Quit Tobacco App: সিগারেটের অভ্যাস ছাড়ার প্ল্যান করছেন? কতটা কার্যকরী হু-এর ‘ক্যুইট টোব্যাকো’ অ্যাপ?

Smokers: ধূমপান ছাড়ার মিনিট ১০-এর মধ্যে ফের বাধ্য হয়ে সিগারেট ধরান বহু ব্যক্তি! কেন সিগারেট ছাড়ার পর এমন টান তৈরি হয়? কী আছে সিগারেটে? কীভাবে ছাড়বেন এই ভয়ঙ্কর মারক নেশা?

Quit Tobacco App: সিগারেটের অভ্যাস ছাড়ার প্ল্যান করছেন?  কতটা কার্যকরী হু-এর ‘ক্যুইট টোব্যাকো’ অ্যাপ?
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 01, 2022 | 7:50 AM

সিগারেট বা বিড়িতে থাকে তামাক (Tobacco)। তামাকে থাকে নিকোটিন (Nicotine)। এই নিকোটিনের কারণেই ধূমপানে (Smoking) বা তামাকে আসক্তি তৈরি হয়। জানলে অবাক হবেন গুটকা সেবন, গুড়াকু দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা, জর্দা ব্যবহারও কিন্তু তামাক সেবনের (Tobacco Consumption) অধীনেই পড়ে। এই ধরনের বস্তুতেও থাকে নিকোটিন।

কেন ধূমপান ও তামাক ব্যবহার আনন্দ দেয়?

নিকোটিন মস্তিষ্কে দুই ধরনের রাসায়নিকের ক্ষরণ বাড়ায়। ‘ডোপামিন’ এবং ‘নরঅ্যাড্রিনালিন’। এই কেমিক্যাল দু’টি একজন ব্যক্তির মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে। এই কারণেই অনেকে বলেন, সিগারেট খাওয়ার পর আনন্দ পাচ্ছেন ও কাজে মনোযোগ দিতে পারছেন। প্রথমদিকে সামান্য মাত্রার নিকোটিনেই এই প্রভাব পাওয়া গেলেও, পরবর্তীকালে ব্রেন ওই সামান্য মাত্রার নিকোটিনে অভ্যস্ত হয়ে যায়। তাই আগের মতো আনন্দ পেতে হলে আরও বেশি মাত্রায় নিকোটিন গ্রহণ করতে হয়। এই কারণেই ধূমপায়ীরা নিজেকে একটি বা দু’টি সিগারেটে বেঁধে রাখতে পারেন না! দিন দিন সংখ্যা বাড়তেই থাকে। একবার আসক্ত হয়ে যাওয়ার পর তাই ধূমপায়ীরা চাইলেও ধূমপান ছাড়তে পারেন। কারণ ধূমপান ছাড়ার পরেই তাদের মধ্যে সিগারেটের নিকোটিনের জন্য প্রবল চাহিদা তৈরি হয়।

ধূমপান ছাড়লে কী হয়?

ধূমপায়ী ব্যক্তি তাও প্রথম একটা দিন ধূমপান ছাড়াও কাটিয়ে দেন। তাই সিগারেট ছাড়ার পরে প্রথমদিন সেভাবে কোনও সমস্যা হয় না। কারণ তখনও রক্তে কিছুটা নিকোটিন রয়ে যায়। সমস্যা হয় তার পরদিন থেকে। রক্তে নিকোটিনের ঘাটতি শুরু হয়। মস্তিষ্কের ‘প্লেজার সার্কিট’ বা যে অংশ থেকে আমাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণ হয়, সেখানে নিকোটিনের জন্য তৈরি হয় প্রবল চাহিদা। প্রথম তিনদিনের মাথায় সিগারেটের চাহিদা তুঙ্গে ওঠে। বেশিরভাগ লোক প্রথম তিনদিনেই হার মেনে নেন। তাই এই তিনটে দিন লড়াই করাটাই সবচাইতে কঠিন। তিনটে দিন পেরিয়ে গেলে ধূমপানের জন্য চাহিদা কমতে থাকে। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসা যায়।

ধূমপান ছাড়ার উপায়

নিকোটিন প্যাচ: নিকোটিন প্যাচ নিয়ে নানা দেশে ছয় মাসের স্টাডি হয়েছে। স্টাডিতে দেখা গিয়েছে ৩০-৭০ শতাংশেরও বেশি ব্যক্তি সফলভাবে ছয় মাস সরাসরি তামাক সেবন ছাড়া থাকতে পারছেন।

