‘কে নেতা ভুলে যান’, ব্যক্তি-স্বার্থ দূরে সরাতে বললেন মমতা, কেন্দ্রের কাছে ১১ দফা দাবি বিরোধীদের
Mamata Banerjee: আগামী মাসের ২০ তারিখ থেকে গোটা দেশে কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র করবে বলে জানিয়েছে বিরোধীরা।
নয়া দিল্লি: বিজেপি বিরোধী জোটে শান দিতে মোট ২০ টি দল ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে হওয়া বৈঠকে অংশ নিয়েছিল। সেখানেই সম্মিলিতভাবে মোট ১১ টি দাবি পেশ করা হয় কেন্দ্রের সামনে। সূত্রের খবর, সমস্ত দল মিলে আগামী মাসের ২০ তারিখ থেকে গোটা দেশে কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র করবে বলে জানিয়েছে। যৌথভাবে গোটা দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। আজকের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বৈঠকে অবশ্যে অংশ নেয়নি সপা এবং বসপা। তবে তৃণমূল মনে করছে, আজকের বৈঠকের মাধ্যমে ২০২৪-এর লক্ষ্যে একটা প্রক্রিয়া অন্তত শুরু হল।
যখনই বিরোধী জোটের কথা আসে, তখন পাল্লা দিয়ে আরেকটা প্রশ্নেরও উত্থাপন হয়। জোটের মুখ বা প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী কে? সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে সেই প্রশ্নটাই ভুলে যেতে বলেছেন মমতা। “কে নেতা, তা ভুলে যান। আসুন ব্যক্তিগত স্বার্থকে আমরা একপাশে রাখি। মানুষই আমাদের নেতৃত্ব দেবে”, বৈঠকে এমনটাই বলেন মমতা। অন্যদিকে, আজকের বৈঠকের পর একটি সম্মিলিত বিবৃতি প্রকাশ করে মোট ১১টি দাবি কেন্দ্রের নিকট তুলে ধরে অংশগ্রহণকারী ২০ টি রাজনৈতিক দল।
একনজরে দেখে নিন কী কী দাবি জানানো হল…
১. দেশে করোনা টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে টিকা আমদানি করে সার্বজনীন টিকাকরণের গতিবেগ বাড়াতে হবে। জনস্বাস্থ্য পরিষেবা সম্প্রসারণের মাধ্যমে কোভিডে স্বজন হারানো পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য করতে হবে।
২. আয়কর দেয় না, এমন প্রত্যেক পরিবারকে মাসে সাড়ে ৭ হাজার টাকা অর্থসাহায্য করতে হবে।
৩. পেট্রোপণ্যের উপর থেকে সমস্ত বর্ধিত শুল্ক এবং অতিরিক্ত কর প্রত্যাহার করতে হবে।
৪. কৃষক বিরোধী বিতর্কিত ৩টি কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে এবং চাষিদের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করতে হবে।
৫. সরকারি উদ্যোগে বেসরকারিকরণ, এবং লেবার কোড বাতিল করে শ্রমিকদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
৬. ক্ষুদ্র শিল্পক্ষেত্রগুলিকে চাঙ্গা করতে আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে হবে, বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে হবে, সরকারি দফতরে শূন্যপদ পূরণ করতে হবে।
৭. মনরেগার কাজের সময়সীমা বাড়িয়ে ২০০ দিন করতে হবে। মজুরি বাড়াতে হবে। শহরাঞ্চলের জন্যও রোজগারের একই ধরনের কোনও প্রকল্পের সূচনা করা হোক।
৮. অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, এবং পড়ুয়াদের টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হোক যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি দ্রুত খোলা যায়।
৯. পেগাসাস স্পাইওয়ার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে বিচারবিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা করা হোক। একই ভাবে রাফাল চুক্তি নিয়েও উচ্চপর্যায়ের তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।
১০. দানবীয় ইউপিএ ধারায় ভীমা কোরেগাঁও মামলা এবং সিএএ বিরোধী আন্দোলনের কারণে যাদের জেলবন্দি করা হয়েছে, তাঁদের মুক্তি দেওয়া হোক। আইনের অপব্যবহার করে যে সাংবাদিকদের আটকে রাখা হয়েছে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হোক।
১১. জম্মু কাশ্মীরের সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হোক। সেখানে রাজ্যের তকমা ফিরিয়ে দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন করানোর ব্যবস্থা করা হোক। আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্য ২০২৪, একজোট হয়ে পরিকল্পিত ভাবে এগোতে হবে’, মমতা, শরদ, উদ্ধবদের বার্তা সোনিয়ার