Math Dyslexia: অঙ্ক দেখলেই ভয়, সহজ প্রশ্নেরও সমাধান করতে পারেন না? ম্যাথ ডিসলেক্সিয়ার শিকার নয় তো…
Mental Health: অঙ্ক বুঝতে সমস্যা হলে বা অঙ্কে ভীতি তৈরি হলে মূল সমস্যা হয় স্কুলে। অনেকেই ভয় পায়, অনেকেই হীনমন্যতায় ভোগেন
তারে জামিন পারের সেই ছোট্ট ঈশানকে মনে আছে? যার কোনও কথাই বোঝা যেত না। সে হিন্দি, ইংরেজি, অঙ্ক যাই-ই হোক না কেন। প্রতিটা শব্দ, অক্ষর তার মাথায় ধাক্কা খেত তবে কিছুই কিন্তু বোঝা যেত না। ঈশান যে রোগে ভুগছিল তা হল ডিসলেক্সিয়া। ছোট থেকে প্রচুর বাচ্চা এই সমস্যায় ভোগে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা তা ধরতে পারেন না। তবে এই সিনেমা অনেক মানুষের চোখ খুলে দিয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা শুরু করতে পারলে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায় ডিসলেক্সিয়া থেকে।
ডিসলেক্সিয়া এমন একটি সমস্যা যা ভাষাভিত্তিক পড়াশোনার ক্ষেত্রে অক্ষমতা সৃষ্টি করে। এর অন্যান্য নানান লক্ষণও রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ডিসলেক্সিয়া অ্যাসোসিয়েশনের মতে মোট জনসংখ্যার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ব্যক্তি এর দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। এর নিরাময় করা সম্ভব না-হলেও, চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ব্যক্তি কোন ধরনের ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত, তার ওপর নির্ভর করে চিকিৎসা পদ্ধতি।
কোনও এক অজানা কারণে ছোট থেকে অধিকাংশ বাচ্চা অঙ্কে ভয় পায়। আর এই অঙ্কভীতি কাটানোর দায় যেমন অভিভাবকের থাকে তেমনই শিক্ষকেরও থাকে। সোজা যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগের অঙ্ক কষতে গিয়ে যদি মাথা থেকে ঘাম ঝরে যায়, অহেতুক চিন্তা-ভয় মনে গ্রাস করে বসে তাহলে বুঝতে হবে আপনার সন্তান বা সেই ব্যক্তি ম্যাথস ডিসলেক্সিয়ার শিকার। এই সমস্যাটিকে ডিসক্যালকুলিয়াও বলা হয়।পাবমেড সেন্ট্রালের একটি গবেষণা অনুসারে, ১০০ শিশু, কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৩ থেকে ৭ জনের ডিসক্যালকুলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটাও যে একরকম রোগ, সমস্যা তা ধরাই পড়ে না। কারণ সহজ অঙ্কে ভুল বা গুন-ভাগ করতে না পারলেই আমরা ধরে নিই যে শিশুটি অঙ্কে খারাপ। কোনও ভাবেই অঙ্কে তার উন্নতি হচ্ছে না।
ম্যাথস ডিসলেক্সিয়া কি?
ম্যাথস ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের গাণিতিক দক্ষতা খুব কম। এই অক্ষমতায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের গণিতের ধারণা বুঝতে অসুবিধা হয়। তারা সংখ্যাসূচক তথ্য বোঝার মধ্যে জড়িয়ে পড়ে। অঙ্কে যদি সংখ্যার হিসেব বোঝা না যায় তাহলে কিছুতেই সমাধান করা যায় না। বিষয়টির মধ্যে কোনও কঠিন বিজ্ঞান নেই। বা অঙ্ক খুব কঠিনও নয়। সহজ যোগ, বিয়োগে সমস্যা হলে তখন তা সমস্যা-ই। এতে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই।
ম্যাথস ডিসলেক্সিয়াতে আক্রান্ত হলে যে সব সমস্যা হয়
অঙ্ক বুঝতে সমস্যা হলে বা অঙ্কে ভীতি তৈরি হলে মূল সমস্যা হয় স্কুলে। অনেকেই ভয় পায়, অনেকেই হীনমন্যতায় ভোগেন। আর এই ভয় থেকেই তখন সহজ সমস্যার সমাধান করতে পারে না। গণিতের চিহ্ন বুঝতে সমস্যা হয়। অঙ্ক সংক্রান্ত মজার কোনও খেলাতেও অংশগ্রহণ করতে চায় না।
এবার কোনও শিশু অঙ্ক পারে না নাকি করতে চায় না এটা প্রাথমিক পর্যায়ে বোঝা খুব মুশকিল। কোনও বিষয়ে ভীতি থাকলে সেখান থেকে সমস্যা হতে পারে। আর তাই ম্যাথস ডিসলেক্সিয়া চট করে ধরা পড়ে না। তবে সংখ্যা চিনতে না পারা এবং অনেকক্ষণ ধরে যোগ, বিয়োগ গুণের হিসেব করতে না পারলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কেন হয় এই সমস্যা?
গণিত ডিসলেক্সিয়ার প্রকৃত কারণ নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে মনে করা হয় জেনেটিক্যালি এই সমস্যা বাচ্চার মধ্যে আসে। এ ছাড়াও ছোটবেলা থেকেই গণিতের ভয় এই রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
চিকিৎসা
অঙ্কে ভয় পাওয়া, অঙ্কের নামে গায়ে জ্বর একটি মানসিক সমস্যা। এই সমস্যার কোনও চিকিৎসা নেই। যাদের অঙ্কে ভীতি রয়েছে, অঙ্ক কষতে বেশি সময় লাগে তাদের আরও একটু যত্ন নিয়ে পড়াতে হবে। বোঝাতে হবে। অনেক বেশি অনুশীলন করতে হবে। তবেই হবে এই সমস্যার সমাধান।