Narendra Modi: ২০০৪-১৪ দেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে সবথেকে বড় কেলেঙ্কারির দশক: মোদী

Narendra Modi in Lok Sabha: প্রধানমন্ত্রী বললেন, '২০১৪ সালের আগে যে দশক ছিল, তা শেষ দশক হবে। ২০৩০-এর দশক গোটা বিশ্বের কাছে ভারতের দশক হিসেবে পরিচিত হবে।'

Narendra Modi: ২০০৪-১৪ দেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে সবথেকে বড় কেলেঙ্কারির দশক: মোদী
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ছবি সৌজন্যে - সংসদ টিভি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 08, 2023 | 6:52 PM

নয়া দিল্লি: সংসদের বাজেট অধিবেশনে (Parliament Budget Session)  বুধবার কড়া ভাষায় কেন্দ্রকে বিঁধেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। প্রশ্ন তুলেছেন আদানির সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে। কেন এলআইসির টাকা আদানির শেয়ারে? স্টেট ব্যাঙ্কের থেকে কেন আদানিকে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে? সেই সব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন রাহুল। বিদেশে আদানি গোষ্ঠীর লগ্নি থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আদানিদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস নেতা। কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন রাহুল। বলেছেন, ‘এটা ভারতের বিদেশনীতি নয়, আদানির বিদেশনীতি।’ বুধবার রাহুলের খোঁচার জবাব দিলেন প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। লোকসভায় বক্তব্য রাখার সময় বুঝিয়ে দিলেন, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ইউপিএ-১ ও ইউপিএ-২ জমানায় দেশ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ জর্জরিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘২০১৪ সালের আগে যে দশক ছিল, তা শেষ দশক হবে। ২০৩০-এর দশক গোটা বিশ্বের কাছে ভারতের দশক হিসেবে পরিচিত হবে।

নাম না করেই রাহুলের আক্রমণের জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। লোকসভায় মোদী বললেন, অতীতের সঙ্গে বর্তমানের যে ফারাক তৈরি হয়েছে, তা দেখে বিরোধীরা নিরাশ হয়ে পড়ছে। বিরোধীদের শান্তিতে ঘুমোতে পারছে না। সেই জন্যই এত সমস্যা বিরোধীদের। কী সেই ফারাক? তাও এদিন নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশের পরিস্থিতি কার্যত বেহাল হয়ে পড়েছিল বলেই বুঝিয়ে দিলেন তিনি। বললেন, ‘২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশের আর্থিক অবস্থা ধসে গিয়েছিল। দশ বছরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হার আকাশছোঁয়া হয়ে গিয়েছিল।’

২০০৪-২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে সবথেকে বেশি কেলেঙ্কারির দশক ছিল বলে এদিন লোকসভায় বললেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ইউপিএ-র ওই দশ বছর কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী ভারতের প্রতিটি কোণায় সন্ত্রাসবাদী হামলা চলেছে। প্রতিটি নাগরিক অসুরক্ষিত ছিলেন। চারিদিকে শুধু বলা হত, মালিকানাহীন পড়ে থাকা কোনও জিনিসে যেন হাত না দেওয়া হয়। দশ বছরে কাশ্মীর থেকে উত্তর-পূর্ব পর্যন্ত হিংসার শিকার হয়েছে দেশ। ওই দশ বছরে ভারতের আওয়াজ বিশ্বের আঙিনায় এতটাই দুর্বল ছিল, যে বিশ্ব তা শুনতেই পায়নি।’

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, দেশের ক্ষমতা আগেও ছিল, কিন্তু অতীতে ২০০৪-২০১৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন শাসক সেই সুযোগ হাতছাড়া করেছে। অতীতে ইউপিএ সরকারের আমলে যে দেশে একের পর এক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠে এসেছে, সেই কথাও এদিন লোকসভায় তুলে ধরেন মোদী। ইউপিএ জমানায় কখনও ২জি স্পেক্ট্রাম, কখনও কমনওয়েলথ গেমস, কখনও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ইস্যু, কখনও কয়লা কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ছিল দেশ, তাও বুঝিয়ে দেন তিনি।

নরেন্দ্র মোদী বললেন, ‘ইউপিএ-এর একটাই পরিচয়, প্রতিটি সুযোগকে তারা কঠিন করে তুলেছে। যখন, গোটা বিশ্বে তথ্য ও প্রযুক্তির যুগ, তখন তারা ২জি-তে ফেঁসে ছিল। সিভিল নিউক্লিয়ার ডিল নিয়ে যখন চর্চা হচ্ছিল, তখনও এরা ফেঁসে ছিল। যখন দেশের যুবসমাজকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার সময়, তখনও কমনওয়েলথ গেমস কেলেঙ্কারিতে গোটা দেশ বিশ্বের কাছে বদনাম হয়ে গিয়েছে। যখন গোটা বিশ্বের কাছে দেশের শক্তিসম্পদের পরিচয় করানোর কথা, তখন বিশ্বের কাছে চর্চায় উঠে এল দেশের ব্ল্যাকআউট, কয়লা কেলেঙ্কারি। যখন দেশের শক্তির পরিচয় দেওয়ার কথা, তখন উঠে এল প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে হেলিকপ্টার কেলেঙ্কারির কথা।’

বিরোধীরা অতীতে একাধিকবার একাধিক ইস্যুতে অভিযোগ তুলেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। বলা হয়েছে, ভারত দুর্বল হয়ে পড়ছে, ভারতের কথা কেউ শোনে না। মোদী জমানায় বিশ্বের দরবারে ভারতের গুরুত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। এদিন সেই সব অভিযোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধীরা এখন বলছেন, ভারত এখন এতটা মজবুত হয়ে গিয়েছে যে অন্য দেশগুলিকে ধমক দিয়ে সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করছে। প্রথমে এটা ঠিক করুন ভারত দুর্বল হল নাকি শক্তিশালী।’