Statue of Equality: বিকেলেই মাহেন্দ্রক্ষণ, ‘স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি’র উদ্বোধনের কথা নিজেই জানালেন প্রধানমন্ত্রী
Statue of Equality: ১০১৭ সালে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে জন্মগ্রহণ করেন সন্ত রামানুচার্য। তিনি গোটা ভারত ঘুরে সমাজের সমস্ত শ্রেণীর মানুষদের জীবনযাত্রাকে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন।
হায়দরাবাদ: অবশেষে অপেক্ষার অবসান, পর্দার আড়াল থেকে এবার গোটা বিশ্বের সামনে আসতে চলেছে ‘স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি’ (Statue of Equality)। একাদশ শতাব্দীতে গোটা দেশে পায়ে হেঁটে ঘুরে সাম্যের বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন সন্ত রামানুচার্য (Sant Ramanucharya)। তারই ১০০৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে এক বিশাল অনুষ্ঠানের। আজ, শনিবার তেলঙ্গনায় হায়দরাবাদের নিকটস্থ সামশাবাদে ২১৬ ফুট উচ্চতার সন্ত রামানুচার্যের মূর্তি উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)। বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম এই মূর্তিই স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি নামে পরিচিত। ৪৫ একর জমির উপর অবস্থিত এই মূর্তির উদ্বোধনে গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকেই শুরু হয়েছে অনুষ্ঠান, চলবে ১৪ ফেব্রুয়ারি অবধি। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব অংশ নেবেন এই অনুষ্ঠানে।
সন্ত রামানুচার্যের সহস্রাব্দী সমারোহ উপলক্ষ্যে ১৪ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি যজ্ঞের মাধ্যমে এই শুভ অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। আজ, ৫ ফেব্রুয়ারি তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও ও চিন্না জিয়া স্বামীর উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই মূর্তির উদ্বোধন করবেন। পরবর্তী সময়ে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও, তিনি আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ত রামানুচার্যের ১২০ কেজি সোনার মূর্তির উন্মোচন করবেন।
At 5 PM, I will join the programme to inaugurate the ‘Statue of Equality.’ This is a fitting tribute to Sri Ramanujacharya, whose sacred thoughts and teachings inspire us. https://t.co/i6CyfsvYnw
— Narendra Modi (@narendramodi) February 5, 2022
একাদশ শতাব্দীর সমাজ সংস্কারক ও দার্শনিক সন্ত রামানুচার্যের ১০০৩ তম জন্ম বার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করতেই ২১৬ ফুটের এই বিশালাকার মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। তেলঙ্গনায় হায়দরাবাদের নিকটস্থ সামশাবাদে ৪৫ একর জমির উপর এই মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। ৫৯৭ ফুট উচ্চতার স্ট্যাচু অব ইউনিটির পর এটিই বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম মূর্তি হতে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর (PMO) থেকে জানানো হয়েছে, ৫৪ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ভবনের উপর স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি বসানো হয়েছে। এই ভবনের নাম হয়েছে ‘ভদ্রা বেদী’। সেখানে একটি তলে বৈদিক ডিজিটাল গ্রন্থাগার ও গবেষণাকেন্দ্র, ভারতীয় প্রাচীন গ্রন্থ সংগ্রহালয়, থিয়েটার, শ্রী রামানুজাচার্যের জীবন ও কর্ম সম্পর্কিত শিক্ষামূলক গ্যালারি রয়েছে। শ্রী রামানুজাচার্যের আশ্রমের শ্রী চিন্না জিয়ার স্বামী এই মূর্তি গড়ার পরিকল্পনা করেন।
কে সন্ত রামানুচার্য?
১০১৭ সালে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে জন্মগ্রহণ করেন সন্ত রামানুচার্য। ২০১৭ সালে তাঁর জন্মের এক হাজার বছর পূর্ণ হয়। তিনি গোটা ভারত ঘুরে সমাজের সমস্ত শ্রেণীর মানুষদের জীবনযাত্রাকে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। ভক্তদের বিশ্বাস, যে ভগবান আদিষা নিজেই রামানুচার্যের অবতার গ্রহণ করেছেন। তিনি কাঞ্চি অদ্বৈত পণ্ডিতদের অধীনে বেদান্তে শিক্ষিত। দেশজুড়ে তিনি বিশিষ্ট দ্বৈত চিন্তাধারার প্রসার ঘটান এবং মন্দিরগুলিকে ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলেন।
সাম্য, স্নেহ এবং ভক্তির মার্গই হল ঈশ্বরপ্রাপ্তির শ্রেষ্ঠ পন্থা, এই মন্ত্রই আজীবন অনুসরণ করেছেন তিনি। চিন্না জিয়ার স্বামীও রামানুজের এই আদর্শের উপর ভর করেই এই সাম্যের মূর্তি তৈরির কাজে হাত দেন।
এই মূর্তির বৈশিষ্ট্য কী কী?
-
-
- ২১৬ ফুট উচ্চতার “স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি” বসা অবস্থায় বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম মূর্তি হতে চলেছে। তাইল্যান্ডের বুদ্ধমূর্তিকে বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি বলে গণ্য করা হয়, যা বসার অবস্থানে রয়েছে। বিশাল পদ্মের উপর সন্ত রামানুচার্যের এই মূর্তিটি অবস্থান করছে।
- পঞ্চধাতু দিয়ে তৈরি হয়েছে এই মূর্তি। সোনা, রুপো, তামা, ব্রাস ও জিঙ্ক-এই পঞ্চধাতুর মিশ্রণে মূর্তিটি তৈরি করা হয়েছে। ২০১৪ সালে এই মূর্তির ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করা হয়।
- সন্ত রামানুচার্যের মূর্তির গর্ভগৃহের ভিতরেও ৫৪ ইঞ্চি উচ্চতার ১২০ কেজি সোনা দিয়ে একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। সন্ত রামানুচার্যের জীবনের ১২০ বছরকেই সম্মান জানাতেই এই স্বর্ণমূর্তির স্থাপন। এই মূর্তির নিত্যদিন অভিষেক, আরাধনা, রাজভোগ প্রদানের মতো যাবতীয় সেবা করা হবে।
- সামশাবাদে ৪৫ একর জমির উপর তৈরি স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটিকে ঘিরে ১০৮টি কষ্টি পাথরের মন্দির, যা দিব্য দেশম নামে পরিচিত, তা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও ১০৮টি বিষ্ণু মন্দির তৈরি করা হয়েছে, এগুলি বদ্রীনাথ, মুক্তিনাথ, অযোধ্যা, বৃন্দাবন, তিরুমালার মন্দিরের আদলে তৈরি।
- এই মূর্তিটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে আনুমানিক এক হাজার কোটি টাকা। সম্পূর্ণ টাকাটাই বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা অনুদান হিসাবে পাঠিয়েছেন।
-