Kerala High Court: ধর্ম নির্বিশেষে বাবার কাছ থেকে বিয়ের খরচ পাওয়া প্রত্যেক অবিবাহিত মেয়ের অধিকার: কেরালা হাইকোর্ট

Kerala High Court: ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেক অবিবাহিত কন্যার তাঁর বাবার স্থাবর সম্পত্তি থেকে বিবাহের জন্য যুক্তিসঙ্গত ব্যয় পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সম্প্রতি, এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করল কেরালা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

Kerala High Court: ধর্ম নির্বিশেষে বাবার কাছ থেকে বিয়ের খরচ পাওয়া প্রত্যেক অবিবাহিত মেয়ের অধিকার: কেরালা হাইকোর্ট
তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিল কেরল হাইকোর্ট
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 18, 2023 | 9:15 PM

তিরুবনন্তপুরম: ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেক অবিবাহিত কন্যার তাঁর বাবার স্থাবর সম্পত্তি থেকে বিবাহের জন্য যুক্তিসঙ্গত ব্যয় পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সম্প্রতি, তার বাবার থেকে বিবাহের খরচ আদায়ের জন্য কেরালা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন দুই খ্রিষ্টান মহিলা। সেই, মামলার রায়দানের সময় এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছে বিচারপতি অনিল কে নরেন্দ্রন এবং বিচারপতি পি জি অজিতকুমারের সমন্বয়ে গঠিত কেরালা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়েছে, “একজন অবিবাহিত কন্যার তাঁর বাবার কাছ থেকে তাঁর বিবাহের বিষয়ে যুক্তিসঙ্গত ব্যয় পাওয়ার অধিকারের উপর কোনও ধর্মীয় ছায়া থাকতে পারে না। এটি ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি অবিবাহিত কন্যার অধিকার। এই ক্ষেত্রে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য থাকতে পারে না।” এই ক্ষেত্রে ১৯৫৬ সালের হিন্দু দত্তক ও রক্ষণাবেক্ষণ আইনের বিধানগুলি থেকে সাদৃশ্য গ্রহণ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে আদালত।

বাবার সঙ্গে মায়ের বিচ্ছেদের পর থেকে মায়ের তাদের মায়ের সঙ্গেই থাকতেন আবেদনকারী দুই খ্রিষ্টান মহিলা। কেরলের পালাক্কাড়ের এক পারিবারিক আদালতে তাঁরা, তাঁদের বিবাহের খরচের জন্য বাবার স্থাবর সম্পত্তি থেকে ৪৫,৯২,৬০০ টাকা দাবি করেছিলেন। তাঁরা দাবি করেন, তাঁদের বাবা তাঁদের মায়ের সোনার গয়না এবং তাদের মা ও তাঁদের পারিবারিক সদস্যদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অন্যান্য আর্থিক সাহায্য বিক্রি করে জমি কিনেছিলেন এবং সেখানে একটি বাড়িও তৈরি করেছিলেন। পারিবারিক আদালত বলেছিল, আবেদনকারীরা বিবাহের জন্য শুধুমাত্র ন্যূনতম প্রয়োজনীয় খরচ দাবি করার অধিকারী। তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ৭,৫০,০০০ টাকাই যথেষ্ট।

আবেদনকারীদের আইনজীবী জানিয়েছেন, আবেদনকারীদের বিবাহের প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণের সময় পারিবারিক আদালত তাদের সামাজিক অবস্থান বিবেচনা করেনি। এছাড়া, আবেদনকারীদের বয়স যথাক্রমে ২৬ এবং ২১ বছর। তাঁরা উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন। তারও মোটা খরচ আছে। তাঁদের বাবা তারও একটি পয়সাও দেননি। পাশাপাশি তাঁদের বাবা নিজের চিকিত্সার খরচের জন্য সম্পত্তি বিক্রি করতে হয়েছে বলে মিথ্যা দাবি করেছেন।

অন্যদিকে, আবেদনকারীদের বাবার পক্ষের আইনজীবী যুক্তি দেন, তাঁর স্ত্রী এবং কন্যারা সকলেই খ্রিস্টান পেন্টেকস্টের অনুসারী। এই সম্প্রর স্বর্ণ, রৌপ্য বা কোনও ধরণের ধাতু সহ কোনও অলঙ্কার ব্যবহার করার অভ্যাস নেই। তাই অলঙ্কার বাবদ তাঁকর মক্কেলের কাছ থেকে অর্থ দাবি করা যায় না। আবেদনকারীরা কাল্পনিক খরচ দেখিয়েছেন। তাই তাঁদের বাবার কাছ থেকে তাঁরা একেকজনের জন্য ২২,৯৬,৩০০ টাকা করে দাবি করতে পারেন না।

আদালত অবশ্য শেষ পর্যন্ত আবেদনকারীদের বিবাহের খরচ বাবদ অর্থের দাবি মেনে নেয়। তবে, আবেদনকারীদের শিক্ষার খরচ বা অন্যান্য খরচের দাবি মেনে নেয়নি আদালত। পেন্টেকোস্টাল ধর্মবিশ্বাসের কারণে আবেদনকারীদের প্রত্যেকের জন্য ৫০টি করে সোনার গয়ন কেনা বাবদ যে ১৮,৯৬,৩০০ টাকার প্রয়োজনীয়তা দেখানো হয়েছিল, তাও মেনে নেয়নি আদালত। শেষ পর্যন্ত আদালত জানায়, আবেদনকারীদের বিবাহের ক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত খরচ মেটানোর পরিমাণ ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।