Brain Freeze: হঠাৎ ঠাণ্ডা খাবার খেতে গিয়ে প্রবল মাথা ব্যথা? জানেন কেন এমন হয়…
Brain Freeze Symptoms: ঠাণ্ডা কিছু খাওয়ার সময় যদি আপনি আপনার কপালে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে আপনার ব্রেন ফ্রিজের সমস্যা হতে পারে। তাই খুব ঠাণ্ডা বা আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন
গরমে শরীরকে আরাম দিতে ঠান্ডা ছাড়া অন্য কোনও খাবারের কথা ভাবাই যায় না। রোদ থেকে ফিরে কিংবা বেশি ঘেমে ঘেলে সকলেই ভাবেন কত তাড়াতাড়ি ঠান্ডা কোনও পানীয় কিংবা আইসক্রিম মুখের মধ্যে পুরবেন। সকলেই ভাবেন বরফ কিংবা ঠান্ডা মুখে একবার পুরে ফেলতে পারলেই রোদ-গরম থেকে মিলবে রেহাই। আর এখান থেকেই হয় বিপত্তি। গরমে ঘেমে-নেয়ে এসে ঠান্ডা খেলেই যেমন হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে তেমনই হয় ব্রেন ফ্রিজ ( Brain Freeze) এর সমস্যাও। এই সমস্যায় অনেকেই পড়েন কিন্তু বিষয়টি সম্বন্ধে বিশদে জানেন না। খুব তাড়াতাড়ি যদি ঠান্ডা আইসক্রিম বা পানীয় গিলে ফেলেন সেখান থেকেই কিন্তু আসে এই সমস্যা। তবে এই সমস্যার স্থায়িত্ব হয় কয়েক সেকেন্ড। এতে মাথার উপরের অংশে অর্থাৎ কপালে খুব ব্যথা হয়। কোনও রকম বিশ্রাম বা ওষুধ ছাড়াই সেরে যায়। মুখ আর গলার তাপমাত্রা যত তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হবে তত দ্রুতই মিটবে সমস্যা থেকে মুক্তি। ব্রেন ফ্রিজকে কোল্ড স্টিমুলাস হ্যাডক বা স্ট্যাফোপ্যালাইটানও কিন্তু বলা হয়। এছাড়াও চিকিৎসা পরিভাষায় গ্যাংরেনোনিয়ারালজিয়া নামেও পরিচিত।
খুব ঠান্ডা কোনও আইসক্রিম খেলে কিংবা হঠাৎ করে মুখে যদি খুব শীতল বাতাস এসে ঝাপটা মারে তবেই কিন্তু এই সমস্যা বেশি হয়। তবে এই সমস্যা ৩০-৪০ শতাংশের মধ্যে দেখা যায়। বেস কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যাঁরা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের এই ব্রেন ফ্রিজ হয়ে যাওয়ার সমস্যায় বেশি ভুগতে হয়।
ব্রেন ফ্রিজের লক্ষণ
হঠাৎ করেই কপালে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। নির্ভর করে আপনি কত ঠাণ্ডা আইসক্রিম বা অন্য কোনও ঠাণ্ডা খাবার খেয়েছেন তার উপর। আর এই ব্যথা কয়েক সেকেন্ড থেকে এক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের মত মাথাব্যথা, পেটে অস্বস্তি, বমি ভাব এসবও থাকতে পারে। খুব বেশি শব্দ বা উজ্জ্বল আলোতে এই সমস্যা আরও অনেক বেশি হয়।
কেন এরকম হয়
হঠাৎ করে মুখে ঠান্ডা কোনও খাবার পুরে দিলে উপরের তালু স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি ঠান্ডা হয়ে যায়। এদিকে মস্তিষ্ক মুখকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আনার জন্য রক্ত পাঠায়। দ্রুত আরও রক্ত পাঠাতে হবে বলে আশপাশের রক্তনালীগুলির দ্রুত সংকোচন- প্রসারণ হতে থাকে। আর হঠাৎ এই আকৃতি পরিবর্তন হলেই কিন্তু বেশি ব্যথা হয়।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন
যদি মনে হয় যে জ্বর বাড়ছে সঙ্গে মাথাব্যথা, হাঁচি, কাশির সমস্যা রয়েছে, একটু পরিশ্রম করলেই মাথাব্যথা করছে, গর্ভাবস্থায় মাথাব্যথা এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন- তাহলে কিন্তু অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাবেন। কারণ এই সবই হল ব্রেন ফ্রিজ হয়ে যাওয়ার লক্ষণ।
কী ভাবে এর প্রতিকার করবেন
অন্য যে কোনও মাথা ব্যথার তুলনায় এই ব্রেন ফ্রিজের চিকিৎসা তুলনায় সহজ। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির মতে, যদি বুঝতে পারেন যে এই সমস্যা হচ্ছে তাহলে কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলবেন।
*গরম জল খেতে হবে।
*ঠাণ্ডা কোনও কিছু খাওয়া যাবে না।
*খুব গরম এবং খুব ঠাণ্ডা কোনও কিছু খাবেন না।
*বুড়ো আঙুল বা জিহ্বা দিয়ে মুখের উপরের অংশ স্পর্শ করুন।
*ঠাণ্ডা খাবার এবং পানীয়তে চুমিক দিন।
*গিলে ফেলার আগে খাবার গরম করে নিন।
*ঠাণ্ডা বাতাস যাতে মুখে না ঢোকে তার জন্য স্কার্ফ বা ফেস মাস্ক ব্যবহার করুন।
*ঠাণ্ডা কিছু খাওয়ার সময় যদি আপনি আপনার কপালে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে আপনার ব্রেন ফ্রিজের সমস্যা হতে পারে। তাই খুব ঠাণ্ডা বা আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন। ব্যথার সঙ্গে যদি কোনো সর্দি-কাশি না থাকে, তাহলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।