Child’s Screen Addiction: কিছুতেই বাচ্চার মোবাইল আসক্তি কাটাতে পারছেন না? রইল বিশেষজ্ঞদের টিপস

TV9 Bangla Digital

TV9 Bangla Digital | Edited By: Reshmi Pramanik

Updated on: Jun 14, 2022 | 2:36 PM

Kids and screen time: প্রত্যেকের ক্ষেত্রে স্ক্রিন টাইম বেঁধে দিতে হবে। বেলা সাড়ে ১২টার আগে কোনওভাবেই মোবাইল কিংবা টিভিতে হাত নয়

Child's Screen Addiction: কিছুতেই বাচ্চার মোবাইল আসক্তি কাটাতে পারছেন না? রইল বিশেষজ্ঞদের টিপস
যা পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা

তোজোর যখন ঠিক ১০ দিন বয়স, তখন থেকেই ওর মা সবাইকে গর্ব করে বলত, ‘‘ছেলে আমার ক্যামেরা ফ্রেন্ডলি।’’ বয়স বাড়ে, ক্যামেরার প্রতি তোজোর আকর্ষণও বা়ড়তে থাকে। ফোন ছাড়া কোনও কাজই করতে রাজি নয় তোজো। খাওয়া-দাওয়া-স্নান-ঘুম… ফোন ছাড়া কোনও কিছুই করতে নারাজ সে। অভ্যাস এমনই পর্যায়ে গিয়েছে যে, মোবাইল স্ক্রল করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই ইউটিউব চালিয়ে ফেলে। রাতে ঘুমের আগেও ফোন চাই—বায়নাক্কা এমনই পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছয় যে, শেষপর্যন্ত ডাক্তারের দ্বারস্থ হতে হল তোজোর মা-বাবাকে। চিকিৎসক কিন্তু এর জন্য আঙুল তুললেন করলেন তোজোর অভিভাবকদের দিকেই।

একই চিত্র তানিয়ার বাড়িতেও। লকডাউনে একটানা বাড়িতে থাকার ফলে অসম্ভব ফোনে আসক্তি পাঁচ বছরের মেয়ে গুণগুণের। নানারকম গেম থেকে ভিডিয়ো… সারাদিন কিছু না কিছু চলছেই। অনলাইন ক্লাসের দৌলতে বাচ্চার হাতে ল্যাপটপ, মোবাইল তুলে দিতে বাধ্য হয়েছেন বেশিরভাগ মা-বাবা। ক্লাস শেষ হওয়ার পরও তাই অধিকাংশ বাচ্চাকেই দেখা যাচ্ছে মোবাইল ফোন নিয়েই বসে থাকতে। মাঠে খেলতে যাওয়ার মতো সময় নেই। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎও নেই। ক্লাস শেষ হলেই চলত দেদার ভিডিয়ো চ্যাট। পাঁচ বছরের বাচ্চারা আবার হোয়্যাটসঅ্যাপে রীতিমতো নিজেদের গ্রুপও তৈরি করে ফেলেছে। সেখানে সারাদিন ধরেই চলছে নানা স্টিকার পাঠানো, ভয়েস মেসেজ, চ্যাটিং। সঙ্গে ফ্রি ঝগড়া। মোবাইল গেমের নেশা এমনই পর্যায়ে গিয়েছে যে, তানিয়া একসময় বাধ্য হয়েছে গুণগুণের জন্য পয়সা দিয়ে গেম কিনে দিতে।

গুণগুণ কিংবা তোজো একা নয়। এই তালিকাটা বেশ লম্বা… এই প্রজন্মের অধিকাংশ শিশু-কিশোরই বুঁদ মোবাইলে। বাড়িতে অশান্তি। খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। তবুও মোবাইলের নেশা থেকে কিছুতেই সরানো যাচ্ছে না বাচ্চাদের। সবাই মিলে একসঙ্গে বসে গল্প করার অভ্যাস কিংবা দিদা-ঠাকুমার কাছে বসে গল্প শোনার মতো ধৈর্য তাদের নেই। ১০ মিনিট চুপচাপ বসে থাকলে ১১ মিনিটের বেলায় তাদের আবদার, ‘মোবাইলটা দাও।’ ‘মোবাইল না দিলে পড়ব না’, ‘মোবাইল না দিলে খাব না’… অহেতুক অশান্তি, জেদ। কিছুক্ষণ মারামারি, ধস্তাধস্তির পর আবার ঘুরেফিরে একই চিত্র। মা বাধ্য হয়ে তাঁর স্মার্টফোনটি তুলে দিচ্ছেন সন্তানের হাতে।

