলাদা করে তোলে। এটি শরীরে প্রোটিনের কার্যকারিতাও নির্ধারণ করে। যদিও আমাদের দেহ অপ্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড নিজেই তৈরি করতে পারে, তবু আমাদের খাবারের থেকে নয়টি অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড সংগ্রহ করতে হয়।
বেশি প্রোটিন মানেই বেশি ঝুঁকি:
নিয়মিতভাবে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের ব্যাপারে আরেকটি ভুল ধারণা হল যে অতিরিক্ত প্রোটিন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়। এমনকি অতিরিক্ত প্রোটিনের জন্য ওজন বৃদ্ধি, হজমের সমস্যা, ক্যান্সার বা কিডনি ফাংশন ব্যাহত হয়।
সঠিক তথ্য: প্রোটিন হল আমাদের শরীরের পাওয়ারহাউস যা হাড় ও পেশির বিকাশে সাহায্য করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং অন্যান্য শারীরিক নানান কাজে শক্তি প্রদান করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রোটিন নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকি রোধ করতে, রক্তচাপ বজায় রাখতে এবং কার্ডিয়াক রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।
সারা জীবন প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা একই থাকে:
পরিবর্তনই একমাত্র ধ্রুবক। এই প্রবাদটি আমাদের শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি, বিকাশ এবং কার্যকারিতার জন্য যে পরিমাণ প্রোটিনের প্রয়োজন হয় তার ক্ষেত্রেও সত্যি। সাধারণ বিশ্বাসে একজনের প্রোটিনের চাহিদা সারা জীবন ধরে যে স্থির থাকে বলা হয়, তা ভুল।
সঠিক তথ্য: আমাদের শরীর জীবনচক্রের বিভিন্ন পর্যায়ের মাধ্যমে অসংখ্য শারীরবৃত্তীয় এবং কার্যকরী পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। এটি পর্যাপ্ত পুষ্টি এবং প্রোটিন গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তৈরি করে যা আমাদের শরীরের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে মিল রাখে। শিশুদের মধ্যে, তাদের গঠনমূলক বছরগুলিতে ভাল মানের প্রোটিনের প্রয়োজন খুব বেশি কারণ এটি তাদের শরীরের ভর এবং পেশী তৈরি করতে সাহায্য করে। হাড়কে শক্তিশালী করে এবং তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য শক্তি বৃদ্ধি করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, একজনের জীবনযাত্রার উপর নির্ভর করে প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা পরিবর্তিত হতে পারে। একজন ক্রীড়াবিদের সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি প্রোটিনের প্রয়োজন হবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ পেশী বজায় রাখার জন্য প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াতে হয়।
আরও পড়ুন: ফল কখন খাবেন? দিনে কটা ফল খেলে সুস্থ ও ফিট থাকবেন?