জাতীয় পশুর মর্যাদা পাক গরু, গো-রক্ষায় মৌলিক অধিকার : এলাহাবাদ হাইকোর্ট

Cow Slaughter : এলাহাবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রের উচিত গরুকে জাতীয় পশু করার জন্য সংসদে বিল পেশ করা। যাঁরা গরুর ক্ষতি করার কথা বলবে, তাঁদের জন্য কতা আইনি ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে পর্যবেক্ষণে।

জাতীয় পশুর মর্যাদা পাক গরু, গো-রক্ষায় মৌলিক অধিকার : এলাহাবাদ হাইকোর্ট
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 02, 2021 | 2:42 PM

প্রয়াগরাজ : গরুকে জাতীয় পশুর মর্যাদা দেওয়া উচিৎ। শুধু তাই নয়, গরুরা যাতে নিরাপদে থাকতে পারে, তা নিশ্চিত করা হিন্দুদের মৌলিক অধিকার হওয়া উচিত। গোহত্যায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তির জামিনের আবেদেন খারিজ করে পর্যবেক্ষণে জানায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের। আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, যখন কোনও দেশের সংস্কৃতি ও বিশ্বাসে আঘাত লাগে, তখন সেই দেশ দুর্বল হয়ে যায়।

উত্তরপ্রদেশের সম্বল জেলার বাসিন্দা জাভেদকে গোহত্যা-দমন আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেছিলেন জাভেদ। জামিনের আবেদন খারিজ করে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর কুমার যাদব তাঁর ১২ পাতার রায়ে জানিয়েছেন, আবেদনকারী গরুটি চুরি করার পর সেটিকে গলা কেটে হত্যা করেছে। তারপর তার মাংস কেটে নিয়েছে।

বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, অভিযুক্তের এটিই প্রথম অপরাধ নয়। এর আগেও সে গোহত্যা করেছে, যা সমাজে সম্প্রীতির পরিবেশকে নষ্ট করেছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্ত যদি এখন ছাড়া পেয়ে যায়, তাহলে সে বাইরে গিয়ে আবারও সেই একই অপরাধ করবে। তাতে আবার সমাজের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হবে।

এলাহাবাদ হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে আরও জানিয়েছে, এই মৌলিক অধিকার যাঁরা গরু খান, তাঁদের জন্য নয়। বরং যাঁরা গরুর পুজো করেন, যাঁরা আর্থিকভাবে গরুর উপর নির্ভরশীল, এই মৌলিক অধিকার তাঁদের জন্য। কারণ, জীবনের অধিকার সবসময় হত্যার অধিকারের থেকে আগে। আর গোমাংস খাওয়া কখনও মৌলিক অধিকার হতে পারে না।

শুধু তাই নয়, গোহত্যা বন্ধ করার জন্য আরও একধাপ এগিয়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রের উচিত গরুকে জাতীয় পশু করার জন্য সংসদে বিল পেশ করা । যাঁরা গরুর ক্ষতি করার কথা বলবে, তাঁদের জন্য কতা আইনি ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে পর্যবেক্ষণে। যাঁরা গোশালা বানিয়ে রেখেছেন, গরুর সুরক্ষার জন্য মুখে বড় বড় কথা বলছেন, অথচ কাজের কাজ কিছু করছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, গরুর সুরক্ষার অজুহাতে তাঁরা শুধুই নিজেদের আখেড় গোছাচ্ছেন।

আদালত জানিয়েছে, গরুর সুরক্ষা নিশ্চিত করা শুধুমাত্র একটি ধর্মের বিষয় নয়। গরু ভারতের সংস্কৃতি। ভারতের সংস্কৃতি রক্ষা করা দেশের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে যেখানে আমরা আমাদের দেশের সংস্কৃতি ভুলে গিয়েছি। বিদেশি শক্তি আমাদের আক্রমণ করেছে আর আমাদের দাসে পরিণত করেছে। আজ যদি আমরা জেগে না উঠি, তাহলে আমাদের মনে রাখতে হবে আফগানিস্তানে তালিবানি কবজার কথা, আফগানিস্তানের পরিণতির কথা।

গরুর গুরুত্ব বর্ণনায় আদালতের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, শুধু যে হিন্দুরাই গরুর গুরুত্ব বুঝেছে তা নয়, যে মুসলিম শাসকরা ভারতে রাজত্ব করে গিয়েছেন, তাঁরাও গরুর গুরুত্ব অনুধাবন করেছিলেন। বাবর, হুমায়ূণ এবং আকবর ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গোহত্যা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। মাইসোরের হায়দার আলিও গোহত্যার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছেন। আরও পড়ুন : মন্দিরের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে গরুর মাংস বিক্রি করা যাবে না, বিল আনছে অসম সরকার