এই খবরটিও পড়ুন

শিশু-কিশোরদের এই ভয়ঙ্কর ‘মোবাইল স্ক্রিন অ্যাডিকশন’ নিয়ে TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পায়েল ঘোষের সঙ্গে। তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল: বাচ্চারা খাবার খেতে চাইছে না, বাড়ির লোকেরাই তখন বাচ্চার হাতে গুঁজে দেন একটা স্মার্টফোন। ইউটিউব ভিডিয়ো দেখতে-দেখতে খাবার খেয়ে নেয় ছেলে-মেয়ে। এভাবেই তো স্মার্টফোনে হাতেখড়ি হয় অধিকাংশ বাচ্চার। কী পরামর্শ দেবেন মা-বাবাকে? উত্তরে পায়েল বলেন, ‘‘এর সম্পূর্ণ দায় মা-বাবারই। প্রত্যেকের ক্ষেত্রে স্ক্রিন টাইম বেঁধে দিতে হবে। বেলা সাড়ে ১২টার আগে কোনওভাবেই মোবাইল কিংবা টিভিতে হাত নয়। বাড়ির কিছু জায়গা বেছে নিয়ে ‘মোবাইল ফ্রি জোন’ করতে হবে। যেমন বেডরুম, ডাইনিং টেবিল।’’ আর? পায়েলের সংযোজন, ‘‘খেতে-খেতে ফোন ঘাঁটা চলবে না। অনলাইন ক্লাসের দৌলতে অধিকাংশ স্কুলেই বাচ্চাদের হোমওয়ার্ক বা যে কোনও টাস্ক পাঠিয়ে দেওয়া হয় মায়েদের হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপে। এই সব ডকুমেন্ট প্রিন্ট করান। হাতে-কলমেই বাচ্চা শিখুক। ফোনের স্ক্রিন দেখে পড়ার অভ্যাস চলবে না। বইয়ের পাতা উল্টে পড়ার অভ্যাস করতে হবে বড়দেরও।’’

লকডাউনে ঘরবন্দি থাকতে গিয়ে শিশু-কিশোরদের মধ্যে মারাত্মক ভাবে বেড়েছে মোবাইল আসক্তি। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল কল্যাণী জওহরলাল নেহরু হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কৌস্তভ চক্রবর্তীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধানের জন্য প্রথমেই স্কুলগুলি খুলতে হবে। অনলাইন ক্লাস আর নেওয়া যাবে না। সব যদি অনলাইনেই হয়ে যেত তাহলে আর স্কুলের কোনও অস্তিত্বই থাকত না।’’

কৌস্তভ আরও বলছেন, ‘‘সন্তানকে পড়াতে বসিয়ে পাশে ফোন ঘাঁটবেন না। এতে মনঃসংযোগে ঘাটতি থেকে যায়। সন্তান আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠবে। মারধর কিংবা বাড়িতে অশান্তি করে এই সমস্যার কোনও সুরাহা করতে পারবেন না। বরং বোঝান যে তার ভালর জন্যই বলছেন। সকলের সঙ্গে মিলেমিশে তাকে বড় হতে হবে। অভিভাবকদের মধ্যেও সেই অভ্যাস রাখতে হবে। অনলাইনে ওয়ার্ক শিট পাঠানোর পরিবর্তে খাতায়-কলমে যাতে বাচ্চাদের বেশি করে কাজ করানো যায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে স্কুলকে।’’

Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

Latest News Updates

Follow us on

Most Read Stories

Click on your DTH Provider to Add TV9 Bangla