কীভাবে ব্যবহার করবেন নিকোটিন প্যাচ? এই প্যাচ দেখতে ব্যান্ডএডের মতো। শুধুমাত্র নিকোটিন পোরা থাকে ওই প্যাচে। আমাদের ত্বক ধীরে ধীরে প্যাচ থেকে নিকোটিন শোষণ করে যা রক্তে মেশে। নির্দিষ্ট মাত্রার নিকোটিন পোরা থাকে প্যাচে। কে কোন মাত্রার প্যাচ ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করে ওই ব্যক্তি সারাদিনের কতগুলি সিগারেট বা বিড়ি খান তার উপর। সাধারণত ১০টির বেশি সিগারেট খেলে ২১ মিলিগ্রাম নিকোটিন প্যাচ ব্যবহার দিয়ে তামাক ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়।

নিকোটিন গাম: সিগারেট ছাড়ার পর প্রতিক্ষণে সিগারেট ধরানোর কথা মনে হয়। তবে যতবারই ধূমপান করার ইচ্ছে জাগে ততবারই অল্প অল্প করে জলপান করতে হয় ও সময়টাকে আরও পিছিয়ে দিতে হয়। মিনিট দুই-তিন পরে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছে চলে যায়। ফের মনে পড়ে। তখনও একইভাবে অল্প অল্প জল পান করতে হয়। তবে জলপানের সঙ্গে নিকোটিন গামও ব্যবহার করা যায়। তাতে ধূমপান ত্যাগজনিত কষ্ট কম হয়। মনকেও অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখা যায়।

ক্যুইট টোব্যাকো অ্যাপ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে ‘কুইট টোব্যাকো অ্যাপ’ প্রকাশ করা হয়েছে। চিবিয়ে খাওয়া বা ধোঁয়ার আকারে তামাক সেবন— সব ধরনের নিকোটিন ব্যবহার ত্যাগ করতে সাহায্য করবে এই অ্যাপ। এই অ্যাপ একজন তামাক আসক্ত ব্যক্তির তামাক সেবনে উৎসাহ জোগানোর বিষয়গুলিকে চিহ্নিত করে। একইসঙ্গে তামাকে আসক্তের জন্য কিছু লক্ষ্যমাত্রা স্থির করবে। এছাড়া ক্রেভিং বা তামাকের চাহিদা এড়াতে সহায়তা প্রদান করবেন।

নিকোটিন ছাড়তে নিকোটিন প্যাচ, গাম, অ্যাপ জরুরি?

মানসিক জোরই বড় কথা। মনের জোর থাকলে একদিনের সিদ্ধান্তে তামাক ছেড়ে দেওয়া যায়। কারণ তামাক ত্যাগের পর ‘উইথড্রল সিম্পটম্পস’ মোটেই মদ বা ড্রাগস-এর উইথড্রল সিম্পটম্পস-এর মতো নয়। ধূমপান ত্যাগের পর যে অস্থিরতা বা অনিদ্রার সমস্যা তৈরি হয় তার সঙ্গে সহজেই মোকাবিলা করতে পারেন একজন দৃঢ় মানসিকতার ব্যক্তি।

কেন ছাড়বেন তামাক?

মুখগহ্বরের ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, ফুসফুসের দীর্ঘকালীন অসুস্থতা, হার্টের রোগ, স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। প্রতিবছর ৮০ লক্ষ মানুষ তামাক সেবনের কারণে মারা যান। • জর্দা, পান-মশলা, গুটকা, খৈনি থেকে মুখে একধরনের ঘা তৈরি হয়। এই ক্ষত ক্যান্সার হওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। • ধূমপানের ফলে ফুসফুসে ঢোকে একাধিক ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর পদার্থ যথা কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড ইত্যাদি। এছাড়া তামাক নিজে পুড়ে তৈরি করে টার। এই সমস্ত ক্ষতিকারক উপাদান ফুসফুসে ঢুকে অঙ্গটিকে ধীরে ধীরে অকেজো করে তুলতে থাকে। ফুসফুসের কোষগুলি শক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে কার্বন ডাইঅক্সাইড ত্যাগ ও অক্সিজেন গ্রহণের ক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে বাতাস ঢুকলেও ফুসফুস প্রসারিত হতে পারে না। রক্তেও অক্সিজেন পৌঁছয় না। ফলে তৈরি হয় শ্বাসকষ্টের সমস্যা। এমনকী ধূমপান খুব ভয়ঙ্করভাবে মুখ ও মুখগহ্বরের নান অংশের প্রবল ক্ষতি করে। ফলে সাইনুসাইটিস, ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কোনিউমোনিয়া হওয়ার ভয় থেকে যায়। সঙ্গে দেখা দেয় সর্বক্ষণের খুশখুশে কাশি।

আরও পড়ুন: Pet care: স্ট্রবেরি থেকে শসা, স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস হিসেবে পোষ্যকে কী কী দেবেন, জানুন