কালো ও সাদার থেকেও মারাত্মক এই হলুদ ছত্রাক! উপসর্গ কী, কারা আক্রান্ত হতে পারেন, সবটা জেনে নিন…

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাস, মিউকরমাইসিস ও হোয়াইট ছত্রাকের থেকেও বহুগুণে সাংঘাতিক ও উপেক্ষা করলে এর কারণে মারাত্মক রোগের আকার ধারণ করতে পারে।

কালো ও সাদার থেকেও মারাত্মক এই হলুদ ছত্রাক! উপসর্গ কী, কারা আক্রান্ত হতে পারেন, সবটা জেনে নিন...
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Updated on: May 25, 2021 | 1:08 PM

মিউকরমাইকোসিস আর হোয়াইট ফাঙ্গাসে রক্ষে নেই, উদ্বেগ বাড়িয়ে হাজির হয়েছে ইয়েলো ফাঙ্গাস। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের এক ব্যক্তির শরীরে এই ছত্রাকের উপস্থিতি় পাওয়া গিয়েছে। গাজিয়াবাদ হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে সেটি মারাত্মক রোগের উপসর্গ হিসেবে পাওয়া না গেলেও এখনই সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছেন চিকিত্‍সকবিজ্ঞানীরা।

ইয়েলো ফাঙ্গাসের কারণ

সাধারণত নোংরা খাবার, বাড়ির চারপাশ নোংরা করে রেখে দেওয়া, প্রতিনিয়ত বাড়ির সমস্ত জিনিস পরিষ্কার না করা, নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না রাখার কারণে হয়ে পারে ইয়েলো ফাঙ্গাস। তাই এই সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে যতটা সম্ভব বাড়ি ও বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। বাসি ও পুরনো খাবার ফেলে দিন। বাড়িতে মল-মূত্র সরিয়ে পরিষ্কার করুন, যাতে কোনও মারাত্মক ব্যকটেরিয়া না জন্মাতে পারে। অন্যদিকে আদ্রতার কারণেও বাড়তে পারে ইয়েলো ফাঙ্গাসের প্রকোপ। বিশেষজ্ঞদের কথায়, বাড়ির মধ্য ও চত্বরে আদ্রতা বেশি থাকলে সেখানে ছত্রাক ও ব্যকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধিতে দ্রুত সাহায্য করে। মোটামুটি ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ আদ্রতা থাকলে তা সুরক্ষিত বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: জুনে ট্রায়াল, বছরের শেষেই মিলতে পারে শিশুদের জন্য কোভ্যাক্সিন, জানাল ভারত বায়োটেক

ইয়েলো ছত্রাকের উপসর্গ

অলসতা, খাওয়ায় অরুচি বা একেবারেই খিদে না পাওয়া, পাশাপাশি কম সময়ের মধ্যে বেশ খানিকটা ওজন কমে যাওয়া। এছাড়া গুরুতর পর্যায়ে চলে গেলে ত্বকের উপর ফোঁড়া বা ঘা তৈরি হতে পারে। তা থেকে পুঁজ বেরও হতে পারে। শরীরে কোথাও ক্ষত থাকলে তা আস্তে আস্তে সেরেও ওঠা বা না শুকনো, অপুষ্টি, চোখের সমস্যা. চোখ বসে যাওয়া এমনকি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে বিকল হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। শেষমেশ শরীরের টিস্যুগুলি মরে গিয়ে পচন ধরতে শুরু করে।

কারা বেশি আক্রান্ত হতে পারেন

বিজ্ঞানীদের একাংশের বক্তব্য, হোয়াইট ফাঙ্গাল বা ইয়েলো ফাঙ্গাসের সংক্রমণে কারা মারাত্মক আক্রান্ত হতে পারেন তা নিয়ে বিশেষ প্রমাণ হাতে আসেনি। তবে যাঁদের শরীর দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ, রোগপ্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেক কম, তাঁরা এই হলুদ ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে সাবধান হতে পারেন। এই ছত্রাকের সংক্রণের ফলে কোনও কোন উপসর্গগুলি নির্দিষ্ট ভাবে হতে পারে, তা এখনই বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও যাঁদের কো-মোর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে স্টেরয়েড ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধ সেবন করলে এই অসুখ ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরে। উপরের উপসর্গগুলি দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কারণ সময় পেরিয়ে গেলে এই ছত্রাকের সংক্রমণ ঠেকানো মুশকিল।

আরও পড়ুন: বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় মিউকরমাইকোসিস, জানালেন এইমসের চিকিৎসক

চিকিত্‍সা আছে কি?

চিকিত্‍সকদের মতে, এই রোগের উপসর্গ দেখে যদি আগেই যদি ইয়েলো ফাঙ্গাসের মতো মারাত্মক অসুখ চিহ্নিত করা যায় তাহলে তা সারিয়ে তোলা সম্ভব। এছাড়া অ্যাম্পোটেরিসিন বি ইঞ্জেকশন দিয়ে ছত্রাকের বৃদ্ধি আটকানো সম্ভব। তবে কৃষ্ণ ও হোয়াইট ফাঙ্গাসের থেকে ভয়ংকর হওয়ায় চিন্তা বাড়িয়েছে চিকিত্‍সকদের। তাঁদের আশঙ্কা, এই ছত্রাক সম্বন্ধে এখনই পর্যাপ্ত সতর্ক তৈরি না হলে, অতিমারিরর মতো কঠিন পরিস্থিতিতেআরও এক সাংঘাতিক রোগের মহামারী দেখা দিতে পারে। যার পরিণাম মোটেই ভাল হতে পারে না। তাই বিভিন্ন রঙের ও বিভিন্ন নামের ছত্রাকে থেকে বাঁচতে হলে সতর্ক থাকতে হবে। সঠিক নিয়ম পালন করা দরকার। একটু অসাবধানতাতেই বিপদ ঘটে যেতে পারে।